টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ।
বোলারদের পর ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১০৪ রানে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল।
আজ বৃহস্পতিবার
সিডনিতে সুপার টুয়েলভের গ্রুপ টুতে খেলতে নামে দুদল। বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় ম্যাচটি
শুরু হয়। যেখানে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা রাইলে রুশোর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে
নির্ধারতি ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে। দ্বিতীয় উইকেটে
কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে রেকর্ড জুটিও গড়েছেন রুশো। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে
১০১ রানে থামে বাংলাদেশ।
২০৬ রানের লক্ষ্যে
ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ২৬ তুললেও তৃতীয় ওভারে আনরিখ নকিয়ার বলে দুই ওপেনার
সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত বিদায় নেন। প্রথম বলে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কককে
ক্যাচ দেন ৬ বলে ২টি ছক্কায় ১৫ রান করা সৌম্য। এরপর চতুর্থ বলে ৯ রান করা শান্তকে বোল্ড
হন। নরকিয়া নিজের পরের ওভারে সাকিব আল হাসানকে এলবি করে ফেরান।
দিশেহারা ব্যাটিংয়ে
নিয়মিতর বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদার বলে আফিফ হোসেন আউট হওয়ার
পর মেহেদী হাসান মিরাজকে ফেরান তাবরেজ শামসি। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন স্টাম্পিং হন। শামসির
দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়ের নুরুল হাসান সোহান। শামসি এরপর লিটন দাসকেও তুলে নেন।
বাংলাদেশ দলের হয়ে লিটন সর্বোচ্চ ৩১ বলে একটি চার ও ছক্কায় ৩৪ করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকান
বোলারদের মধ্যে আনরিখ নরকিয়া ৪টি ও তাবরেজ শামসি ৩টি উইকেট তুলে নেন।
টস জিতে এর
আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে হোঁচট খেলেও এরপর ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার। এদিন
বোলিংয়ে শুরুটা দারুণ করে বাংলাদেশ। শুরুতেই প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানে। বাংলাদেশকে
প্রথম সাফল্য এনে দেন তাসকিন। প্রথম ওভারের শেষ বলে তিনি দুর্দান্ত সুইংয়ে পরাস্ত করেছেন
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে। বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষকের
নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাভুমা (২)।
ইনিংসের ৫.৩
ওভারে বৃষ্টি হানা দেয়। এ কারণে খেলা বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। তবে এরপর বাংলাদেশকে
হতাশা উপহার দিয়ে তাণ্ডব চালান রাইলে রুশো ও কুইন্টন ডি কক। রুশোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট
জুটিতে ৮৫ বলে ১৬৩ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ গড়ে বিদায় নেন ডি কক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে
যে কোনো দলের যে কোনো উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। দক্ষিণ আফ্রিকার যে কোনো উইকেটে
তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি।
অবশেষে এই জুটি
ভাঙেন পার্টটাইম বোলার আফিফ হোসেন। ১৫তম ওভারে আফিফ হোসেনের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট
হন ডি কক। তিনি ৩৮ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৩ করেন। এরপর নতুন ব্যাটার ট্রিস্টান
স্টাবস সাকিব আল হাসানের বলে দ্রুত ফিরে যান।
তবে প্রোটিয়া
ব্যাটার রাইলে রুশোর হাত ধরে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া গেল। তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র
৫২ বলে শতকের দেখা পান বাঁহাতি এই তারকা। এ সময় তিনি ৭টি চার ও সমান ছক্কা হাঁকান।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এ মাসের শুরুতেই ভারতের বিপক্ষে
প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
বিশ্বকাপে কোনো
দক্ষিণ আফ্রিকানের এটি প্রথম সেঞ্চুরি। ডেভিড মিলারের পর দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান ও
সব মিলিয়ে ১৭তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একাধিক সেঞ্চুরি পেলেন
রুশো। ভারতের বিপক্ষে ইন্দোরে পেয়েছিলেন প্রথম সেঞ্চুরিটি। সে হিসেবে টানা দুটি আন্তর্জাতিক
টি-টোয়েন্টি ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন এ বাঁহাতি। সবচেয়ে বেশি ৪টি সেঞ্চুরি রোহিত শর্মার।
৩টি করে সেঞ্চুরি আছে তিন জনের—সাবাউন দাভিজি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও কলিন মানরোর।
অবশেষে ১৯তম
ওভারে এসে সাকিবের বলে আউট হন রুশো। তুলে মারলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত
হন। শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে ৭টি চার ও ৮ ছক্কায় ১০৯ রানে মাঠ ছাড়েন। অপর ব্যাটার এইডেন
মার্করামকে ১০ রানে ফেরান হাসান মাহমুদ।
বাংলাদেশ বোলারদের
মধ্যে সাকিব ২টি উইকেট পান। একটি করে উইকেট দখলন করেন তাসকিন আসহেম, হাসান ও আফিফ।