ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি
এতটাই ভয়াবহ যে প্রতি ১০ মিনিটে সেখানে একটি শিশুরু মৃত্যু হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য
সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এ দাবি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে সংস্থাটি
জানিয়েছে, দিন দিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সেখানে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে
নিরীহ মানুষ। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ফিলিস্তিনি শাখার আঞ্চলিক
পরিচালক জেসন লি বলেছেন, গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন শিশু নিহত হচ্ছে। জেরুজালেম থেকে
বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, সেখানে আহত ২০ হাজার বেসামরিক
নাগরিকের তিনজনের মধ্যে একজনই শিশু।
জনাকীর্ণ পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্যবিধির
অভাবে সেখানে সংক্রামক রোগ বাড়ছে বলেও জানান তিনি। জেসন লি বলেন, সেখানে ইনফ্লুয়েঞ্জা
ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার মতে, গাজায় যে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো
হয়েছে তা সাগরের মধ্যে এক ফোঁটা পানি ফেলার মতো। সেখানে আরও বেশি খাবার, চিকিৎসা সরঞ্জাম
এবং জ্বালানির প্রয়োজন।
প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে
হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে গাজায় যে পরিস্থিতি চলছে তা
বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের যে কোনো পরিস্থিতির চেয়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
এর আগে সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছিল, ২০১৯
সালের পর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতের কারণে বছরে যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে; গত তিন
সপ্তাহে গাজায় তার চেয়ে বেশি শিশু নিহত হয়েছে।
এর আগে গত রোববার (৩০ অক্টোবর) ফিলিস্তিনি
কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শিশু বিষয়ক এই এনজিও একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে জানানো
হয়, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় ৩ হাজার ৩২৪ জন শিশুর
মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমতীরে মারা গেছে আরও ৩৬ শিশু।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী,
২০২২ সালে ২৪টি দেশে মোট ২ হাজার ৯৮৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল
২ হাজার ৫১৫ এবং ২০২০ সালে ২২টি দেশে ২ হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায়
স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। হামাসের
হামলায় ইসরাইলে ১৪০০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২২৯ জনকে জিম্মি করা হয়েছে বলে দাবি করা
হয়।