সর্বজনীন পেনশনের
‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে এবার
পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার (৩০ জুন)
সকাল থেকেই এ কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে আজ সারাদিন জরুরি কাজ
ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে।
সকাল ১০টা থেকেই
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মবিরতির সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের
সামনে অবস্থান নিতে থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দপ্তরের
সামনে মিছিল করেন তারা। পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ
মিছিল নিয়ে অপরাজেয় বাংলার সামনে আসেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা অবস্থান, বিক্ষোভ ও
প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এরপরও দাবি না মানা হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে
বাধ্য হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরি
কর্মচারী সমিতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ প্রতিবাদ সমাবেশ
ও বিক্ষোভ আয়োজন করে।
অবস্থানের সময়
কর্মকর্তা-কর্মাচারীদের হাতে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই
নাই’, ‘বৈষম্যের প্রজ্ঞাপন
বাতিল করো করতে হবে’, ‘সর্বজনীন পেনশন,
মানি না মানবো না’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়,
প্রত্যয়ের ঠাঁই নাই’, ইত্যাদি লেখা
সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। পাশাপাশি তারা একই কথাগুলো উল্লেখ করে স্লোগানও দিতে
থাকেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত বৈষম্যমূলক
প্রজ্ঞাপন সব শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তা সবকিছুকে বাজে পরিস্থিতির
দিকে নিয়ে যাবে। এমন একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে তা কেবল আমাদের যৌক্তিক দাবি
তথা প্রত্যয় স্কিম বাতিলের মধ্য দিয়েই নিরসন সম্ভব। এই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার হবেন।
একই বেতন স্কেলের আওতাধীন কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও
সাংঘর্ষিক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রত্যয় স্কিম
বাতিল করতে হবে। অন্যথায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও কঠোর আন্দোলন
গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
অবস্থান কর্মসূচি
ও বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও অফিসার্স
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল মোত্তালিব, ঢাবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত
সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ,
সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন, কারিগরি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন,
সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল আলম বাদল, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহজাহান
এবং সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়াসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা
বক্তব্য দেন।