আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
তালতলী উপজেলার ৩২ জেলেদের সরকারি সহায়তার
গরু ক্রয়ের টাকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন ও ঠিকাদার জহিরুল আজাদ আত্মসাৎ
করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেলেরা এমন অভিযোগ করেন। শারীরিক ভাবে
রোগা ও ছোট বাছুর হওয়ায় তারা গরু নেয়নি। এমন অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত
আনোয়ার তুমপা গরুর শারীরিক অবস্থা দেখে গরু বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার
তালতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে।
জানা গেছে, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা
প্রকল্পের আওতায় সরকার তালতলী উপজেলার ৩২ জেলেকে প্রশিক্ষণ শেষে বকনা বাছুর বিতরণের
উদ্যোগ নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় গরু ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহবান করে মৎস্য অধিদপ্তর। দরপত্র
অনুসারে গরু ক্রয়ের দায়িত্ব পান রাজবাড়ী জেলার এএম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার জহিরুল
আজাদ। দরপত্রে প্রত্যেক গরু ৩০ হাজার টাকা ক্রয়ের কথা থাকলেও ঠিকাদার ও উপজেলা মৎস্য
কর্মকর্তা ভিক্টর বাইনের যোগসাজসে ছয় মাসের বাছুর ও শারীরিকভাবে অক্ষম গরু ১০ থেকে
১২ হাজার টাকা মূল্যে ক্রয় করেছেন। ওই গরু মঙ্গলবার তালতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে
মৎস্য কর্মকর্তা বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় জেলেরা গরু শারীরিক অবস্থা ও ছোট
বাছুর দেখে তারা গরু নিতে অপরগতা প্রকাশ করে অনিয়মের প্রতিবাদ করেন। খবর পেয়ে তালতলী
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা গরু বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
চরপাড়া গ্রামের জেলে আল আমিন বলেন, জেলেদের
জন্য গরু ক্রয় করতে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন
ও ঠিকাদার জহিরুল আজাদ অল্প টাকার গরু ক্রয় করে আমাদের মাঝে বিতরণ করছিল। আমরা গরুর
শারীরিক অবস্থা দেখে আনিনি।
তিনি আরো বলেন, এ গরু লালন পালন করে বাঁচানোই
কষ্টকর। ঠিকাদার ও মৎস্য কর্মকর্তা অল্প টাকার গরু ক্রয় করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেছেন।
এদের শাস্তি দাবি করছি।
তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর
বাইন গরু ক্রয়ের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, গরু ক্রয়ের আমি অনিয়ম
করিনি। অনিয়ম করে থাকলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করেছে।
এএমএন্টারপ্রাইজের মালিক জহিরুল আজাদ বলেন,
দরপত্র অনুসারে গরু ক্রয় করা হয়েছে। কোন অনিয়ম হয়নি।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মহসিন
বলেন, দরপত্র অনুসারে গরু ক্রয় করা হয়নি। ফলে ঠিকাদারের কাছে গরু ফেরত দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার
বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার
তুমপা বলেন, গরুর বাছুরগুলো অত্যান্ত নাজুক। এ গরু আমার পছন্দ হয়নি। তাই গরু বিতরণ
কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি।