বাজারে ডিমের
হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানেও ৬০ টাকা হালি ডিম বিক্রি হতে দেখা
যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর দুই সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের
ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। কমেনি সবজির দামও।
এখন মাছ-মাংসের
দাম বেশি, এমন সময় নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের ভরসা ডিম। তবে এই পণ্যের দাম হঠাৎ
করে অস্থির হয়ে যাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করছেন অনেকে।
রামপুরার হাজিপাড়া
বউবাজারে আসা গৃহকর্মী ফাতেমা খাতুন বলেন, বাচ্চাকাচ্চাকে মাছ-মাংস খাওয়াতে পারি না।
ঝোলভাত খাওয়ার জেদ করলে এক হালি ডিম কিনে রান্না করে দিলে খুশি হতো। এখন সেটাও কিনতে
কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বউবাজারসহ রাজধানীর
রামপুরা-মালিবাগ বাজারের ডিম বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ডিমের উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
কয়েকদিন আগেও প্রচণ্ড গরমের কারণে খামারে অনেক মুরগি মারা গেছে। ফলে বাজারে ডিমের সরবরাহ
হুট করে কমে গেছে।
ঢাকায় ডিমের
বড় দুটি পাইকারি বাজার আছে। এর একটি কারওয়ান বাজারসংলগ্ন তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি
ডিমের বাজার। অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার। এই দুই বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা
বলে জানা গেছে, সোমবার পাইকারিতে ১০০ বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৮০ থেকে ১ হাজার
২০০ টাকায়।
যদিও প্রান্তিক
খামারিরা ডিমের দাম কমা বাড়া নিয়ে তেজগাঁও আড়তমালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা
বলছেন, কিছুদিন আগে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়তমালিকরা। যে সময় সারাদেশে
ডিম হিমাগারে মজুত হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারাদেশে মেসেজের মাধ্যমে তারা (তেজগাঁও
আড়তমালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করে। হুট করে তারা দাম কমিয়ে দিয়ে খামারিদের থেকে ডিম
নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করে, এরপর আবার দাম বাড়িয়ে এ সিন্ডিকেট মুনাফা লুটছে।
তিনি বলেন,
ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও তারা সারাদেশে বিক্রিত ৪
কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা মেসেজ দিয়ে
বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশে থাকা আড়তদারদের। তারা এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট।
এদিকে, বাজারে
সবজির চড়া দাম প্রায় তিন-চার সপ্তাহ ধরে। এক কেজি বেগুনের দাম এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
কাকরোল-বরবটিরও এমন দর। এমনকি সস্তা দামে পরিচিত পেঁপের কেজিও এখন ৮০ টাকা।
সবজির বাজার
ছাড়াও বাড়তি উত্তাপ দেখা গেছে সব ধরনের মাছ, সোনালি মুরগি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দামে।
অন্যান্য পণ্যও চড়াদামে আটকে রয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে।
বাজারে পেঁয়াজের
দাম নতুন করে বাড়তে দেখা গেছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা, যা আগের চেয়ে
৫ টাকা বেশি। এছাড়া আদা কিংবা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার নিচে মিলছে না।
অন্যদিকে, ব্রয়লার
মুরগির দামে ততটা হেরফের না হলেও সোনালি মুরগির দাম বেশ বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি
হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকা। যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০
টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে।