আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

বন্যা এবং বন্যা পরবর্তী স্বাস্থ্য সচেতনতা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ জুলাই ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশ নদীবিধৌত সমতল ব-দ্বীপ অঞ্চল। দেশের প্রায় ২৫০টি নদী জালের মতো জড়িয়ে রেখেছে প্রিয় বাংলাদেশকে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, দারিদ্র্য ও অভাবের মতো বন্যাও যেন এদেশের মানুষের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছরই বন্যার কবলে পড়ে বাংলাদেশ। তবে এই বছর সিলেটসহ কয়েকটি অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বন্যার অতিরিক্ত জলাবদ্ধতায় প্রাণ হারিয়েছে অনেকে। পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। এরইমধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। কিছু অঞ্চলে বন্যার পানি কমলেও পানিবাহিত রোগের কারণে মানুষ এখনও বিপর্যস্ত।

বন্যার পানি ওঠার পর এবং পানি নেমে যাওয়ার পর পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগ যেমন- ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, পেটের পীড়া, কৃমির সংক্রমণ, চর্মরোগ রোগ এবং চোখের রোগ বৃদ্ধি পায়। এজন্য মানুষের স্বাস্থ্য সচেতন থাকা খুবই প্রয়োজন। বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত যেসব রোগ হতে পারে এবং এসব রোগের সতর্কতায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা সংক্ষিপ্তভাবে নিচে আলোচনা করা হলো।

বন্যা এবং বন্যা পরবর্তী সময়ের রোগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহতা দেখা দেয় ডায়ারিয়া নিয়ে। ছোট-বড় সবার ডায়ারিয়া হতে পারে। ছোট্ট শিশুরা ডায়ারিয়ায় বেশি ভোগে। এটি মূলত পানিবাহিত রোগ। খাবারের মাধ্যমে এ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। বন্যার সময় দূষিত পানি পান করা হয় বলে ডায়রিয়া বেশি হয়।

ডায়রিয়া প্রতিরোধে সচেতন হতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। পানির কারণেই ডায়রিয়া রোগ হয়। তাই বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে হবে। দুর্যোগের সময় বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা না গেলে বিশুদ্ধ করার উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া সাবান, পরিষ্কার পানির পাত্র সংগ্রহে রাখতে হবে। টিউবওয়েলের পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি ফুটিয়ে পান করা যাবে। পানি ফুটিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে জীবাণু মরে যায়। এরপর উপরের পানি তুলে পান করা যাবে।

পানি ফুটানো ছাড়াও ফিটকিরি অথবা ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে বিশুদ্ধ করে নেওয়া যেতে পারে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শরীর থেকে লবণ ও পানি বের হয়ে যায়। তখনই মৃত্যুর শঙ্কা বাড়ে। তাই ডায়ারিয়া হলে স্যালাইন, ভাতের মাড় খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া চিড়ার পানি, ডাবের পানি, গুড়ের শরবত দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও রোগীকে খাবারের আগে ও পরে এবং টয়লেট থেকে ফেরার পর সাবান বা ছাই দিয়ে দুই হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। শিশুরা বন্যা পরবর্তী সময়ে পুষ্টিহীনতায় ভোগে। তাদের শরীরে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়।

পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে তারা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ফলে নানা রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয়। তাই শিশুদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী শিশুদের খাবার আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুরা দুর্বল অনুভব করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বন্যার পানিতে অনেক দূষিত উপাদান থাকে। তাই এই সময় চর্মরোগও প্রকোপ আকার ধারণ করে। পানিবাহিত চর্মরোগগুলোর যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে। যতটা সম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে। এটি ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। এছাড়াও ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার পানিতে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এসব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগেরও শঙ্কা বাড়ে। তাছাড়া বন্যপ্রাণী, ইঁদুর ইত্যাদির জন্য লেপটোপিরোসিস ও অন্যান্য রোগের সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে।

বানভাসি মানুষের মধ্যে ফাংগাস এবং অন্যান্য জীবাণুগুলোর অত্যাধিক সংমিশ্রণ হতে পারে। যার ফলে অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীরা বিপাকে পড়ে। শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বেড়ে যায়। তাই এই সময় শিশু, প্রবীণ এবং গর্ভবতী নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।  এছাড়াও বন্যার পানিতে সাপের উপদ্রবও বেড়ে যায়। সাপ শুকনো জায়গার সন্ধান করে এবং বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়। তাই এই সময় সাপের কামড়ের ভয়ও থাকে। বন্যার সময়কালীন যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে সাপেকাটা। বন্যার সময় সাপ তাদের আবাস হারিয়ে শুকনো স্থানে মানুষের সঙ্গে অবস্থান নেয়। এজন্য সাপে কাটার পরিমাণ বেড়ে যায়। বিষহীন সাপে কাটলে ভয়ের কিছু নেই তবে বিষধর সাপে কাটলে রোগীকে বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নিতে হবে।

যদি সাপে কাটা স্থানে দুটি বা একটি চিহ্ন দেখা যায় সেই সঙ্গে সাপে কাটা স্থানে তীব্র ব্যথা বা জ্বালা করা, স্থানটি ফুলে লাল হওয়া, ঘুম ঘুম ভাব, মাথাব্যথা ও মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া, রক্ত বমি, দুর্বলতা, একটি জিনিস দুটি দেখা, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বুঝতে হবে বিষধর সাপে কেটেছে। কিন্তু যদি ছোট ছোট অস্পষ্টভাবে অনেকগুলো দাঁতের চিহ্ন দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে সাপটি বিষহীন। প্রথমে সাপে কাটা রোগীকে বোঝাতে হবে ভয়ের কিছু নেই। সেই সঙ্গে সাহস জোগাতে হবে। রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।

রোগীকে শুইয়ে দিয়ে যে অঙ্গে সাপ দংশন করেছে সে অঙ্গটি নড়াচড়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। হাড় ভেঙে গেলে যেভাবে বাঁশের কঞ্চি বা সোজা লাঠি দিয়ে ব্যান্ডেজ করা হয় সেভাবে বাঁধুন। হাত-পায়ে দংশনের স্থানে একটি মোটা কাপড় বা গামছা দিয়ে পুরো হাত-পা পেঁচিয়ে দিন বা দংশিত স্থানের ওপরে খুব শক্ত না হয় এমন করে গিট দিন। অসংখ্য শক্ত গিট দেবেন না। এতে করে দংশিত অঙ্গে পচন ধরতে পারে। দংশিত স্থান ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে আবৃত করে রাখুন। দংশিত স্থানের আশপাশে কাটাকাটি করবেন না, সুই ফোটাবেন না, রক্ত চুষে বের করবেন না, বিভিন্ন গাছ লতাপাতার রস, গোবর লাগাবেন না। যদি কথা বলতে বা গিলতে সমস্যা দেখা দেয় তবে কোনো কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। ওঁঝা-বৈদ্যের কাছে সময় নষ্ট না করে রোগীকে হাসপাতালে দ্রুত স্থানান্তর করুন। হাসপাতালে রোগীকে অ্যান্টিভেনাম, টিটেনাস প্রতিষেধক দিতে হবে।

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানীর সন্তান হিসেবে ছোট বেলা থেকে বন্যার সঙ্গে বেড়ে উঠার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। এছাড়া একজন চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি দেখেছি বন্যার সময় ও পরে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই। এটা হয় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে।

চোখ ওঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ৪-৮ ঘণ্টা পর পর অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ যেমন কোরামফেনিকল দিতে হবে। কোনো ড্রপ একবার ব্যবহার করলে অন্য কেউ তা ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার হাতে পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। নোংরা ময়লা পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন না। চোখ ডলবেন না। অপরিষ্কার হাত চোখে লাগাবেন না। ঘুমানোর সময় যে চোখ উঠেছে সেই কাতে ঘুমান।

