আজঃ সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

জাতিসংঘ পুলিশের কার্যক্রমে অবদান রাখার অঙ্গীকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জাতিসংঘ পুলিশের কার্যক্রমে ফলপ্রসূ অবদান রাখাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। শুক্রবার (২৮ জুন) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানায়।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের চতুর্থ সম্মেলনে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিনব কৌশল ও সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্র প্রধান সেশনে প্রথম বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। 

সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রাসঙ্গিক ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বিশেষায়িত পুলিশিং-এর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শান্তিরক্ষা কার্যক্রম চলমান দেশগুলোর আইন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থার দক্ষতাবৃদ্ধির ওপরও জোর দেন তিনি। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী পুলিশ সদস্য প্রেরণ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে নানবিধ অপপ্রচার রোধে জাতিসংঘের গৃহীত ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন। 

এই সম্মেলন চলাকালে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলে সানিয়াং, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশন্স জ্যঁ পিয়েরে লাখোয়া এবং আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর অপারেশনাল সাপোর্ট অতুল খারের সঙ্গে তিনটি পৃথক বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরেন। 

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ২৬-২৭ জুন দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের চতুর্থ সম্মেলন  অনুষ্ঠিত হয়। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।


আরও খবর



বেনজীর দেশত্যাগ করেছে কি না জানে না দুদক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৪ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার দেশত্যাগ করেছে কি না সে বিষয়ে দুদকের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক। দুদকের তলবে হাজির না হতে পারলে বেনজীর ও তার পরিবার ১৫ দিন সময় চাইতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশে রয়েছেন কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, দেশে আছে নাকি বিদেশে গেছেন এ সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই।

তলবের বিষয়ে জানতে চাইলে জহুরুল হক বলেন, দুদক কাউকে নোটিশ করলে তিনি আসতে বাধ্য কি না, সেটা আইনে সুস্পষ্ট বলা নেই। না এলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তবে তার সুযোগ আছে সময় চাওয়ার। সময় চাইলে দুদক ১৫ দিন সময় দিতে পারবে। এই এখতিয়ার কমিশনের রয়েছে।

দুদক কমিশনার আরও বলেন, সময় দেওয়ার পরও যদি তিনি দুদকে না আসেন তাহলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তখন নথিপত্র দেখে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় হবে, না হলে নয়।

অনুসন্ধানের স্বার্থে যা যা করণীয় সবই করা হচ্ছে উল্লেখ করে জহুরুল হক বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার হবে, এতে কোনো বাধা নেই।

গত ৩১ মার্চ বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ এবং ৩ এপ্রিল বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট শিরোনামে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বেনজীর আহমেদকে ৬ জুন এবং তার স্ত্রী জীশান মীর্জা ও দুই মেয়েকে ৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাব এবং র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীরও ছিলেন বলে জানা গেছে।


আরও খবর



মোদির শপথ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৬ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৬ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

টানা তৃতীয় বারের মতো বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোট বিজয়ী হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে এক ফোনালাপে এই অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় নরেন্দ্র মোদি ভারতের নতুন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনার (নরেন্দ্র মোদি) শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে এনডিএ’র এই বিজয় সম্ভব হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে ভারত ও তার জনগণ বিশ্ব অঙ্গনে আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যেকার সৌহার্দ্যপূর্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিবেশী সুলভ সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট জয়লাভ করায় বুধবার এক চিঠিতে মোদিকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ ও তার পক্ষ থেকে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।

মঙ্গলবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা হয়। নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বলছে, এবারের নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে জয়ী হয়েছে ২৪০টি আসনে। তাতে অবশ্য সরকার গঠনে সমস্যা হবে না দলটির। কারণ বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশানাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ভুক্ত দলগুলো সম্মিলিতভাবে জয়ী হয়েছে মোট ২৯৩টি আসনে। ফলে অনায়াসেই সরকার গঠন করতে পারবে বিজেপি।


আরও খবর



চট্টগ্রামে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রাম নগরের সেন্ট স্কলাসটিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হচ্ছেন- মো. রকিব উদ্দিন (৩৫) ও সুরজিত পাল (৩৩)। তবে অভিযোগ বিষয়ে দুই শিক্ষক এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।

সেন্ট স্কলাসটিকাস্ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মা কোতোয়ালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে ছাত্রীর অভিভাবক জানায়, রকিব উদ্দিন চতুর্থ শ্রেণির বিজ্ঞানের পাঠদান করেন। আর সুরজিত পাল পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করেন। এই দুই শিক্ষক তার মেয়ের পরিচিত। গত বছর থেকে দুই শিক্ষক তার মেয়েকে স্কুলের ষষ্ঠ তলার বাথরুমের পা‌শে নিয়ে গিয়ে শরীরে স্পর্শকাতর অংশে স্পর্শ করতেন। তাদের কথামতো ওখানে না গেলে তার মেয়েকে শ্রেণিকক্ষে বকাঝকা করতেন এবং পরীক্ষার খাতায় নম্বর কমিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। প্রায় সময় তার মেয়েকে খারাপ প্রস্তাব দেন ওই দুই শিক্ষক। এতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্নধরনের ভয়ভীতি দেখান। দুইজনই তার মেয়ের মোবাইল নাম্বারে ফোন করে বাজে কথা বলতেন।

পরে গত রোববার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে টিফিন বিরতি দিলে তার মেয়েকে কৌশলে স্কুলের ষষ্ঠ তলার বাথরুমের পাশে নিয়ে যান। তখন দুইজন তার মেয়ের শরীরে স্পর্শকাতর অংশে স্পর্শ করে শ্লীলতাহানি করেন। তাদের এমন আচরণে ভীত হয়ে চিৎকার দিলে এই ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তারা। তার মেয়ে ভয়ে স্কুলে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। স্কুল ছুটির পর বাসায় এসে কান্নাকাটি শুরু করে। তখন তার কাছে জানতে চাইলে সে তার মাকে ঘটনার বিস্তারিত বলে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেন্ট স্কলাসটিকাস গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সুরজিত পাল বলেন, আমার ফেক আইডি খুলে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুল তদন্ত কমিটি করেছে। বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না। আমরাও চাই তদন্তে আসল সত্য বেরিয়ে আসুক।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে সেন্ট স্কলাসটিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শিল্পী সেলিন কস্তার মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, সেন্ট স্কলাসটিকাস্ স্কুলের একজন অভিভাবক তার মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক মো: রকিব উদ্দিনকে থানায় আনা হয়েছে। পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



ভাঙনের কবলে সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চল

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

জলবায়ু পরিবর্তন, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উচ্চ জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও মনুষ্যসৃষ্ট দূষণসহ নানা ধরনের সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাদাবন (ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট) সুন্দরবন ও বনের জীববৈচিত্র্যকে। ফলে অনিরাপদ হয়ে পড়ছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য।

সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাসে ১৩৪টি মৃত হরিণ ও চারটি বন্য শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, সুন্দরবন বন বিভাগের মতে, বন্যপ্রাণী মৃতের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি হবে। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের পর বঙ্গবন্ধুর চর, পুটনির চরসহ গহীন সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন বন এলাকায় বন বিভাগের কর্মীরা যেতে পারেনি।

তাদের মতে, গত ২৬ মে ভোরে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। এ সময় বঙ্গবন্ধুর চর, পুটনির চরসহ সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগর অংশে ২০ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল। এতে বহু হরিণ সাগরে ভেসে গেছে। যার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওগুলো পচে-গলে পানিতে মিশে গেছে। উদ্ধার করা মৃত বন্যপ্রাণীগুলো মূলত-সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীর চর, জ্ঞানপাড়া, শেলার চর এবং বিভিন্ন নদী-খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এর আগে ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর একটি বাঘ ও ২৭টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এছাড়া ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর তিনটি হরিণ ও একটি বন্য শুকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রাণীর মৃত্যুর কোনো খতিয়ান নেই।

বনজীবীরা জানান, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে এবারই ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালার চেয়ে বন্যপ্রাণীর ক্ষতি বেশি হয়েছে।

বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার কর্মকর্তা মফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, এবারের ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময় জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের গাছপালার চেয়ে পশুপাখির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। সুন্দরবনের যেসব জায়গা উঁচু তা সর্বোচ্চ আট ফুট। অথচ সেখানে পানি উঠেছিল ১০-১২ ফুট। টানা ৩৬-৩৭ ঘণ্টা পুরো সুন্দরবন লবণপানির নিচে ছিল। এর আগে এ রকম জলোচ্ছ্বাস সুন্দরবনে কখনো হয়নি। যা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির বিষয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাণী বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম এ আজিজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে এখন যে অভিঘাত হচ্ছে, এগুলো ধীরে ধীরে বাড়বে। উচ্চ জলোচ্ছ্বাস ছাড়াও আমরা যে অসুবিধাগুলো দেখছি, সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা অঞ্চলের সুন্দরবন। সাতক্ষীরা থেকে মান্দারবাড়ী হয়ে দুবলারচর, কটকা পর্যন্ত অনেক এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। এটা সুন্দরবনের জন্য দৃশ্যমান ক্ষতি হচ্ছে। ঐ অঞ্চলে ভেঙে গিয়ে বন কমে যাচ্ছে। তবে সুন্দরবনের বলেশ্বরের দিকে কিছু কিছু চর জাগছে। সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় গত ১০-১২ বছর ধরে ভাঙন অনেক বেশি হচ্ছে। এই ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি এবং ধীরে ধীরে এই ক্ষতি বাড়ছে। হয়তো এখন ক্ষতিটা অত নজরে আসছে না; নজরে আসে যখন ঘূর্ণিঝড়ের মতো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় তখন।

