আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

‘করোনা অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে’

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহনশীলতা ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও সব দেশের মতো কোভিড-১৯ মহামারি আপাতত আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, এই কোভিড-১৯ ক্রান্তিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত বিচক্ষণ আর্থিক ও মুদ্রানীতির কারণে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। জীবন ও জীবিকার মধ্যে দূরদর্শী ভারসাম্য নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের নির্বাহী সচিবের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সাক্ষাতের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সঠিক পথে রয়েছে। তারপরেও, অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা হ্রাস করার লক্ষ্যে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জকারী এলডিসিগুলোকে ট্রানজিশন এবং ট্রানজিশন পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করার জন্য চতুর্মুখী কৌশলের নীতি অনুমোদন করেছে। এখন আমরা এমন একটি উন্নয়ন পদ্ধতির অনুসরণ করছি যা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব। কারণ প্রধানমন্ত্রী ইউনেসক্যাপের ৭৭তম কমিশন অধিবেশনে তার ভাষণে এটি ঘোষণা করেছেন এবং নিশ্চিত করতে একে অপরকে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন, ইউনেসক্যাপ এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং ড্রাই পোর্টস উদ্যোগের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি থাইল্যান্ড, ভারত এবং মায়ানমারের ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে প্রকল্পে যোগদানের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউনেসক্যাপকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।

বাণিজ্য সুবিধা, ডিজিটাল বাণিজ্য, সীমান্তে কাগজবিহীন বাণিজ্য, পুঁজিবাজার উন্নয়ন, পিপিপি নেটওয়ার্ক, টেকসই মাল্টিমোডাল পরিবহন, জ্বালানি নীতি এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আরও প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়তার জন্যও ইউনেসক্যাপকে অর্থমন্ত্রী অনুরোধ করেন। পাশাপাশি, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার উপায় হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং এসএমই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও কাজে লাগাতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউনেসক্যাপ) নির্বাহী সচিব মিসেস আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলায় ইউনেসক্যাপ বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশে আরও চাহিদাভিত্তিক সক্ষমতা নির্মাণ প্রকল্প সহায়তার মাধ্যমে ইউনেসক্যাপের কর্মপরিধি বাড়ানোর আশা প্রকাশ করেন।

সাক্ষাতে আগামী ২০-২২ অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি, প্রভার্টি রিডাকশন অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং ফর ডেভলপমন্ট (এমপিএফডি) সভায় বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন বিষয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রী নীতিগত পরামর্শমূলক সেবা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে নানাভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করায় ইউনেসক্যাপের প্রতি কৃজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য ইউনেসক্যাপের সহায়তা অব্যাহত রাখতে এবং আরও শক্তিশালী করতে আশা ব্যক্ত করেন।

২০২০ সালের আইএমএফর অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে গড় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ শতাংশের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, সেসময়ে অতি অল্প কয়েকটি ইতিবাচক অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, মহামারি প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।


আরও খবর



বিএনপির ৭৫ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাজনীতি ডেস্ক

Image

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির ৭৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে এসব নেতাদের নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং ২১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আসন্ন প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।


আরও খবর



৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি, প্রতিবেদন দাখিল পেছাল

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম স্বর্ণ চুরির ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পেছানো হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় সোমবার (১৩ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ জুন দিন ধার্য করেন।

এর আগে, চাঞ্চল্যকর এই চুরির ঘটনাটি গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কর্মকর্তাদের নজরে আসে। মূলত হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় কাস্টমসের পক্ষ থেকে তখনই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এরপর গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিরা হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, শাহিদুল ইসলাম সাহেদ, আকরাম শেখ, মাসুম রানা, সিপাহী মোজাম্মেল হক, নিয়ামত হাওলাদার, রেজাউল করিম ও আফজাল হোসেন।

সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণের বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এ গুদামে রাখা হয়।


আরও খবর



তাপমাত্রার মতোই বেড়েছে সবজি ও মাছ-মাংসের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। যার প্রভাব পড়ছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। এতে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে মাছ-মাংস, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল কাঁচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

