আজঃ শনিবার ২৯ জুন ২০২৪
শিরোনাম

ব্রিটেন থেকে ১০০ টন সোনা ফিরিয়ে আনল ভারত

প্রকাশিত:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ০২ জুন 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভারতে এখন স্বর্ণকে ঘিরে চলছে যত আলোচনা। তবে গোটা দেশের আলোচনায় এখন হঠাৎই চলে এসেছে টন টন স্বর্ণ। ইংল্যান্ড থেকে ১০০ টনের বেশি স্বর্ণ এল ভারতে!

ইংরেজদের শাসনকালে রাশি রাশি স্বর্ণ নিয়ে ভারত থেকে ব্রিটেনে পাড়ি দিয়েছিল। ১৯০ বছরের পরাধীনতায় ভারত ঠিক কত পরিমাণ স্বর্ণ হারিয়েছে, খাতায়-কলমে তার হিসাব নেই। সেই ইংরেজদের দেশ থেকে স্বর্ণ ফিরিয়ে আনার খবর সাধারণ মানুষের মনেও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ইংরেজদের নিয়ে যাওয়া স্বর্ণই ভারত ফিরিয়ে আনছে? উত্তর হল, না। ভারতের জমা রাখা স্বর্ণই ভারত ফিরিয়ে আনছে। থাকবে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার ভল্টে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০০ মেট্রিক টন স্বর্ণ বিদেশ থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

ব্রিটেনের কোথায় জমা ছিল ভারতের স্বর্ণ? ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের মাটির নীচে থাকা ন’টি বড় বড় ভল্টে থাক থাক করে সাজানো থাকে স্বর্ণর বার।

শুধু ভারতের নয়, বিভিন্ন দেশের স্বর্ণও ওই ভল্টে জমা রয়েছে। কেউ চাইলেই ওই ভল্টে যেতে পারেন না। একমাত্র ইংল্যান্ডের রাজা বা রানিই ওই ভল্টে যেতে পারেন এবং জমা স্বর্ণ দেখতে পারেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন ভারত স্বর্ণ রাখল ইংল্যান্ডের কাছে? যে ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর শোষণ করেছে, তাদের কাছেই স্বর্ণ রাখার কী প্রয়োজন পড়ল ভারতের? সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে ঘাঁটতে হবে ইতিহাস।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের মধ্যে এক ভীতি জন্ম নিয়েছিল। ধারণা হয়েছিল, ভারতের বাজারে যদি কোনও বিদেশি কোম্পনিকে ব্যবসা করতে দেওয়া হয়, তবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতোই অবস্থা ঘটতে পারে। তাই ভারতের বাজার সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল। যা ধীরে ধীরে ভারতকে অর্থনৈতিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিতে থাকে।

এক দিকে ভারতীয় বাজারে বিদেশি সংস্থার নো এন্ট্রি’, অন্য দিকে বিদেশ থেকে বিভিন্ন জিনিস আমদানির কারণে ভারতের আর্থিক ভান্ডারে টান পড়তে শুরু করে। রপ্তানির থেকে আমদানির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পায়।

ভারত বিদেশ থেকে মূলত তেল আমদানি করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির সঙ্গেই এই কারবার চালায় ভারত। ১৯৯১ সালের আগে ভারতে প্রয়োজনীয় তেলের বেশির ভাগ জোগান আসত ইরাক থেকে।

কিন্তু নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে ছিল আমেরিকার চোখ রাঙানি। সব মিলিয়ে তেলের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ভারতে তেলের সংকট দেখা দেয়। তেল কিনতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ডলারের। বিদেশে ভারতের টাকা চলে না। কী ভাবে ডলার পাওয়া যাবে তার পথ খুঁজতে থাকে তৎকালীন সরকার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ডলার নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না ভারতের। কিন্তু সেখান থেকে ডলার নিতে গেলে মেনে চলতে হত তাদের দেওয়া শর্ত। অনেকের মতে, আইএমএফ হোক বা বিশ্ব ব্যাংক, নামে সতন্ত্র হলেও তাদের উপর আমেরিকাই ছড়ি ঘোরায়।

ভারত সে সময় বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। তখনই স্বর্ণ বিদেশি ব্যাংকে রাখার পরিকল্পনা মাথায় আসে সরকারের। তবে আমেরিকার দৃষ্টি এড়িয়ে স্বর্ণ অন্য কোনও বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।

শোনা যায়, গোপনে স্বর্ণ ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড এবং ব্যাংক অফ জাপানের কাছে জমা রাখে ভারত। তার বিনিময়ে ডলার নেয়। এই পুরো অপারেশনটা ভারত সরকার গোপনে করার চেষ্টা করলেও কয়েকটি সংবাদপত্রে তা ফাঁস হয়ে যায়। বিদেশে জমা রাখা স্বর্ণই ভারতে ফেরানো শুরু হয়েছে।

