আজঃ বুধবার ০১ মে ২০২৪
শিরোনাম

হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পায়তারা করছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’

প্রকাশিত:রবিবার ২২ আগস্ট ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ২২ আগস্ট ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image
হিন্দু আইনের কোন ধরনের সংস্কার, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা পরিমার্জন করা হবে না, হিন্দু আইনে কোন ধরনের হাত দেওয়া হবেনা মর্মে আগামী ৩০ আগষ্টের মধ্যে সরকারকে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে

হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার বছরের ঐক্য এবং ঐতিহ্যকে বিলীন করার অপচেষ্টা নিয়ে হিন্দুদের ঘরে ঘরে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। এর কর্ণধার শাহীন আনাম এবং তার স্বামী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের নেতৃত্বে এ চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। রবিবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা এসব কথা বলেন। হিন্দু ধর্মীয় আইন পরিবর্তন প্রচেষ্টার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।

হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা সুসংহত হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে অশান্তির বীজ বপন করছে। ১০ হাজার বছরের পুরনো এই হিন্দু পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে চক্রটি। তাদের দুরভিসন্ধি হাসিলে হিন্দু আইন সংস্কারের জন্য আইন কমিশনে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে। যার নেতৃত্বে আছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহীন আনাম ও তাঁর স্বামী মাহফুজ আনাম সিন্ডিকেট।

তাঁরা বলেন, আইন পরিবর্তনের নামে হিন্দু মা-বোনদের বলির পাঁঠা বানাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এর নেতৃত্বে রয়েছেন মাহফুজ আনাম, শাহীন আনাম এবং বাঁচতে শেখার পরিচালক এঞ্জেলা গোমেজ। তারা প্রতিনিয়ত হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আমরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনিও বলেছেন যেখানে হিন্দুরাই চায় না আইন পরিবর্তন হোক, সেখানে অন্যদের দাবির যৌক্তিকতা নেই।

নেতারা আরও বলেন, সম্পদ নিয়ে তারা সাধারণ মানুষকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তারা যে বলেন হিন্দু ধর্মে নারীদেরকে সম্পদ দেওয়া হয় না, এ কথা সত্য নয়। তাদের এসব কথা শুনে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। আমরা এসব বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানাই। তারা সরকার এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। মূলত হিন্দু আইনে সম্পত্তির নির্দিষ্ট কোনো মালিক নেই। পরিবারে যখন যিনি দায়িত্বে থাকবেন, তিনিই মালিক।  হিন্দু পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজন করে ব্যক্তি কেন্দ্রীক সম্পত্তি বন্টন, বিবাহ বিচ্ছেদ, হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক ও শাস্তির বিধান, দত্তক, ভরন পোষনসহ বিভিন্ন বিষয়ে হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রীয় পবিত্র বিধি-বিধান পরিবর্তনের চক্রান্ত করছে। আর এটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভেদ ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে হিন্দু সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহীন আনাম ও বাঁচতে শেখার পরিচালক এঞ্জেলা গোমেজের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে সভা-সেমিনার করে হিন্দু বিধিবিধান সম্পর্কে মিথ্যা ও বিদ্বেষমুলক তথ্য প্রচার করছে। সারাদেশের হিন্দু সমাজের মধ্যে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামী বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে হিন্দু আইন নিয়ে বড় চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত সুদূরপ্রসারী। শোকের মাসে আমাদেরকে হিন্দু আইন নিয়ে প্রতিবাদী বক্তব্য দিতে হবে আমরা প্রত্যাশা করিনি। হিন্দু আইন নিয়ে কেউ কেউ পাঁয়তারা করছে। যারা এই আইনের সংস্কার চলছে তাদের মতলব কি সেটি আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এই আইনটির পরিবর্তন সরকারও চাচ্ছে না। অথচ কতিপয় এনজিও চাচ্ছে তাদের প্রয়োজনে।

তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের আরও সোচ্চার এবং ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা এই বিষয়গুলো জানাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চাই। আমাদের বিশ্বাস, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের সুরক্ষার দায়িত্ব তার। সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্যে আমাদের এই জাগরণ সীমাবদ্ধ নয়, হিন্দু সংগঠনগুলোর সমস্ত নেতৃত্বকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করব। মাহফুজ আনামদের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবো।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট লাকী বাছাড় বলেন, শাহীন আনামসহ এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুদের আইন পরিবর্তনের নামে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। হিন্দু মা-বোনেরা চায় না এ আইন পরিবর্তন হোক। যেখানে আমরাই চাই না, সেখানে তাদের কেন এত মাথাব্যাথা। এটি মূলত হিন্দুদের ঘরে ঘরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র। মাহফুজ আনাম, শাহীন আনাম, গোমেজের নেতৃত্বে চক্রটি ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে।

বিস্ময় প্রকাশ করে লাকী বাছাড় বলেন, আমাদের আইন পরিবর্তন করা হবে, অথচ আমরাই জানি না। তাহলে কার স্বার্থে এই চক্রান্ত। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বিদেশ থেকে তহবিল এনে এই ষড়যন্ত্র করছে। অথচ তারা চাইলে অসহায় মানুষের সেবা করতে পারে। তা না করে তারা আমাদের মা-বোনদের বলির পাঁঠা বানাচ্ছে। আসলে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান নেই।

হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ইংরেজি মাহফুজ আনাম এবং শাহীন আনাম হিন্দু ধর্ম আইনের সংস্কার চেয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছেন সেটি সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক কয়েকটি এনজিও। তারা কেন এ আইনের সংস্কার চায় নিজেরাও বোঝে না। হিন্দু আইন সংস্কার যাদের জন্য প্রয়োজন তারা এ ব্যাপারে কোনো দাবি তোলেনি। শাহীন আনাম না বুঝে হিন্দু আইনের বিরুদ্ধে যেসব অনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন, অর্থ ব্যয় করছেন এসব অর্থের উৎস কোথায়, তাও বেরিয়ে আসা উচিত।

তিনি আরও বলেন, সনাতন আইনের কোনো সংস্কার অথবা পরিবর্তন প্রয়োজন নেই। আজকে যারা এই আইনের সংস্কার চায় তারা হিন্দু ধর্মকে অবমাননা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সোচ্চার হতে হবে। হিন্দু ধর্মকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য তারা এই পাঁয়তারা করছেন। তাদের আচরণে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত ব্যথিত। শাহীন আনাম এনজিওর এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাহফুজ আনাম সম্পাদিত ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারকে কাজে লাগিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

প্রণব মঠ ঢাকার অধ্যক্ষ স্বামী সঙ্গীতানন্দ মহারাজ বলেন, আইন সংস্কারের নামে মন্দির ভেঙে ও  হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানোর ষড়যন্ত্রে নেমেছেন মাহফুজ আনাম ও শাহীন আনাম। এর মাধ্যমে তারা হিন্দুদের নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান। মাহফুজ আনামরা সরকার ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ফাটল ধরাতে তৎপর। তারা চায় হিন্দু সম্প্রদায়কে সরকারের প্রতিপক্ষ বানাতে। এজন্য তারা আইন সংস্কারের নামে চক্রান্তে নেমেছে। কিন্তু বাস্তবতা হল হাজার বছর ধরে নিজস্ব নিয়মে চলে আসা সনাতন ধর্মে অন্য ধর্মের কেউ হাত দেওয়ার অধিকার নেই।

তিনি বলেন, প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের সনাতন ধর্মে হাত দেওয়ার অধিকার মাহফুজ আনামের নেই। মাহফুজ আনামরা আমাদের ধর্মে নারীর অধিকারের কথা বললেও বাস্তবতা হল এ ধর্মে কারো অধিকার কখনো খর্ব হয়নি। তারা সনাতন ধর্মের আইনের অপব্যাখ্যা করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। এদেশে মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সু-সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। এটা তাদের সহ্য হচ্ছে না। তাই মাহফুজ আনামরা চক্রান্তে নেমেছেন সে সম্পর্কে যাতে নষ্ট হয়ে যায়।

ইসকনের ফুড ফর লাইফ-এর পরিচালক রুপানুগ গৌরদাস ব্রহ্মচারী বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভালো আছে। আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। হিন্দুরা ভালো আছি। আমাদের হিন্দু পরিবারগুলোতে ভাই-বোনের সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ়। এদের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। কোনো আক্ষেপ নেই। ফলে হিন্দু আইন পরিবর্তনের নামে মাহফুজ আনামরা যে ষড়যন্ত্রে মেতেছেন, তা সুস্পষ্ট। আমরা হিন্দু আইন সংস্কারের অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

মাহফুজ আনামকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মান্ধ করার জন্য নানা সময়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। আজকে যে হিন্দু আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেটা তারই একটি প্রক্রিয়া। হিন্দু আইন নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী মাহফুজ আনাম ও তার স্ত্রী শাহীন আনাম যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা প্রত্যাহার না করলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মা-বোনেরা ঝাড়ু হাতে নিয়ে ডেইলি স্টার অফিস ঘেরাও করবে। অবিলম্বে হিন্দু আইন সংশোধনের প্রস্তাব প্রত্যাহার না হলে জোরদার আন্দোলন শুরু হবে।

বৈদিক কৃষ্টি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার প্রধান আচার্য রবীন্দ্রনাথ দেবনাথ প্রশ্ন করে বলেন, যারা হিন্দু আইন পরিবর্তন করতে চান তারা কারা। শাহীন আনাম ও মাহফুজ আনাম গংরা আমাদের ধর্ম সংস্কার করতে চেয়ে প্রকারান্তরে সংবিধান লংঘন করেছেন। এটি অত্যন্ত  গুরুতর অপরাধ। সংবিধান লংঘন ক্ষমার অযোগ্য। সুতরাং তাদেরকে কোনভাবেই ক্ষমা করা যাবে না। আমরা মাহফুজ আনামদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা হিন্দু আইন পরিবর্তন করতে চান, তারা কেন আইন পরিবর্তন করতে চান? তারা কি আমাদেরকে বাঁচাতে চান না কি আমাদেরকে মেরে ফেলতে চান? আসলে হাজার বছরের সনাতন ধর্ম সংস্কার করে তারা আমাদেরকে মেরে ফেলতে চায়। মূলত আমাদের ধর্ম সংস্কারের মাধ্যমে তারা হিন্দু পরিবারের শান্তি ও দায়ভার বিলুপ্ত করে বিশৃঙ্খলা করতে চাচ্ছেন।

হিন্দু মহাজোটের বরিষ্ট সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল বলেন, মাহফুজ আনাম কে আপনারা জানেন। এক এগারোর সময় হাসিনা বাদ খালেদা বাদ, তারা নিজেরা কর্তৃত্ব করতে চান। মতিউর রহমান, মাহফুজ আনাম সব সময় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছেন। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। এরা হিন্দুধর্ম ধ্বংস করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।

বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদের সভাপতি কর্নেল (অব.) নিরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, হিন্দুধর্মে মত-পথ রয়েছে, তবে বেদ সার্বভৌম। এর সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। একতাকে ধ্বংস করবো না। অন্যায়ভাবেভাবে প্রচার করা হয় হিন্দুরা দ্বিধাবিভক্ত। না, আমরা একতাবদ্ধ। আমাদের মধ্যে কোনো অনৈক্য নেই। গুটিকয়েক এনজিও হিন্দু ধর্ম নিয়ে চক্রান্ত করছে। ওইসব এনজিও কর্মীর বিচার চাই। কোনভাবেই আইন পরিবর্তনযোগ্য নয়। আমরা বিব্রত, সরকারকে বিব্রত করছে, স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তীতে আনন্দ করার কথা, সেখানে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে তাদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী প্রতিভা বাগচী। তিনি বলেন, আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব তোলার মধ্য দিয়ে মূলত চক্রটি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়কে ক্ষেপিয়ে তোলার গোপন মিশনে মেতেছে। শাহীন আনাম সিন্ডিকেটের এই অপতৎপরতার কারণে সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায় মনে করছে এই সরকার আমাদের ধর্মীয় বিধিবিধান ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। ফলে সরকারের প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস শুধু নষ্ট হচ্ছে না, বিদ্বেষও ছড়িয়ে পড়ছে। এইভাবে শাহীন আনামগং কৌশলে হিন্দু সম্প্রদায়কে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার নীলনকশা বাস্তবায়নের পাঁয়তারা করছে। তারা আওয়ামী লীগ সরকার ও হিন্দু সম্প্রদায়কে মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ডেইলি স্টারে কল্পকাহিনী ছাপিয়ে মাহফুজ আনাম হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। দেশে অনেক ইস্যু থাকলেও হাজার বছর আগের মীমাংসিত ইস্যুকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। হিন্দু আইন সংস্কারের নামে বিভেদ সৃষ্টির কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু মানুষ এখন আর এতো বোকা নয়, অনেক সচেতন, তারা সহজেই চালাকি ধরে ফেলতে পারে। তারা দেশের বাইরে থেকে তহবিল এনে গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। চক্রটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তারা আসলে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। চক্রটির এসব হীন তৎপরতায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটসহ হিন্দু ধর্মালম্বীদের ২৩টি সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সারাদেশের প্রায় পৌনে দুই কোটি হিন্দু সমাজ চরম উদ্বিগ্ন।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শাহীন আনাম এর আগে ২০১৭-১৮ সালে তার এক কর্মচারীকে দিয়ে হিন্দু ধর্মে তালাক প্রথা চালু করার জন্য রিট দায়ের করেন। তখন কোর্ট বিষয়টি শুনানীযোগ্য নয় বলে খারিজ করে দেয়। হিন্দু বিবাহে বর ও বধুকে নানা বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করতে হয়। এই বৈদিক মন্ত্র হল পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থ ঋগেদ থেকে সংকলিত। বিবাহের মন্ত্রগুলি কোন পুরুষের রচিত নয়; মন্ত্রদ্রষ্টা নারী ঋষি সূর্যার নিকট আবিভূত হয়েছিল। আর বিয়ের সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি স্ত্রী আচার দিয়ে মহিমামন্ডিত। যে বিধান হাজার হাজার বছর ধরে এই নারী ঋষির তৈরী এই বিবাহ ব্যবস্থা অবিকৃতভাবে চলমান থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবার ব্যবস্থা উপহার দিয়ে চলেছে। এই মন্ত্র উচ্চারনের মধ্য দিয়ে দুটি হৃদয়, দুটি মন, দুটি শরীর একসূত্রে গ্রথিত হয়। হিন্দু নারী পুরুষের জীবনে আসে অর্ধাঙ্গীনি হিসাবে; তাকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। হিন্দু কুমারী যখন বিয়ের পিড়িতে বসে তখন রাজরাণীর মুকুট পড়ে বসে। রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার ফলে দুষ্ট মানুষেরা বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দিয়ে গোপনে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করে সহজ সরল নারীদের প্রতারিত করবে। হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্য নষ্ট হবে; ধর্মীয় বিশ্বাস নষ্ট হবে। অতএব তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ যে নামেই হোক না কেন কোনটাই হিন্দু সমাজ মেনে নেবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হিন্দু আইনে পিতা বা কোন পুরুষের সম্পত্তি নেই; সম্পত্তি পরিবারের। হিন্দু আইনে স্পষ্ট ভাবে তো আছেই, সংশয় নিরসনের জন্য উচ্চ আদালতের বহু ডিসিশন আছে। হিন্দু আইনে সকল সম্পত্তির একক মালিক যৌথ পরিবার। যৌথ এবং অবিভক্ত পরিবার হিন্দু সমাজের সাধারণ নীতি। সকল শ্রেনীর হিন্দু পরিবার সাধারণভাবে যৌথ। এটি শুধু সম্পত্তির ক্ষেত্রে নয়; বরং আহার এবং উপাসনার ক্ষেত্রেও।

অবিলম্বে এ প্রস্তাব থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে হিন্দু নেতারা চার দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো হিন্দু আইনের কোন ধরনের সংস্কার, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা পরিমার্জন করা হবে না, হিন্দু আইনে কোন ধরনের হাত দেওয়া হবেনা মর্মে আগামী ৩০ আগষ্টের মধ্যে সরকারকে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। অবিলম্বে শাহীন আনামসহ যে সকল এনজিও হিন্দু পরিবার, সমাজ ও ধর্ম বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা করে হিন্দু সমাজ ও পরিবারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। শাহীন আনাম গংদের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট শর্তহীন ক্ষমা চাইতে হবে। আগামী ৩০ আগষ্টের মধ্যে সরকার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হলে সারাদেশে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে। এতেও কাজ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, সনাতন ল’ ইয়ার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শঙ্কর দাস, বৈদিক সমাজ বাংলাদেশের স্বামী চিদানন্দ সরস্বতী, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন মিশ্র, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সরকার, শ্রীগুরু সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনঞ্জয় কৃষ্ণ দত্ত, ভক্ত সংঘের সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল, বাংলাদেশ মন্দির মিশনের সভাপতি সুশান্ত পাল, বাংলাদেশ হিন্দু ল ইয়ার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ন চন্দ্র দাস প্রমুখ।


আরও খবর



ঈদে ঘুরতে যাচ্ছেন? খরচ বাঁচানোর উপায় জেনে নিন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ভ্রমণ ডেস্ক

Image

রহমতের মাস মাহে রমজানের পর কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই আনন্দ ও খুশির জোয়ার। সবাই চায় এই সময়টাতে পরিবার পরিজনের সাথে খুশির সময়টা ভাগাভাগি করতে। আর তাই ঈদকে সামনে রেখে সবাই নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরা শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। আবার অনেকে ঈদের এই ছুটিতে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশে বা দেশের বাহিরে বিভিন্ন পর্যটন স্থানে যাবে ঘুরতে। এই ঘোরাঘুরিতে খরচ তো থাকবেই। তবে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে পারলে বাজেটের মধ্যে ঘোরাঘুরি সারা সম্ভব। চলুন জেনে নেই কয়েকটি বিষয়।

যাতায়াতে মিতব্যয়ী হোন : ভ্রমণে প্রথমধাপে যেই খরচটা হয় তা হচ্ছে যাতায়াতের খরচ। তাই যাতায়াতে মিতব্যয়ী হতে হবে। কোনো কোনো দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি তুলনামূলক কম ব্যস্ত বিমানবন্দর বেছে নেয়ার সুযোগ পাবেন, আর সেখান থেকে আপনার গন্তব্য শহরটিতে যাওয়ার জন্য মানসম্মত গণপরিবহনও পাওয়া যেতে পারে। কম ব্যস্ত বা কম জনপ্রিয় বিমানবন্দরে যেতে খরচটা একটু কম পড়বে। আর গণপরিবহনের খরচ তো কমই। তাই কোথাও যাওয়ার আগে সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা এবং খরচ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। বেঁচে যাবে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ। দেশে বেড়ানোর ক্ষেত্রেও ভাড়া গাড়ির চেয়ে স্থানীয় পরিবহন ব্যবহার করুন।

বুঝেশুনে প্যাকেজ অফার নিন : কাঙ্ক্ষিত স্থানে যাওয়ার পর থাকা খাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়। এর জন্য রিসোর্টে থাকা এবং খাওয়াদাওয়ার সুবিধা নিয়ে থাকলেও কিন্তু আপনি শেষমেশ বাড়তি খরচের চাপে পড়তে পারেন। যেমন খাবার খরচসহ থাকার জায়গা বুকিং দিয়েছেন। কিন্তু ওখানে গিয়ে স্থানীয়দের অন্য ধাঁচের কোনো মজাদার খাবার দেখে আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না। খরচ করে খেয়ে নিলেন সেই খাবার। ওদিকে রিসোর্টে ওই বেলার খাবার খরচটাও কিন্তু আপনাকে ঠিকই দিতে হচ্ছে। ফলে শুধুমাত্র থাকার জন্য রিসোর্ট বুকিং দিয়ে খাবারের খরচটা বাহিরে করলে হোটেলের বিল কম আসবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া কম খরচের হোটলেরুম বা রিসোর্টে উঠতে পারেন।

সাথে শুকনো খাবার রাখুন : ভ্রমণের সময় লাগেজে কিছু শুকনা খাবার রাখুন। বিদেশে গেলে ভিনদেশি মুদ্রায় এসব কিনতে যে বাড়তি খরচটা হতো তা অবশ্যই বেঁচে যাবে। আর হুটহাট ক্ষুধা পেলেও সঙ্গে থাকা খাবার খাওয়া যাবে। দেশেও অপ্রচলিত স্থানে গেলে সহজে খাবারটাও পেয়ে যাবেন।

উপহারে অপচয় নয় : অনেকেই ভ্রমণে গিয়ে আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের জন্য উপহার কিনে থাকেন। এতে অনেক খরচ হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দামি কিছু উপহার না দিয়ে বা মার্কেট থেকে না কিনে স্থানীয় বাজার থেকে কিছু কিনুন। এতে কম খরছে ভালো কিছু কেনা যাবে। তাছাড়া স্থানীয় মানুষের তৈরি হস্তশিল্পসামগ্রী সরাসরি তাদের কাছ থেকে কেনার সুযোগ পেলে সেটাও কাজে লাগাতে পারেন। উপহার হিসেবে এগুলো দারুণ।


আরও খবর



চাকরি ছাড়লেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫৭ কর্মকর্তা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ জন কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) অন্য চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়েছেন তারা। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।

পদত্যাগকারীদের মধ্যে রয়েছেন একজন উপ-পরিচালক ও একজন অফিসার। বাকি ৫৫ জন সহকারী পরিচালক। তাদের মধ্যে ৪৮ জনের পদত্যাগ কার্যকর হবে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল)।

এছাড়া গত ৩১ মার্চ, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল একজন করে, ১৮ এপ্রিল ২ জন এবং ২১ এপ্রিল ৪ জনের পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে।