বন্যা বাংলাদেশের মানুষের কাছে নতুন কোনো বিষয় নয়। নানা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মতো এই ঘাতক বন্যা দেশের মানুষের কাছে চিরায়িত সংস্কৃতির এক অভিন্ন অংশে পরিণত হয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে এটি বন্ধ করা আমাদের পক্ষে মোটেই সম্ভব নয়। তারপরও বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব যতটুকু পারা যায় ততটুকু কমানোর চেষ্টা করা উচিত। এছাড়া এ সময় আমাদের একটি বিষয়ের উপর নজর রাখতে হবে তা হলো করোনা। বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের সঙ্গে করোনা দেখা দিলে তা হবে অনেক ভয়াবহ।

লেখক: উপচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর



তালতলীতে তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

তালতলী(বরগুনা)প্রতিনিধি:

বরগুনার তালতলী উপজেলায় বিদ্যুৎ প্রকল্প জন্য তিন ফসলি কৃষিজমি ও বসতভিটা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এমন অভিযোগ এনে তা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার (১৭ মে) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের আগাঠাকুর পাড়া গ্রামে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা আমাদের তিন ফসলি কৃষি জমি হারাতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী কাছে দাবি, দেশের উন্নয়ন করতে গিয়ে ১ ইঞ্চিও কৃষি জমি যাতে নষ্ট করা না হয়। আমাদের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কবরসহ শত বছরে পুরোনো বসতভিটা আমরা কোন মূল্যেই হারাতে চাই না। কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ছাড় এসব জমি অধিগ্রহণ করা হলে সাধারণ মানুষসহ কৃষক পরিবারগুলো অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়বে।

মানববন্ধনে আসা কৃষক নেতা শাহজাহান টুকু বলেন, এই এলাকার শতভাগ মানুষ চাষাবাদ ও কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। এখানের কৃষকরা বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন করে এ দিয়েই তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। এই জমি অধিগ্রহণপ্রক্রিয়া বন্ধ না করা হলে যেকোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

কুদ্দুস মৃধা নামের একজন কৃষক বলেন, সরকারের এক শ্রেণির কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করে এসব জমি অধিগ্রহণ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। কৃষি জমিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আগাঠাকুর পাড়া ও শিকারীপাড়া গ্রামের কৃষি জমি বলে কিছুই থাকবে না। এই জমি দিয়ে দিলে আমরা খাব কি?

এসময় বক্তব্য রাখেন, তালতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান, বড়বগী ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর মিয়া আলম মুন্সী, কৃষক নেতা শাহজাহান টুকু প্রমুখ।

ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে কৃষক, নারী, ব্যবসায়ীসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।


আরও খবর



বেলাবতে এক মঞ্চে সকল প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নরসিংদী প্রতিনিধি

Image

বেলাব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিন্ধদ্বী সকল প্রার্থীরা এক মঞ্চে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে।

শনিবার বেলাব উপজেলার নারায়নপুর এলাকার সমাজসেবী সংগঠন লাল সবুজ চেতনা সংসদের উদ্যোগে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিব্য দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা ও পুরুষ পদপ্রার্থীদের এক মঞ্চে আনা এনে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।

শনিবার বিকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাল সবুজ চেতনা সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমী এই নির্বাচনী ইশতেহার ও এক মঞ্চে সকল প্রার্থীদের একসাথে দেখতে বেলাব উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ ভোটাররা উপস্থিত হয়।

নারায়নপুর রাবেয়া মহাবিদ্যালয়ের ফরিদা বেগম মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে ভোটারদের সামনে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচন পূর্ব প্রতিশ্রুতি ও নির্বাচন পরবর্তী কর্মপরিকল্পনার ইশতেহার ঘোষণা করেন।

চেয়ারম্যান পদ ৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী বেলাব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও ইশতেহার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন,কাপ পিরিচ পদে বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী শরিফ উদ্দীন খান মোমেন, ঘোড়া প্রতীকে ভাস্কর অলি মাহমুদ, আনারস প্রতীকে আমান উল্লাহ আমান, চিংড়ি মাছ প্রতীকে মাজহারুল হক, টেলিফোন প্রতীকে জোনাইদ হোসেন পারভেজ।

ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে বই প্রতীকে ইসলাম উদ্দিন, টিয়া পাখি প্রতীকে সাইফুল ইসলাম, টিউবওয়েল প্রতীকে মো: খোর্শেদ আলম, তালা প্রতীকে রফিকুল ইসলাম।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রজাপতি প্রতীকে শারমিন আক্তার খালেদা, সেলাই মেশিন প্রতীকে রহিমা বেগম ময়ুরী, হাঁস প্রতীকে নাজমুন্নাহার আমিনা।

প্রার্থীরা শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ও স্মার্ট উপজেলা গড়তে সকলে ঐক্যমত পোষন করেন এবং তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের পাতায় উঠে আসে সমাজ থেকে সন্ত্রাস, মাদক নির্মূল, বাল্যবিবাহ, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতি।

কাপ পিরিচ প্রতিকের প্রার্তী শরিফ উদ্দীন মোমেন তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে বেলাব উপজেলাকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্তসহ একটি মডেল উপজেলা হিসাবে বেলাব উপজেলাকে গড়ে তুলবেন।

আনারস প্রতীকে প্রার্থী আমান উল্লাহ বলেন, নির্বাচিত হলে শিক্ষার মানোন্নয়ন, সন্ত্রাস দূরীকরণ, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা এবং কৃষিতে ন্যায মূল্য পেতে হিমাগার নির্মান করবো।

ঘোড়া প্রতীকে প্রার্থী ভাস্কর অলি মাহমুদ বলেন, স্মার্ট, আধুনিক ও সমৃদ্ধ উপজেলা গড়তে যা যা করা দরকার তাই করবো। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে কাজ করবো। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করতে সকল প্রার্থীরা তাদের অঙ্গিকার পোষণ করেন।


আরও খবর



দিল্লিতে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতলেন মিথিলা

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

বাংলার আলোচিত অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। এবার ভারতের চতুর্দশ দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন মিথিলা। গত এপ্রিলের শুরুতেই মুক্তি পেয়েছিল মিথিলা অভিনীত টালিউড সিনেমা ও অভাগী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অভাগীর স্বর্গ অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। এবার এই ছবিতে অভিনয়ের জন্যই সেরা অভিনেত্রীর সম্মাননা পেলেন মিথিলা।

পুরস্কার পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত মিথিলা। ভারতীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি খুব খুশি পুরস্কার পেয়ে। আমার গোটা টিমকে আমি ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে প্রযোজক এবং পরিচালককে সাধুবাদ জানাই। দিল্লিতে আয়োজিত দাদাসাহেব ফালকে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমি সেরা অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছি।

ও অভাগী সিনেমার পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী এবং প্রযোজক ড. প্রবীর ভৌমিকও খুব খুশি। প্রবীর ভৌমিক গণমাধ্যমকে বলেন, মিথিলার এই পুরস্কারটি প্রাপ্য ছিল। ও এই পুরস্কারের জন্য যোগ্য। পরিচালক আগেই জানিয়েছিলেন, ছোটবেলা থেকেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের যেকোনো লেখা পড়েই মনে হত যেন সিনেমা দেখছি। ও অভাগী হল অভাগীর স্বর্গ গল্পটির অ্যাডাপ্টেশন। মূল গল্পকে বিকৃত না-করে নতুন এবং ইউনিক কিছু তৈরি করা হয়েছে এই ছবিতে।

ও অভাগী ছবির মুখ্য চরিত্রে ভারত ও বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াদ রশিদ মিথিলাকে ছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে সায়ন ঘোষ, সুব্রত দত্ত, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, জিনিয়া, ঈশান মজুমদার-সহ আরও অনেককে।

ছবিতে মিথিলার ভূমিকার প্রশংসা করে তার স্বামী ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ও অভাগী হলো শরৎ চন্দ্র ক্লাসিকের একটি সুন্দর ও সংবেদনশীল ব্যাখ্যা। যেখানে রফিয়াথ রশিদ দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।


আরও খবর



আস্থার জায়গা পুনর্নির্মাণ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: ডোনাল্ড লু

