প্রত্যাশা অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করছে না সরকারি বিভিন্ন
দপ্তর। এমন অভিযোগ করেছেন সংস্থার চেয়ারম্যান মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ। রাষ্ট্রপতির কাছে
দুই বছরের প্রতিবেদন পেশের পর ব্রিফিংয়ে একথা বলেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আইন অনুযায়ী দুর্নীতি বন্ধে কাজ করছেন তারা। প্রতিবেদনে
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ, সাবরেজিস্ট্রি অফিস এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির ৩২টি উৎস চিহ্নিত করা হয়।
সরকারি সেবার জন্য ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা রোধে দপ্তরগুলোকে আধুনিকায়নসহ
৩৯ দফা সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই বছরে ১ হাজার ৩৫৫টি অভিযোগ অনুসন্ধানের
জন্য গ্রহণ ও ৬৯৫টি মামলা করেছে। একইসঙ্গে ১৪ কোটি টাকা জরিমানা ও ৫০৬ কোটি টাকার সম্পদ
জব্দ করা হয়।
বিচারিক আদালতে সাফল্যের বিষয়ে তিনি জানান, ২০২১ সালে মোট ৩ হাজার ৪৩৪টি মামলার
মধ্যে ২০৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে, যার মধ্যে দুদকের পক্ষে রায় হয়েছে ১১৯টিতে। কমিশনের
মামলায় সাজার হার ৬০ শতাংশ, বিলুপ্ত ব্যুরো আমলের মামলায় সাজার হার ৩০ শতাংশ। এই বছরে
সাজার গড় হার শতকরা ৫৮ দশমিক ৬২ শতাংশ।
এর আগের বছর ২০২০ সালে নিম্ন আদালতে দুদক ও বিলুপ্ত ব্যুরোর মোট বিচারাধীন ৩
হাজার ৩৮২টি মামলার মধ্যে ১৭৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে কমিশনের পক্ষে রায়
হয়েছে ১২১টিতে। এই হিসাব অনুযায়ি কমিশনের মামলায় সাজার হার ৭২ শতাংশ ও বিলুপ্ত ব্যুরোর
মামলায় সাজার হার ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ সাজার গড় হার শতকরা ৬৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
কমিশনের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট ২০১৯ সাল থেকে সাংগঠনিক কাঠামোতে যুক্ত হয়ে কাজ
করছে। কোভিড-২০১৯ এর কারণে পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় অভিযান পরিচালনা কম হলেও এ ইউনিটের
মাধ্যমে ২০২০ সালে ৪৮৭টি এবং ২০২১ সালে ২৪৫টি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে দুদক গোয়েন্দা ইউনিট কমিশনের সাংগঠনিক কাঠামোতে যুক্ত হয়েছে।
২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত মোট ৬৬৫টি অভিযোগ গোপনে তথ্যানুসন্ধান জন্য গৃহীত হয়,
যার মধ্যে ২৫০টির নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ৪১৫টি অভিযোগের গোপন তথ্যানুসন্ধান চলমান রয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানের পর গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে কমিশন চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে
১৫৪টি অভিযোগ প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
কমিশনের দৈনিক ও সাম্প্রতিক সেল (যাচাই-বাছাই কমিটি) ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৪৮৯টি
অভিযোগ বাছাই করে ৮২২টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করেছে। ২ হাজার ৪৬৯টি অভিযোগ
ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে
সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
২০২১ সালে ১৪ হাজার ৭৮৯টি অভিযোগ হতে ৫৩৩টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ এবং ২ হাজার
৮৮৯টি অভিযোগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।