ইমরান খানের মিত্র এবং জোটের প্রধান অংশীদার মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) তার বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন তিনি। এনডিটিভি জানায়, পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এক টুইট বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সেই বার্তায় পাকিস্তানকে অভিনন্দন জানিয়ে
তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ বিরোধী দল ও এমকিউএম একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
রাবতা কমিটি এমকিউএম ও পিপিপি সিইসি ওই চুক্তিতে অনুমোদন দেবেন। এরপর আমরা আগামীকাল
আইএ সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিতভাবে গণমাধ্যমের কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরবো।’
এদিকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব
বা অনাস্থা ভোটের আগে গভীর রাতেই তার প্রধান মিত্র জোটের পালাবদলে পাকিস্তানের সংসদের
নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন তিনি। যার কারণে ৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় অনাস্থা ভোটে
ইমরানের জেতা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্ষমতাসীন জোটের অংশীদার এমকিউএম-পি পিপিপির
সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্য দাঁড়িয়েছে ১৭৭, আর ইমরানের সদস্য সংখ্যা
কমে হয়েছে ১৬৪। যে কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের মোট সংসদ সদস্য ৩৪২ জন, যেখানে
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সফল করতে হলে পাকিস্তানের বিরোধী দলের ১৭২
জন সংসদ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। সরকার গঠনের সময় ইমরানের পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের
সদস্য ছিলো ১৭৯ জন যা কমে হয়েছে ১৬৪ জন।
কিছু লোক বিদেশী তহবিলের সহায়তায় সরকারকে
পতনের চেষ্টা করছে বলে ইমরান খানের অভিযোগের পরে ফেডারেল মন্ত্রী আসাদ উমর দাবি করেন,
প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বন্দিয়ালকে এর প্রমাণস্বরূপ
একটি চিঠি দেখাতে প্রস্তুত।
এরই মধ্যে ইমরান খান ইসলামাবাদে আয়োজিত
গণ সমাবেশে বলেছিলেন, ‘বিদেশী অর্থের মাধ্যমে পাকিস্তানে সরকার
পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের লোকদের ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশিরভাগই অসাবধানতাবশত,
কিন্তু কিছু লোক আমাদের বিরুদ্ধে অর্থ ব্যবহার করছে। আমরা জানি কোন জায়গা থেকে তারা
আমাদের উপর চাপ তৈরির চেষ্টা করছে। আমাদের লিখিত হুমকি দেয়া হয়েছে কিন্তু আমরা জাতীয়
স্বার্থে আমরা কখনো আপোষ করবো না।’
এমকিউএমপি এর বিরোধী দলকে সমর্থন করার
সিদ্ধান্তটি এসেছিলো উভয় পক্ষের প্রশাসক করাচি মুর্তজা ওয়াহাবের তৈরি একটি খসড়া
সাক্ষর করার পরে। পাকিস্তানের জিও টিভি জানায়, সাক্ষরকারীদের মধ্যে জাতীয় পরিষদের
বিরোধী দলের নেতা শাহবাজ শরীফ, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) প্রধান মাওলানা
ফজলুর রহমান এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারিও অন্তর্ভুক্ত
রয়েছেন।
এমকিউএম-পি নেতা ফয়সাল সুবজওয়ারী এমকিউএম-পি
বিরোধীদের পাশে থাকার বিষয়টি একটি টুইট বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করে বলেন, ‘যৌথ বিরোধী দল
এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে।’
আরেকটি পৃথক বিবৃতিতে এমকিউএম-পি’র মুখপাত্র নিশ্চিত
করেন, পার্টির রাবতা কমিটি তাদের বাহাদুরাবাদ অফিসে আজ স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় চুক্তির
খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।