বিক্রেতারা জানান, তীব্র গরমে দাম বেড়েছে প্রায় সব পণ্যেরই। পাশাপাশি বাজারে কমেছে ক্রেতা উপস্থিতি।

বাজারে প্রতিকেজি শসা ৪০ টাকা, মরিচ ৬০ টাকা কেজি, টমেটো কেজি ৪০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বরবটি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও পেঁপে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম চড়েছে আলু ও বেগুনের। প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা ও বেগুন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, তীব্র গরমে ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে সবজি। পাশাপাশি সেচ বাবদ বেড়েছে খরচ। যার প্রভাবে গ্রাম পর্যায়ে সবজির দাম বাড়ায়, রাজধানীর বাজারগুলোতেও বেড়েছে দাম।

আর ক্রেতারা বলছেন, বাজার আগে থেকেই চড়া। তার ওপর তীব্র গরমের সুযোগ লুফে নিয়ে আরও দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তীব্র গরমে যখন গরম সবজির বাজার, ঠিক তখন উত্তাপ ঝরছে মাংসের বাজারেও। কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত সোনালি মুরগি ৩৮০-৩৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিকেজি ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকা, লাল লেয়ার ৩০০-৩২০ টাকা, ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, গরমে খামারে প্রচুর মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে লোকসান থেকে বাঁচতে খামার পর্যায়ে বেড়েছে দাম। ফলে প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও।

অন্যদিকে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

গরমেরও উত্তাপ ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। চড়া বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।

এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৬০-১৭০ টাকায় ও আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। আদা আগের বাড়তি দামেই ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।


আরও খবর



মূল্যবান খনিজ জমিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ডংগিংয়ে গতবছর নতুন জ্বালানি তেলের একটি ডিপো নির্মাণের কাজ শেষ করেছে চীন। আর চলতি বছরের শুরু থেকেই সেখানে নজরে আসছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ব্যস্ততা। কৌশলগত জ্বালানি মজুত হিসেবে অভিহিত ডংগিংয়ের এ বিশাল তেলের ডিপোর ধারণ ক্ষমতা ৩ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল। মূলত রাশিয়া থেকে ভর্তি হয়ে আসা ট্যাংকারগুলোই এখানে খালাস করছে তাদের তেল। দ্রুত খালাস করেই নতুন চালান ভরতে চীনা ট্যাংকারগুলো ফের ছুটছে রাশিয়ার বন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে।

যেভাবে তেলের মজুত বাড়াচ্ছে চীন

দিন দিন রাশিয়া থেকে চীনের এ জ্বালানি আমদানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে ২১ লাখ ব্যারেল তেল মস্কো থেকে আমদানি করছে বেইজিং। টানা দুবছর ধরে বেইজিংয়ের জ্বালানি সরবরাহের প্রধান উৎস মস্কো। এতো বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কেনার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত জ্বালানি তেলের মজুত বর্তমানে উঠানামা করছে ২৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ব্যারেলের মধ্যে।

যেখানে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জ্বালানি মজুতের পরিমাণ ৩৬ কোটি ব্যারেলের আশপাশে। শান্তিপূর্ণ সময়ে চীনের দৈনিক জ্বালানি চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময়ের তেলের মজুত নিজের হাতে ধরে রেখেছে চীন।

চীনের তেলের মজুত গড়ে তোলার এ পরিসংখ্যানই পশ্চিমা রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক মহলকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য যথেষ্ট। তাদের ধারণা, সামনে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা আঁটছেন চীনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর অংশ হিসেবেই দ্রুত ডংগিংয়ের মতো এসব ডিপোকে তেলে ভর্তি করছে বেইজিং।

