বাংলাদেশে ভার্চুয়াল
বা ডিজিটাল মুদ্রায় কোনো ধরনের লেনদেন বা সম্পদ স্থানান্তর নিষিদ্ধ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক
এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেনকে অনুমোদন করে না। কেননা এতে ঝুঁকির মাত্রা বেশি। প্রতারিত
হলে কোনো প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ নেই। এসব মুদ্রার বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। কোনো দেশের
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব মুদ্রার স্বীকৃতি দেয়নি।
এসব কারণে ডিজিটাল
বা ভার্চুয়াল মুদ্রায় যে কোনো ধরনের লেনদেন বা সম্পদ স্থানান্তর থেকে বিরত থাকার জন্য
দেশের সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ
দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
একইসঙ্গে এসব
মুদ্রায় লেনদেন বা সম্পদ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে
কোনো ধরনের সহায়তা করা যাবে না। এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তা দেশের বৈদেশিক
মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলোর
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার উল্লিখিত
বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এটি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক,
বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী
প্রতিষ্ঠানসহ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সব ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান
নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়,
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ
দেওয়ার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশের ভেতর থেকে বিদেশে এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেন হচ্ছে।
এ ধরনের লেনদেন ক্রমেই বেড়েই চলেছে। প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এতে দেশ থেকে বৈদেশিক
মুদ্রা পাচার হয়ে যাচ্ছে। রপ্তানি আয়ের একটি অংশ দেশে না এনে ডিজিটাল মুদ্রায় রূপান্তর
করে তা দিয়ে বিভিন্ন দেনা শোধ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন
করে ওই সার্কুলার জারি করেছে। এর আগে একই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছরের ২৯ জুলাই
একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক
অঙ্গনে বেশ কয়েক ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী
মুদ্রা হচ্ছে বিটকয়েন। এছাড়াও আছে, লাইটকয়েন, এথেরিয়াম, রিপলের মতো কিছু ভার্চুয়াল
মুদ্রাও রয়েছে। এসব মুদ্রায় বিশ্বব্যাপী লেনদেন বাড়ছে। বাংলাদেশে এসব মুদ্রায় লেনদেন
বেআইনি হওয়ার পরও এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেন হচ্ছে।
সার্কুলারে বলা
হয়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ভার্চুয়াল মুদ্রাকে স্বীকৃতি দেয় না। দেশে
ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন করার জন্য কোনো অনুমোদিত কর্তৃপক্ষও নেই। এসব মুদ্রায় লেনদেন
করে প্রতারিত হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। এসব মুদ্রার স্বীকৃতি
দানকারী কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষও নেই। ফলে এসব মুদ্রার মূল্য যে কোনো সময়ে পতন হতে পারে।
আবার এতে ঝুঁকির মাত্রাও বেশি। তারপরও অনিয়ন্ত্রিত এ ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রার সীমাহীন
লেনদেন দ্রুত বাড়ছে। কিছু বৈধ বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে বিনিময় করা হচ্ছে। যা দেশের প্রচলিত
আইনের লঙ্ঘন।