তিনি বলেন, গত ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখি, দীর্ঘ সময় ধরে সুন্দরবন জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে থাকা এবারই প্রথম দেখা গেল। জলবায়ুর যে অভিঘাতগুলো আনপ্রেডিক্টেবল (অপ্রত্যাশিত)। যা আমরা আগে থেকে প্রেডিক্ট (প্রত্যাশা) করতে পারি না। ফলে বাঘ ও বন্যপ্রাণীসহ জলজ প্রাণীরও ক্ষতি হচ্ছে। কারণ লবণাক্ততা বাড়ছে।

সুন্দরবনের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আগের তুলনায় ধীরে ধীরে প্রকট হচ্ছে। জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই এবার উচ্চ জলোচ্ছ্বাস হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। স্বাভাবিক জোয়ারের সময় এখন পানি অনেক উঁচু হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এবারই প্রথম সুন্দরবন একটানা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা লোনাপানিতে প্লাবিত ছিল, যা আমরা আগে ধারণাও করতে পারিনি। সুন্দরবনে এবারের দুর্যোগ আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় কী করা যায়, তা নিয়ে আমরা ভাবছি।


আরও খবর



ইসরায়েলে রকেট-বিস্ফোরক রপ্তানি করছে ভারত

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা। হামাসকে নির্মূল করার জন্যই মূলত এই হামলা চালানো হচ্ছে। এই হামলার মধ্যে ইসরায়েলের কাছে রকেট ও বিস্ফোরক রপ্তানি করেছে ভারত। বুধবার (২৬ জুন) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

বোরকাম নামের একটি মালবাহী জাহাজ গত ১৫ মে ভোরে স্পেনের কার্তাহেনা বন্দরের উপকূলে এসে পৌঁছায়। পরে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে জাহাজটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করে স্পেনের জনগণ। তাদের অভিযোগ, জাহাজে করে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ জন্য তারা কর্তৃপক্ষের কাছে এই সন্দেহজনক জাহাজ পরিদর্শন করার আহ্বান জানায়।

তবে এই বিষয়ে দেশটির সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই বোরকাম নামের জাহাজটি স্লোভেনিয়ার বন্দর কোপারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। তাই বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। আল জাজিরার হাতে কিছু নথি এসেছে, যা থেকে জানা গেছে জাহাজটিতে ভারত থেকে নিয়ে আসা বিস্ফোরক উপকরণ বোঝাই করা ছিল। আর এর শেষ গন্তব্য ছিল ইসরায়েলি বন্দর আশদোদ, যা গাজা উপত্যকা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে।

গত ২ এপ্রিল চেন্নাই থেকে ছেড়ে আফ্রিকার পাশ দিয়ে ঘুরে গেছে জাহাজটি এবং লোহিত সাগরে হুতিদের সম্ভাব্য হামলা এড়াতে এই বিকল্প ব্যবহার করা হয় বলে মেরিন ট্র্যাকিং সাইটের তথ্য থেকে জানা গেছে।

সলিডারিটি নেটওয়ার্ক এগেইন্সট দ্য প্যালেস্টিনিয়ান অকুপেশান (রেসকপ) এসব নথি অনানুষ্ঠানিকভাবে সংগ্রহ করেছে। যা থেকে জানা গেছে, ওই জাহাজে ২০ টন রকেট ইঞ্জিন, সাড়ে ১২ টন বিস্ফোরক-যুক্ত রকেট, দেড় হাজার কেজি বিস্ফোরক এবং ৭৪০ কেজি চার্জ ও কামানের প্রপেলান্ট বোঝাই করা হয়েছিল।

জার্মানের প্রতিষ্ঠান এমএলবি ম্যানফ্রেড লতারজুং বেফ্রাখতুং বোরকাম জাহাজটির বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে। এক বিবৃতিতে আল জাজিরাকে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, জাহাজে এমন কোনো অস্ত্র বা মাল বোঝাই করা হয়নি যেটার গন্তব্য ইসরায়েল।

গত ২১ মে কার্তাহেনা বন্দরে ভারতের দ্বিতীয় একটি জাহাজ এসে পৌঁছালেও নোঙর করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের জন্য সামরিক পণ্য বহনকারী জাহাজটিকে স্পেনের বন্দরে ভিড়ার অনুমত দেওয়া হয়নি।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপরি) গবেষক জেইন হুসেন আল জাজিরাকে বলেন, যাচাই করার মতো তথ্যের অভাবে এ ধরনের লেনদেন আদৌ ঘটেছে কী না, তা নিশ্চিত করে বলা খুবই কঠিন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে ইসরায়েল ও ভারতের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে, তাই ভারতীয় অস্ত্র বা উপকরণ ইসরায়েলের হাতে এসে পৌঁছানোর এবং তা গাজায় ব্যবহার অসম্ভব কিছু নয়।

এসব ঘটনা থেকে মোটামুটি নিশ্চিত যে, ভারত ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি করছে, যা দেশটির সামরিক উদ্যোগ নয়, সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থী। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতে আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব থাকায় এ ধরনের লেনদেন সম্ভব হয়ে থাকতে পারে।


আরও খবর