অন্যান্য খনিজের মজুতও বাড়াচ্ছে চীন

শুধু জ্বালানি তেলই নয়, অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কৌশলগত প্রায় সব শিল্প কাঁচামালের মজুত গড়ে তুলছে বেইজিং। পশ্চিমা মহলের ধারণা, ভবিষ্যতে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি কিংবা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানে চীনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকেই এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন তারা।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও বেইজিংকে সুযোগ করে দিচ্ছে ডিসকাউন্ট দরে মস্কো থেকে তেলসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ব্যাপারে। জ্বালানি তেলের পাশাপাশি অনেক সস্তায় মস্কো থেকে নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ কিনতে সক্ষম হচ্ছে চীনা কোম্পানিগুলো। আর চীনের এ মূল্যবান ধাতু কিনে মজুত করার প্রবণতার গতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে রাশিয়ার নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামার ওপর আরোপ করা সর্বশেষ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়ামের এক-তৃতীয়াংশই চীনের কব্জায়

এসব ধাতুর পাশাপাশি বেইজিংয়ের নজরে রয়েছে বর্তমান যুগের অন্যতম মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে পরিচিত লিথিয়ামের ওপরও। ব্যাটারি শিল্পের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে চীন মজুত বাড়িয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না; বরং বিভিন্ন দেশে থাকা লিথিয়ামের খনি থেকে শুরু করে পরিশোধনাগার পর্যন্ত কিনে ফেলতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইউবিএস গত মার্চে জানায়, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বের সব লিথিয়াম সরবরাহের তিন ভাগের একভাগই চলে যাবে চীনের কব্জায়।

অবশ্য চীন অনেক আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ধাতু ও বিরল মৃত্তিকার মতো খনিজ পদার্থের মজুত গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে মার্কিন খনি বিষয়ক দফতর ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীনের হাতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম, কোবাল্ট, কপার, গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম, ইরিডিয়াম, ট্যানট্যালাম, টিন, টাংগেস্টন, জিংক ও জিরকোনিয়ামের পাশাপাশি অন্যান্য বিরল মৃত্তিকা পদার্থের মজুত রয়েছে। এরপরের বছরগুলোতে চীন এসব খনিজ মজুত করার তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে।

চীন স্বর্ণের মজুদও বাড়াচ্ছে, টান পড়ছে সারা বিশ্বে

শুধু এসব খনিজ পদার্থই নয়, বরং স্বর্ণের মজুতও দিন দিন বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং। আর এ স্বর্ণ শুধু সরকারই কিনছে না, বরং চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বেড়ে গেছে স্বর্ণ কেনার প্রবণতা। মূলত চীনাদের এ স্বর্ণ কেনার প্রবণতাই বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের দামকে রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ডলারে।

মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনেই চীনের এ স্বর্ণ কেনার উদ্দেশ্য বলে কেউ কেউ মনে করছে। তবে এর পেছনে দেশটির জনগণের একটি মনস্তাত্ত্বিক অবস্থানও রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা আঁচ করতে পেরেই চীনের এলিট সমাজ তাদের সম্পদ দেশের বাইরে জমা করার বদলে দেশেই নিজের হাতের নাগালে রাখতে চাইছেন। আর স্বর্ণ কিনে জমা রাখার মাধ্যমেই তা সবচেয়ে ভালোভাবে সম্ভব। অর্থাৎ চীন যে তাইওয়ানকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে যাচ্ছে, সে বিশ্বাস দানা বাঁধছে চীনের সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

টার্গেট তাইওয়ান, ডেডলাইন ২০২৭

জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুত চীন যেভাবে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে নিচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের সামরিক বাহিনীকেও ব্যাপকভাবে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করছে বেইজিং। এমন এক সময়ে এই সামরিকীকরণ চলছে যখন তাইওয়ানকে ঘিরে বেইজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমা বিশ্বেরও উত্তেজনার পারদ বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। আর চীনের এসব প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন সামরিক মহল। মার্কিন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন শি জিনপিং তাইওয়ান দখলে তার সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আর এজন্যই চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়ে চলেছে বেইজিং।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি জাপানে অনুষ্ঠিত নৌবাহিনীর সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুলিনো বলেন, অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকা সত্ত্বেও সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে চীন সচেতনভাবে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। যা কিনা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিষয়ক ব্লগিং সাইট ওয়ার অন দ্য রকস’-এ নিজের এক লেখায় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক স্টুডম্যান বলেন, শি জিনপিং (চীনা প্রেসিডেন্ট) তার দেশকে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করছেন। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য এক বিধ্বংসী যুদ্ধের জন্য শি জিনপিং চীনা সমাজকে সামরিকীকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বর্মে মুড়িয়ে ফেলছেন।’