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বুধবার (১৫ মে) সাড়ে ৩টায় বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডোনাল্ড লু। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আস্থার জায়গা পুনর্নির্মাণ করতে চাই। একই সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে চাই।

চলমান বাংলাদেশ সফর নিয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, আমি গত দুইদিন ধরে বাংলাদেশ সফর করছি। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য দুই দেশের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করা। গত বছর আমরা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা দেখেছি।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমাদের ভেতর যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল তা খুবই সাধারণ বিষয়। সম্পর্কে এমনটা হয়েই থাকে। আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই, পেছনে তাকাতে চাই না।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ক কীভাবে আরও জোরদার করা যায় সেই পথই খুঁজছি আমরা। আমাদের সম্পর্কের কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগে কাজ করতে চাই। বেশ কিছু কঠিন ইস্যু আমাদের সামনে রয়েছে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম পরিবেশ সংস্কার, মানবাধিকার ইস্যু, ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কারের মতো ইস্যু রয়েছে আমাদের সম্পর্কে। এই কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা আসলে আমাদের সম্পর্কে ইতিবাচক ইস্যুগুলোর দিকে তাকাতে চাই।

ডোনাল্ড লু বলেন, আমরা নতুন বিনিয়োগের কথা বলছি। আমরা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগের কথা বলেছি।


আরও খবর



প্রবাসে নিয়ে দালালের হাতে বিক্রি, দেশে ফেরাতে পরিবারের আকুতি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
উপজেলা প্রতিনিধি

Image

উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে পাথরঘাটার একাধিক ব্যক্তিকে প্রবাসে পাঠিয়ে দালালের হাতে বিক্রি করেছে প্রতারক আ. জলিল চৌধুরী। সৌদিতে থাকা সন্তানদের ফিরে পেতে বরগুনার পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বেলা ১১ টায় পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সৌদি আরব থেকে সদ্য ফিরে আসা ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানসহ ফোরকানের বাবা আ. কাদের, সুমনের বাবা শাহ আলম, ইমরানের মা শাহিনুর বেগম, মামুনের বাবা আবুল হোসেনসহ ৬ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলো।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মামুন মিয়া, মো.সুমন, ইমরান ও ফোরকানকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নিয়ে বিদেশে পাঠায় পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা প্রতারক আ. জলিল চৌধুরীর। সৌদি আরব যাওয়ার পরে একের পর এক দালাল বিক্রি করে তাদের। সেখানে কাজ না দিয়ে আটকে রাখা হয় তাদের।

তারা আরো জানান, পাথরঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক লোককে সৌদি আরব পাঠিয়ে ৭০ লাখ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে জলিল। প্রবাসে পাঠাতে অনেকে ঋণ, ধার কর্জ এবং জমি বিক্রি করে পরিবার গুলো এখন প্রায় নিঃস্ব। দেশে টাকা পাঠানো দূরে থাক সেখানে নিজেরাই খেতে পারছে না।

ফোরকানের বাবা আ. কাদের বলেন, আমি ও ছেলে রিকশা চালাতাম অনেক কষ্ট করে জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাই। আজ বাবায় বড় কষ্টে আছে।

সৌদি থেকে সদ্য দেশে আসা মিজানুর রহমান বলেন, অঙ্গীকার অনুযায়ী বিদেশে যাওয়ার পর ভিসার মেয়াদ শেষ হলে ইকামা না দেয়ার কারনে ওই দেশের পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আ. জলিল চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, আমি সরকারের নিয়ম মেনেই তাদের বিদেশে পাঠিয়েছি। শর্ত অনুযায়ী তাদের ভিসা এবং কাজ দিয়েছি। কাজ না করে যদি দেশে চলে আসে এর দায়ভার তো আর আমি নিব না।

তিনি আরও বলেন, তাদের ছাড়াও অনেক মানুষকে আমি বিদেশে পাঠিয়েছি তারা তো ঠিকঠাক মতো কাজ করছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, সকল কাগজপত্র আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

সাকিল আহমেদ, পাথরঘাটা (বরগুনা)


আরও খবর