দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ গ্রিসের পর্যটন খাত পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটিশ পর্যটকরা। গ্রিসের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্যে বিষয়টি উঠে আসে। ব্যাংক বলছে, ২০২২ সালে গ্রিসে যুক্তরাজ্যের পর্যটকের সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় ১৮১ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে রেকর্ডসংখ্যক ৪৫ লাখ ব্রিটিশ পর্যটক গ্রিস ভ্রমণ করেছেন। এক বছর আগের তুলনায় এ সংখ্যা ৩০ লাখের অধিক।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক দশক ধরে গ্রিসে পর্যটক আগমনে শীর্ষে ছিল জার্মানি। তবে ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের পর্যটকরা জার্মানদের অতিক্রম করেছেন। বিশ্লেষকরা এ অবস্থাকে কোভিড-১৯-পরবর্তী সময়ের পর্যটন খাতের চ্যালেঞ্জিং প্রদর্শনী বলে অভিহিত করছেন।
এ বিষয়ে গ্রিসের পর্যটনমন্ত্রী ভ্যাসিলিস কিকিলিয়াস গার্ডিয়ানকে বলেন, গ্রিসের পর্যটন খাতকে ব্রিটিশরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সবচেযে বেশি খরচ করছে।’ গত সপ্তাহে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের পর্যটকদের থেকে ২০২২ সালে গ্রিসের পর্যটন খাতের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩০০ কোটি ইউরোর অধিক। এ সময়ে পর্যটকরা ২০২১ সালের তুলনায় দ্বিগুণ খরচ করেছেন। ইউরোপের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে জ্বালানি সংকট, উচ্চমূল্যস্ফীতি ও একটি যুদ্ধ চলছে। পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে সাশ্রয়ী হচ্ছে। তবে তথ্য বলছে, ব্রিটিশরা এসব অজুহাতে তাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটিকে উৎসর্গ করছেন না।
সরকারি পর্যটন পরিসংখ্যান বলছে, মহামারীর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য থেকে ৩৫ লাখের কাছাকাছি পর্যটক পেয়েছে গ্রিস। ওই সময়ে সেটিই ছিল শীর্ষ পর্যটক রেকর্ড। গ্রিসের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। সে তুলনায় ওই সংখ্যা ছিল তিনগুণের অধিক। ২০২২ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে শীর্ষ পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে ছিল গ্রিস। দেশটিতে গত বছর দীর্ঘ পর্যটন মৌসুম মার্চ থেকে শুরু হয়ে নভেম্বরে শেষ হয়। এ সময় উল্লেখযোগ্য হারে মার্কিন পর্যটকের আগমনও ঘটে।
পর্যটনের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল গ্রিসের পর্যটক পুনরুদ্ধার অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংবাদ। দেশটির জিডিপির ২৫ শতাংশই পর্যটন খাতের ওপর নির্ভর করে। ২০২২ সালে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক আগমনের ফলে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে দেশটি। দীর্ঘস্থায়ী ঋণ সংকটের সময় গ্রিসের জন্য যা ছিল অপ্রত্যাশিত।
গ্রিস পর্যটনমন্ত্রী জানিয়েছেন, অ্যাথেন্স ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ২০২০ সালের গ্রীষ্মে দেশটিকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। ওই সময়ে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে একাধিক পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছিল। পর্যটকদের গ্রিসকে একটি নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে দেখতে সাহায্য করেছিল।