আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

ব্যাংক লেনদেনের সময় বাড়লো

প্রকাশিত:রবিবার ৩০ মে ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ৩০ মে ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময় ব্যাংক আগের মতো সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। তবে বিধিনিষেধের এই সাত দিন লেনদেন ও ব্যাংক খোলা রাখার সময় আগের চেয়ে ৩০ মিনিট বা আধাঘন্টা বাড়ানো হয়েছে। নতুন সময় অনুযায়ী লেনদেন সকাল ১০টা থেকে তিনটা পর্যন্ত চলবে। এতদিন বেলা ২:৩০টা পর্যন্ত লেনদেন হতো।

রবিবার (৩০ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল নির্দেশনা জারি করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০ ও ২৮ এপ্রিল, ৫ মে এবং ১৬ মে সীমিত পর্যায়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনের সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু ৩০ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধের সময় ব্যাংক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ৩১ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত সীমিত পর্যায়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ সময় দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিকাল ৪:৩০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ এপ্রিল জারি করা ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-১৫ এ প্রদত্ত অন্যান্য নির্দেশাবলী অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ প্রতিটি ব্যাংকের উপজেলা শহরের একটি শাখা খোলা থাকবে বৃহস্পতিবার, রোববার ও মঙ্গলবার। এবং সিটি করপোরেশনের এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি শাখা প্রতি কর্মদিবস খোলা রাখতে হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো- সার্কুলারে বলা হয়েছে।


আরও খবর



রিকশাচালকে মারধর করে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নিলেন ইউপি সদস্য

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসাইন, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

Image

ভোলার চরফ্যাশনে নোঙ্গর চুরির অপবাদ দিয়ে হানিফ নামের এক রিকশাচালককে হাত-পা বেধে মারধর করে দেড় লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদারের বিরুদ্ধে।

রোববার (১২ মে) দুপুরে চরফ্যাশন সদরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রিকশা চালক মো. হানিফ।

রিকশাচালক হানিফ অভিযোগ করেন, গত ৫ এপ্রিল রোজ শনিবার সকালে তিনি রিকশা চালিয়ে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার পৌছলে স্থানীয় প্রভাবশালী দুলাল দালালের মাধ্যমে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদার খেজুর গাছিয়া বাজারে তার গদি ঘরে ডেকে নেন এবং  ইউপি সদস্য মোঃ ইউছুফ সিকদার আমাকে আটকিয়ে মারধর করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও আমার ছেলের কাছ থেকে ফাঁকা স্টাম্পে টিপ স্বাক্ষর রাখেন।

তিনি অরোও অভিযোগ করেন, আমি একজন রিক্সা চালক অনেক যাত্রী আমার রিকশায় যাত্রী বহন করি এবং বিভিন্ন মামামাল পরিবহন করে থাকি। গত রমজানের ঈদের আগে একদিন সকালে হাসান নামের এক ব্যাক্তি খেজুর গাছিয়া বাজার থেকে আমার রিকশায় একটি নোঙ্গর নিয়ে আসেন চেয়ারম্যান বাজারে। ওই নোঙ্গরটি তিনি বিক্রি করবেন বলে তিনি আমাকে জানিয়েছেন তবে কোথায় বিক্রি করবেন তা আমার জানা নাই। ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদার প্রকৃত নোঙ্গর বিক্রেতাকে ছেড়ে দিয়ে ওই নোঙ্গরটি বিক্রির সাথে আমি জড়িত এমন সন্দেহে ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদার আমাকে ধরে নিয়ে আটক করে নোঙ্গর চুরির অপবাদ দিয়ে আমাকে হাত-পা বেধে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে আমাকে উদ্ধারে আমার ছেলে মো. কবির  খেজুরগাছিয়া গেলে ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদার জোরপূর্বক আমার ছেলে কবিরকেও আটক করেন। এবং আমার জরিমানা বাবদ তার কাছ থেকে ফাঁকা স্টাম্পে টিপ স্বাক্ষর রেখে দেন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইউসুব সিকদার জানান, স্থানীয় ঘাটের আড়ৎ মালিক ও জেলেদের সিদ্ধান্ত মতে তাকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। টাকা পরিশোধ শর্তে তার ছেলের কাছ থেকে একটি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। মারধরের বিষয়টি সঠিক নয়।


আরও খবর



ছলিমপুর গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থে সাঁকো নির্মাণ কাজ শুরু

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

Image

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থে কাঠের সাঁকো নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি উপজেলার মঠবাড়ী ও ত্রিশাল সদর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ নিরূপায় হয়ে নিজ অর্থ ব্যয়ে উপজেলার আম্লিতলা নামক স্থানে নাগেশ্বরী নদীর উপর এ সাঁকোটির নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপজেলার এই দুই ইউনিয়ন এবং উপজেলা সদরের সাথে কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগ সহজতর হবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সেতুটির ৬০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সেতুটির মূল কাঠামোর কাজ শেষ হলেও উপরের কাঠের পাটাতন বসানো এবং ত্রিশাল উপজেলার ছলিমপুর অংশের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাটের কাজ অর্থাভাবে আটকে রয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামবাসী। কাজ শেষ না হওয়ায় এই সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরাসহ আশেপাশের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী ইজারাবন্দ, জয়দা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলবাড়িয়ার ধুরধুরিয়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আম্লিতলার বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে উপজেলা সদর ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াত করত এবং ভারী বস্তু ও পণ্য পরিবহনে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে সেগুলো আনা-নেওয়া করত। এ এলাকার কয়েক হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি পাঁকা ব্রিজ নির্মাণের। সেটি এখনো বাস্তবায়িত না হওয়ায় প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে তাঁরা একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এলাকার লোকজন সাধ্যানোযায়ী ধান, চাল, বাঁশসহ নগদ অর্থকড়ি ও শ্রম দিয়ে এ কাজে অংশগ্রহণ করছেন। সেতুটির কাজ শেষ হলে এ এলাকার হাজারো মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা লাগব হবে। তখন সেতুটি দিয়ে তিন চাকার ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

অলহরী ইজারাবন্দ গ্রামের স্কুল শিক্ষক হাসান বিএসসি বলেন, সাঁকোটি নির্মাণ হলে আমাদের আশেপাশের কয়েক গ্রামের বাসিন্দার চলাচল সহজ হবে। এলাকার সকলের সহায়তায় কাজ শুরু হয়েছে। তবে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণ এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।

ছলিমপুর দাখিল মাদ্রাসা ও ছলিমপুর আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বপ্না আক্তার, বীথী আক্তার, পারভেজ মিয়া, রতন মিয়া সহ আরও জনাদশেক বলেন, সেতুটি পাড় হলেই নদীর পাড়ের আম্লিতলায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সেতুটি পাড় হয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের পড়াশোনা করতে আসতে হয়। অন্য প্রতিষ্ঠান কয়েক কিলোমিটার দূরে হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। বর্তমানে আমাদের এপার-ওপারের লোকজন মিলে  সেতুটি পুননির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। টাকার অভাবে এখন কাজ বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই সরকার আমাদের এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করে দিক।

ছলিমপুর আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোন এলাকার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম না হলে ওই এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয় না। নদীর ওই পাড়ের লোকজন একটি ব্রিজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। ওই পাড়ের অনেক ছাত্রছাত্রী আমার স্কুলে পড়াশোনা করে। ভাঙাচোরা সাঁকোটি পার হতে তাদের অনেক বিড়ম্বনা পোহাতে হতো। পানি বেশি হলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আসার ভয়ে নিয়মিত স্কুলমুখী হতে পারতনা শিক্ষার্থীরা। এখানে একটি পাকা সেতু হলে সবার জন্য ভালো হয়।'

স্থানীয় আক্কাছ আলী মাস্টার মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক খবিরুজ্জামান বলেন, এপার-ওপারের তিনগ্রামের সমন্বয়ে একটি ঈদগাহ মাঠ, একটি মসজিদ, একটি দাখিল মাদ্রাসা, একটি হাইস্কুল, একটি কিন্ডারগার্টেন ও একটি বাজার রয়েছে এখানে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে এপার-ওপারের মানুষের আসা-যাওয়ার জন্য। সম্প্রতি একজন মহিলা তার সন্তানসহ সাঁকো পাড়ি দিতে গিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। তারই প্রেক্ষিতে ঝুঁকিমুক্ত নদী পারাপারের জন্য স্থানীয়ভাবেই এই কাঠের ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসাইন বলেন, নদীর দু'পাড়ের মানুষের জন্য সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেতুটির নির্মাণ কাজে আমিও ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করেছি। পরিষদের পক্ষ থেকে সেতুটির ত্রিশাল অংশের সংযোগ সড়কে মাটি ফেলার কাজ দ্রুতই শুরু করবো ইনশাআল্লাহ।


আরও খবর



গাজীপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, নিহত ২

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুর মহানগরীর বাইমাইল ব্রিজের উপর সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১০ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- কোনাবাড়ী এশরারনগর এলাকার মারফত আলীর ছেলে মঞ্জুর সরকার (৩৮) ও মহানগরীর হরিনচালা এলাকার এহসান হাসান (৪২)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আব্দুল হামিদ (৪৫)।

কোনাবাড়ী মেট্রো থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কাভার্ডভ্যান চালক পালিয়ে গেছেন।

পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেল আরোহী ওই তিনজন গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। তারা ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইমাইল ব্রিজের উপর পৌঁছালে পিছন থেকে অজ্ঞাতনামা কাভার্ডভ্যান মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মনজুর সরকার ও এহসান হাসান মারা যান।

আব্দুল হামিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।


আরও খবর



বিশ্ববাজারে বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম সামান্য বেড়েছে। এর আগে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও পরে আবার কিছুটা কমেও যায়।

শুক্রবার সকালের দিকে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৪ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৮৯ দশমিক ৩৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ৩৩ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ৮৩ দশমিক ৯০ ডলার হয়েছে। খবর রয়টার্সর।

এদিকে, তেলের এ মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পূর্বাভাসের চেয়ে মার্কিন অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির ট্রেজারি সেক্রেটারি।

ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন রয়টার্সকে বলেন, মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী অবস্থানের রয়েছে।

এর আগে, ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে তেলের দাম বেড়েছিল। কিন্তু দেশ দুইটির মধ্যে সংঘাত না বাড়ায় তেলের দাম কিছুটা কমে যায়। যদিও এখন আবার তা বাড়তে শুরু করেছে।

শেষ প্রান্তিকে এক দশমিক ছয় শতাংশ মার্কিন জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে বাণিজ্য বিভাগের এক প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি অনেক ভালো করছে।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর