সোনা ও হীরা চোরাচালানের
মাধ্যমে প্রতি বছর দেশ থেকে ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে
বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)। এই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে চোরাকারবারিরা বিদেশে পাচার
করে বলে জানায় সংগঠনটি। সোমবার (৩ জুন) সকালে বাজুসের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো
হয়।
এসময় উপস্থিত
ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, বাজুস কার্যনির্বাহী কামিটির সহ-সভাপতি ও
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান-স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান মো.
রিপনুল হাসান, সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান, কার্যানির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাজুস স্ট্যান্ডিং
কমিটির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বাজুস স্ট্যান্ডিং
কমিটি অন অ্যান-স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান মো. রিপনুল হাসান বলেন,
প্রতিদিন দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার,
সোনার বার, ব্যবহৃত পুরোনো জুয়েলারি (যা ভাঙারি হিসেবে বিবেচিত হয়) ও হীরার অলংকার
(ডায়মন্ড জুয়েলারি) চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। বছর শেষে যার পরিমাণ প্রায়
৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল
ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তথ্য অনুযায়ী, যদি বৈধ পথে এসব সোনা আমদানি করা হতো,
তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জমা পড়তো। এ থেকে সরকার রাজস্ব পেতো
প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
এসময় বক্তারা
বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রার দাম বৃদ্ধি এবং বেপরোয়া চোরাচালানের
কারণে বহুমুখী সংকটে পড়েছে দেশের জুয়েলারি শিল্প। এ পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে
কঠোর অভিযানের পাশাপাশি ৭ দফা সুপারিশ করে বাজুস।
ঢাকা কাস্টমসের
তথ্যমতে, শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমেই ২০২০ সালে ২ দশমিক
৭৭৫ টন, ২০২১ সালে ২৫ দশমিক ৬৮৯ টন, ২০২২ সালে ৩৫ দশমিক ৭৩৩ টন এবং ২০২৩ সালে ৩১ দশমিক
৪৬৮ টন সোনার বার ব্যাগেজ রুলের আওতায় আমদানি হয়েছে।
এছাড়া, ২০২০ থেকে
২০২২ সালে শিল্পে ব্যবহারের জন্য ৪টি চালানে ২ কেজি ১৬০ গ্রাম হীরা আমদানি করা হয়েছে।
তবে কোনো হীরার অলঙ্কার আমদানি হয়নি। গত ১৯ বছরে যত হীরা আমদানি হয়েছে, তার ৮৭ শতাংশই
আনা হয়েছে ভারত থেকে। ভারতের গুজরাটের সুরাটে বিশ্বের ৬৫ শতাংশের বেশি হীরা কাটিং ও
পলিশিং করা হয়। খুব সহজে বহন করা যায় বলে দেশটি থেকে অবৈধভাবে হীরা আসছে বলে ধারণা
অনেকেরই।