সাভারে বেশকিছু এলাকায় কয়েক বছর ধরে গ্যাস
না থাকলেও গ্রাহকরা গুনছেন বিল, বারবার অভিযোগ করেও সমাধান না পাওয়ায় সাভার তিতাস
অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ক্ষিপ্ত গ্রাহকরা। রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাভার আঞ্চলিক কার্যালয়
ঘেরাও করে সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ছয় থেকে সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা। এ
সময় খবর পেয়ে সাভার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এসময় বিক্ষোভকারী আব্দুল বারেক ও রেজাউল
মাস্টার জানান, গ্যাসের বৈধ লাইন থাকা সত্ত্বেও গ্যাস থাকছে না লাইনে, রাত বারোটার
পরে গ্যাস আসলেও ভোর চারটার আগেই সে গ্যাস বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে চলছে প্রায় চার থেকে
পাঁচ বছর। বারবার অভিযোগ করলে তিতাস কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে আসছেন বারংবার। ৪-৫ বছর
ধরে বিল পরিশোধ করে আসছি আমরা, কিন্তু সুবিধা ভোগ করতে পারছি না। এতে আমাদের আর্থিক
সমস্যার পাশাপাশি পারিবারিক সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে।
উপায় না পেয়ে এলাকাবাসী সবাই মিলে তিতাস গ্যাস অফিস ঘেরাও করেছি।
জানা যায়, সাভারের তেতুলঝরা ইউনিয়ন,
ধামসোনা ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকশো গ্রামের একই অবস্থা। রাত বারোটার
পর থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত গ্যাস থাকলেও সারাদিনে থাকছে না গ্যাস। এতে এই এলাকার বাসা-বাড়ি
ভাড়া না হওয়া, সময়মতো রান্নাবান্না না করতে পারা, বাচ্চাদের সময়মত স্কুলে পৌঁছাতে
না পারাসহ পরিবারের নিয়মিত কাজগুলোতে ব্যাঘাত ঘটছে।
আরও পড়ুন>> আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন
যেহেতু অনুমোদিত লাইন তাই নিয়মিত গুনতে
হচ্ছে মোটা অংকের বিল, অন্যদিকে রান্নাবান্নার জন্য কিনতে হচ্ছে গ্যাসের সিলিন্ডার।
বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাচ্ছে না। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ সমস্ত এলাকার
মানুষ।
তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকার
পানপাড়া, নয়াপাড়া, দত্তপাড়া, ভাওয়ালিয়া, কুটিবাড়ি, মাঝিপাড়া, কৃষ্ণনগর গ্রাম ও ধামসোনা
ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গাজীরচট, শেরাআলী মার্কেট, আয়নাল মার্কেট, হক মার্কেট,
শিকদারবাগ, মৌসুমী মার্কেট, রশিদ মার্কেট এলাকার লক্ষাধিক বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বিরতিহীনভাবে
গ্যাস সরবরাহ না থাকায় একই অবস্থায় জীবনমান চরম বিপর্যস্ত হয়েছে।
ভুক্তভোগী আলম মিয়া, মাসুদ রানা মিন্টু
আক্তার হোসেনসহ শতাধিক বিক্ষোভকারী জানায়, সংকটের স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় তিতাস গ্যাস
অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে বাধ্য হয়েছি। সাতদিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক
না হলে তারা আবারও তিতাস গ্যাস অফিস ঘেরাওসহ আরো কঠোর কর্মসূচি ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
দেন।
প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী
অজিত চন্দ্র দেব বলেন, আবাসিক এলাকার জন্য কিছু ভিন্ন ধরনের পাইপলাইন করা হয়েছিল,
এতে ২ পাউন্ড গ্যাস সাপ্লাইয়ের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় চাপ এর থেকেও
কমে যাওয়ায় এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে একেবারেই যে পাচ্ছেন না তা না, অল্প
সময়ের জন্য হলেও তারা গ্যাস পাচ্ছেন। এছাড়াও আমি উপর মহলে বিষয়টি জানাবো এবং আজকে
থেকে আমিও দেখবো কেন গ্যাস পাচ্ছেন না, কোথায় কোথায় সমস্যা আছে।
এসময় বিক্ষোভকারীদের কাছে তিনি সাতদিনের
সময় চান এ সমস্যার সমাধানের জন্য। সাত দিনের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হলে
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।