ভারতের কাছে এখন স্বর্ণ রয়েছে ৮২২ মেট্রিক টন। গত পাঁচ বছরে ভারত ২০৩.৯ মেট্রিক টন স্বর্ণ কিনেছে। তার মধ্যে কিছু মজুত রয়েছে আরবিআইয়ের কাছে। কিছু বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছ।

শুধু ডলারের বিনিময়ে স্বর্ণ বিদেশি ব্যাংকে জমা পড়ত তা-ই নয়। ভারত এমনি সময়েও স্বর্ণ বিদেশে রাখে। কেন ভারত সরকার বিদেশি ব্যাংক স্বর্ণ গচ্ছিত রাখে? দেশের মধ্যে বিভিন্ন অস্থিরতার কথা চিন্তা করেই সরকার দেশ থেকে স্বর্ণ সরিয়ে রাখে।

তা হলে ভারত কেন স্বর্ণ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হল? রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ অনেক দেশই ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যার ফলে বিদেশি ব্যাংকে রাশিয়ার জমা রাখা রাশি ক্লোজ়ড’ করা দেওয়া হয়েছে। ভারতও তা-ই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।


আরও খবর



এবারের ঈদ দেশের মানুষের জন্য একটা কষ্টের দিন: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মুদ্রাস্ফীতির কারণে ঈদ উদযাপন সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টের ও কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৭ জুন) সকালে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের পর দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি তাঁতিপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুরো দেশবাসীকে এ শুভেচ্ছা জানান তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ ও সারাবিশ্বের মুসলমানদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক। আমি বিশ্ব মুসলিমের অব্যাহত সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করি। এই ঈদুল আজহা আমাদের ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত করে। এদিন আমরা পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আমাদের মধ্যে যে সমস্ত অশুভবোধ আছে তা ত্যাগ করি। একই সঙ্গে আমাদের জীবনকে যেন সুন্দর, সৎ ও পবিত্রতার বোধে রাখতে পারি সে প্রার্থনা করি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদুল আজহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ আজকের সমস্ত দেশেই যেভাবে দুর্নীতি আগ্রাসী হয়ে একটা ব্যাধি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমরা মনে করি আজ ঈদুল আজহা ত্যাগের মাধ্যমে যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আছেন তারা তা ত্যাগ করবেন। তাদের সমস্ত অশুভ আকাঙ্ক্ষা বাদ দেবেন। একই সঙ্গে জনগণের জন্য মানুষের কল্যাণে তারা কাজ করবেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার ঈদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা কষ্টের দিন। এ জন্যই যে এখন যারা পশু কোরবানি করেন তারা পশুকে যে ক্রয় করতে হয় সেখানেও তারা একটা বড় রকমের মুদ্রাস্ফীতিতে আক্রান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ যারা কোরবানি দিতে পারে না তারা বিভিন্নভাবে কোরবানির গোশত সংগ্রহ করে। তাদের পক্ষে তা রান্না করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রান্নার যে সমস্ত মসলা ও অন্যান্য উপকরণ দরকার হয়, এটা তাদের পক্ষে সংগ্রহ করা খুব জটিল এবং কঠিন।

এ অবস্থার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ দ্রব্যমূল্যের দাম যেভাবে বেড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এ কারণে ঈদুল আজহা সাধারণ মানুষের জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসেনি। এসব কারণে মানুষ ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে না।

বিএনপি সেন্টমার্টিন নিয়ে যে সমস্ত কথা বলছে তা গুজব ছড়ানো হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা সবসময় (গণমাধ্যমকর্মী) ওবায়দুল কাদের সাহেবের রেফারেন্স দিয়ে কথা বলেন তো, এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না। এজন্য পছন্দ করি না যে ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথার জবাব দিতে আমার রুচিতে বাধে। যারা রাজনীতি করছেন ক্ষমতায় আছেন যদি সত্যকে উপলব্ধি না করেন, তারা যদি দেশের সমস্যা, গণমানুষের যে আকাঙ্ক্ষা বুঝতে না পারেন, তাহলে তারা কীভাবে শাসক হবেন? এবং আমরা দেখেছি গত দেড় যুগ ধরে এ দখলদার আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সব আকাঙ্ক্ষাগুলোকে পদদলিত করে দিয়েছে। জনগণের অধিকারগুলোকে ভোটের অধিকারগুলোকে পদদলিত করে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে পদলিত করে তারা আজকে জোর করে শাসন ব্যবস্থা জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। শুধু তাদের কথার উত্তর দিতে আমাদের ইচ্ছে করে না এ জন্যই জনগণ এখন তাদের পছন্দ করে না। তারা (আওয়ামী লীগ) এটুকু উপলব্ধি করে না যে জনগণ এখন তাদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে। কারণ তারা এখন শুধু মিথ্যে কথা বলে, প্রতারণা করে জোর করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। এজন্যই আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা গুরুত্ব দেই না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, মিয়ানমার ও সেন্টমার্টিনের বর্তমান ইস্যু আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যে যাই বলুক এটাই সত্য যে সেখানে গোলাগুলি হচ্ছে। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের সমস্ত জাহাজগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এই সত্যকে তারা (আওয়ামী লীগ) অস্বীকার করবে কীভাবে। তাদের বিজিবির প্রধান সেখানে যাচ্ছে বারবার। সেনাবাহিনীর প্রধান বারবার বলছেন যে আমরা সতর্ক আছি। তাহলে আমরা (বিএনপি) গুজব ছড়ালাম কোথায়?। এটাতো বাস্তবতা যে সেন্টমার্টিনের সঙ্গে মিয়ানমারের ঘটনাবলির একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেই সমস্যার কারণে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যেতে পারছে না, খাদ্য যেতে পারছে না। সেখানকার যারা অধিবাসী তারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে। তারা নিরাপত্তার অভাববোধ করছে। সেই জিনিসটা (আওয়ামী লীগ) স্বীকার না করে। তারা এই সমস্ত কথা বলছে যেসব কথা ভিত্তিহীন বানোয়াট এজন্যই এ সমস্ত কথা আমরা গুরুত্ব দেই না।

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, জেলা যুবদলের সভাপতি মেহেবুল্লাহ আবু নূর চৌধুরীসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



জাল টাকার মাফিয়া জাকির আটক

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর কদমতলীতে বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ মাফিয়া জাকিরকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শনিবার কদমতলীর দনিয়া থেকে তাকে আটক করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ডিবি লালবাগ বিভাগের অভিযানে কদমতলীতে কারখানাসহ কোটি কোটি জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় জাল টাকার মাফিয়া জাকিরকেও আটক করা হয়েছে। অভিযান এখনো চলমান আছে।

সূত্র জানিয়ছে, এই কোটি কোটি জাল টাকা আসন্ন ঈদুল আজহা কেন্দ্রিক পশুর হাটগুলোকে সরবরাহ করার চেষ্টা করছিল চক্রটি।

ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান জানান, জাল টাকার বিষয়ে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।

২০১২ সাল থেকে এ কাজটি করে আসছিলো জাল টাকার অন্যতম পথিকৃত জাকির। বাগেরহাট, খুলনাতেও তার কারখানা ছিল। এক নারী ক্রেতার সূত্র ধরে এই কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। এই কারখানায় ভারতীয় মুদ্রাও তৈরি হতো। এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত আছেন বলে জানা গেছে।


আরও খবর



স্বরূপকাঠিতে বাস চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
হযরত আলী হিরু, স্বরূপকাঠি

Image

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। রবিবার (৯ জুন) সকালে স্বরূপকাঠি-বরিশাল মহাসড়কের কুনিয়ারি প্রাইমারি স্কুলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মো. সাইফুল (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম সাকিল (২৬)।

নিহত সাইফুল উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগন্নাথকাঠি গ্রামের মো. ফজলুল করিমের ছেলে এবং সাকিল একই এলকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহিদুল ইসলামের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাকিল ও সাইফুল মোটরসাইকেলে করে বরিশালের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। তাঁরা বাসটি দেখে ধীরগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে কুনিয়ারি প্রাইমারি স্কুলের সামনে আসলে বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা শুভেচ্ছা নামের একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁদের চাপা দেয়। পরে স্থানীয়রা হাত ইশারা দিয়ে ড্রাইভারকে থামতে বললেও তা না শুনে তাদের চাপা দিয়ে মোটরসাইকেলসহ অনেক দূর নিয়ে যায়।

শাকিল ও সাইফুলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. শাহারুখ মল্লিক।

নেছারাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. পনির খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বাসটির চালক ও তাঁর সহকারীকে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।


আরও খবর



বন্যায় আক্রান্ত সিলেট: পানিবন্দি সাত লাখ মানুষ

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
এস এ শফি, সিলেট

Image

মাত্র ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিলেটে চলমান দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ফের বাড়ছে নদ-নদীর পানি। মহানগর ও জেলাজুড়ে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরের ১৫টি এলাকার ১০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। বন্যায় ঝুঁকিতে পড়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বিদ্যুতের সাবস্টেশন। সুরমা নদী ছাপিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এটি প্লাবিত হলে দক্ষিণ সুরমার প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারেন।

মঙ্গলবার বিকাল থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ। নদীর পাড়ে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন তারা।

গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই গত শনিবার ফের কবলিত সিলেট।

সোমবার ঈদের দিন ভোর রাত থেকে সিলেটে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। সাথে নামে পাহাড়ি ঢল। সকাল হতে না হতেই তলিয়ে যায় মহানগরের অনেক এলাকা। জেলার বিভিন্ন স্থানেও অবনতি হয় বন্যা পরিস্থিতির। সোমবার বিকালে বৃষ্টি থামলে ধীরে ধীরে কিছুটা কমে পানি। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাত থেকে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। উজানেও বৃষ্টিপাত হয় প্রচুর। ফলে হু হু করে বাড়তে থাকে সিলেটের সব নদ-নদীর পানি। ঈদের দিন দুটি নদীর পানি ২টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও মঙ্গলবার সকালে ৪টি নদীর পানি ৬ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকালে জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন জায়গায় পানি আরও বেড়েছে।

চৌকিদিঘির বাসিন্দা মতিন মিয়া জানান, ঘরে কোমর পানি, আমার পরিবার গাঙ্গের হপাড় রাইক্কা আইছি আশ্রয়কেন্দ্রত। একবারে নিরাশ অবস্থা, খাবারদাবার কিচ্ছুই নাই। এই অবস্থার মাঝে আছি। আমরা বারবার ভোগান্তির শিকার হইরাম। কেউ দেখেরও না। সরকারের পক্ষ থাকিও কুন্তা দেয়া ওর না।

এছাড়া সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। আর সারি-গোয়াইন নদীর সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ০.২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেটজুড়ে ৮৬৪টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত। এসব গ্রাম ও এলাকার ৬ লাখ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন বন্যা আক্রান্ত। এর মধ্যে সিলেট মহানগরের ৪টি ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগরে ৮০টি।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহানগরের সব নিচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ এলাকা বন্যাকবলিত।

এছাড়া মহানগরের মধ্যে অনেক প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি রয়েছে। এয়ারপোর্ট সড়ক, সিলেট-তামাবিল সড়ক, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোডসহ বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান পানির নিচে। এদিকে মহানগর পুরোটা না হলেও জেলার সব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাটসহ কয়েকটি উপজেলার গ্রামীণ অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষিজমির ফসল তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পানিবন্দি লোকদের উদ্ধারের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আগামী ৩ দিন সিলেট অঞ্চলে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ সময় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।

সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী তিন দিন সিলেটে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

এদিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান বুধবার দিনভর সিলেট নগরীর বিভিন্ন বন্যা কবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে মিরাবাজার কিশোরী মোহন বালক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ করেন।

এসময় নগরীর বন্যা পরিস্থিতি দেখে তাৎক্ষণিক নগদ ১০ লক্ষ টাকা, ১ শ' মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী।

ত্রাণ সহায়তায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়ার পর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যার খবর রাখছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবার বিতরণ করছে সিটি কর্পোরেশন। পানি না কমা পর্যন্ত আমাদের ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

এসময় সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল ইসলাম, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি, সিলেট জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



খালেদা জিয়ার অবস্থা ক্রিটিক্যাল: ফখরুল

প্রকাশিত:শনিবার ২২ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২২ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা ক্রিটিক্যাল বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২২ জুন) দুপুর দেড়টায় বিএনপির চেয়ারপারসনকে দেখতে যান মির্জা ফখরুল। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।

বর্তমানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। সেখানে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসক-নার্স ছাড়া অন্য সবার প্রবেশে নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

গণমাধ্যমকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ম্যাডামকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। এখন তিনি সিসিইউতে আছেন। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা এখন ভেতরে কাউকে যেতে দিচ্ছেন না।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের কাছ থেকে আমি জানতে পেরেছি যে, তার (খালেদা জিয়া) অবস্থা বেশ ক্রিটিক্যাল। তারা আজকে সন্ধ্যায় সম্ভবত আবারও বোর্ড মিটিং করবেন এবং এই বোর্ড মিটিং করে তারা পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।

এসময় বিএনপির মহাসচিব দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চান।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম সিসিইউতে ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। চিকিৎসা চলছে। নতুন করে কিছু বলার মতো নেই।

এর আগে গত ২১ জুন দিবাগত রাত ৩টায় গুলশানের বাসা ফিরোজায় খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে সিসিইউতে দ্রুত ভর্তি করোনার চিকিৎসা ‍শুরু করে মেডিক্যাল বোর্ড।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসিনসহ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা কয়েক দফা বৈঠকে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন।

মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে লন্ডন থেকে ডা. জোবায়েদা রহমানসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. জাহিদ।

সর্বশেষ গত ২ মে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই সময় চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে রেখে দুই দিন চিকিৎসা দেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস ছাড়াও হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।


আরও খবর