এর অংশ হিসেবেই চীনা কর্তৃপক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামালের একটি কৌশলগত মজুত গড়ে তুলছে বলে মনে করেন মার্কিন এ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মতো পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই বেইজিং এই মজুত গড়ে তুলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মাইক স্টুডম্যান আরও বলেন, ২০২২ সালে চীনের শীর্ষে নেতৃত্বের যে রদবদল, সেখানেও শি জিনপিংয়ের এ যুদ্ধ প্রস্তুতির ইঙ্গিত রয়েছে। বেছে বেছেই তাইওয়ান সম্পর্কে অভিজ্ঞদের নিজের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে চীনের ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পরিষদ পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনকেই মনে করা হয় তাইওয়ান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।

এমনকি তাদের মধ্যে সামিল রয়েছেন এমন একজন সামরিক কর্মকর্তা, পলিটব্যুরোতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে তার আগের ধাপ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না তিনি। তাইওয়ান বিষয়ে ব্যাপক অভিজ্ঞতাই পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দেয় তাকে। এ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সাবেক কমান্ডার। আর তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের যেকোন সামরিক অভিযানের সার্বিক দায়িত্ব প্রথমে এই ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের ওপরেই বর্তাবে।

যুদ্ধের প্রস্তুতি চীনের, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা বিশ্ব

তবে চীন যখন দ্রুত তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে, তখনও চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমা মহল। জ্বালানি ও কাঁচামালের আন্তর্জাতিক উৎস থেকে বেইজিংকে বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে এখনও দৃশ্যমান কোন শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি তারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তির মাইক্রো চিপ থেকে চীনকে বঞ্চিত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত। বরং চলতি মাসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস চীন সফরের মধ্যদিয়ে এ বার্তাই দেয়া হচ্ছে যে, ইউরোপীয়রা চীনের সঙ্গে বর্তমান বাণিজ্যিক সহযোগিতা বজায় রাখতেই বেশি আগ্রহী।


আরও খবর



ডোনাল্ড লুকে নিয়ে উদ্ভট চিন্তা করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই আসবেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ডোনাল্ড লু সরকারের সাথে কথা বলবেন। বিএনপি উদ্ভট চিন্তা করছে। ভাবছে আবার নিষেধাজ্ঞা দেবে।

রোববার (১২ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এসময় আওয়ামী লীগ নয় দেশ চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের জবাবে কোন অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশকে চালাচ্ছে, তা তাকে পরিষ্কার করে বলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিবের সংবাদ সম্মেলন মানে অসত্যকে সত্য বলে চালানোর সুনিপুণ কৌশল। অসত্য বলা বিএনপি নেতাদের মৌলিক চরিত্র।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার পরিচালনা করছে জনগণের সরকার। অদৃশ্য শক্তি দ্বারা সরকার পরিচালনা বিএনপির চরিত্র। বিএনপির সময় হাওয়া ভবন থেকে সরকার পরিচালনা হতো। দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের অনুমোদন ছাড়া কিছু হতো না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র হাওয়া ভবন থেকে হয়। অদৃশ্য শক্তির মানসিক ট্রমায় ভুগছে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, কথামালার চাতুরি ছাড়া দেশের মানুষ এবং দেশকে আর কিছু দেবার নাই বিএনপির। নেতাদের শক্তি কমে গেছে। শক্তি যতো কমে মুখের বিষ ততো বাড়ে।

এমন একটা নির্বাচন কমিশন বিএনপি চায় যে কমিশন বিএনপিকে জেতার গ্যারান্টি দেবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, গ্যারান্টি না পেলে তাদের কাছে সব নির্বাচনই ব্যর্থ।


আরও খবর