চাকরি ছেড়ে যাওয়া এসব কর্মকর্তা বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া খুলনা ও বরিশাল অফিসে ৩ জন করে, সিলেট অফিসে ২ জন, মতিঝিল, চট্টগ্রাম ও রংপুর অফিসে একজন করে কর্মরত ছিলেন।

এক সময় বিসিএস, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো চাকরি ছেড়ে অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসতেন। কিন্তু এখন হয়েছে উল্টো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের ঘাটতিতে হতাশা, চাকরির সুযোগ-সুবিধা কমে আসার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের অন্য যে কোনো চাকরির মধ্যে তুলনামূলকভাবে ব্যাংকের বেতন বেশি। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে নানাভাবে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা ছিল। সব ক্ষেত্রে মেধাবীদের প্রাধান্য ছিল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর একাডেমিক রেজাল্টের ভিত্তিতে চারটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। ২০১৯ সালের এডি ব্যাচ থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২০২২ সালের আগ পর্যন্ত তিন বছর পূর্ণ হলে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী ধাপে পদোন্নতির যোগ্য হতেন কর্মকর্তারা। এখন পদ খালি থাকলেও ৫ বছর না হলে পদোন্নতি পান না। আগে যোগদানের পর ৯ মাসের ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ করানো হতো। এখন এক থেকে তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। আবার এই প্রশিক্ষণে ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হতো। সেটিও এখন বন্ধ। আর সরকারি চাকরি পঞ্চম গ্রেডে প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা কার মেইনটেন্যান্স ভাতা দেওয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকে তা দেওয়া হয় না।


আরও খবর



তীব্র তাপদাহ: আরও ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের বেশকিছু জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

এর আগে আবহাওয়া অফিস গত ৩ এপ্রিল হিট অ্যালার্ট জারি করেছিল। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরের তুলনায় দীর্ঘায়িত তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা থাকায় এই হিট অ্যালার্ট আরও বাড়ানো হয়েছে।

আজ সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা অঞ্চলভেদে সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।


আরও খবর



বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ডালমারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির বিষয়টি  নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্তারিত জানাতে পারব।

বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে নিয়ামতি ইউনিয়নের ডালমারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এতে গৃহবধূ সোনিয়া বেগম (৩১), তার ৯ বছরের মেয়ে রেজমি আক্তার ও ৫ বছরের ছেলে সালমান মোল্লা নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।


আরও খবর



বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ৮ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর শনিবার (১৩ এপ্রিল) ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেয় দস্যুরা।

সোমালিয়ার সংবাদমাধ্যম গ্যারোয়ে অনলাইন জানিয়েছে, জাহাজটি মুক্তি পাওয়ার পরপরই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পুন্টল্যান্ডের পূর্ব উপকূল থেকে দস্যুদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুন্টল্যান্ডের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের জিম্মির সঙ্গে জড়িত এই ৮ দস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের কোনো অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কি না সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

এদিকে, ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দুই দস্যু জানিয়েছে, দুই দিন আগে মুক্তিপণ হিসেবে তাদের ৫০ লাখ ডলার দেওয়া হয়। এই অর্থগুলো নকল কি না পরবর্তীতে সেটি যাচাই-বাছাই করে তারা। এরপর নিজেদের মধ্যে অর্থগুলো ভাগ করে তারা জাহাজ থেকে চলে যায়।

মুক্তিপণের মাধ্যমে জাহাজ ছাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়টি দস্যুদের আরও জাহাজ ছিনতাইয়ে উদ্বুদ্ধ করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পুন্টল্যান্ডের এক পুলিশ কর্মকর্তা।

গত তিন মাস ধরে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দস্যুরা সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-শাবাবের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছে সোমালিয়ার সরকার। দস্যুতা বন্ধ করতে জলদস্যুদের গ্রেপ্তার এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। গত ১৭ এপ্রিল সোমালি দস্যুদের কাছ থেকে এমভি রুয়েন নামের একটি জাহাজ উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনী। জাহাজটি উদ্ধারে তারা কমান্ডো অভিযান পরিচালনা করে।

বাংলাদেশি জাহাজটিও মুক্ত করতে ভারতীয় নৌবাহিনী সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু নাবিকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এতে সম্মতি দেয়নি বাংলাদেশ সরকার। এর বদলে আলোচনার মাধ্যমে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার পথ অনুসরণ করা হয়। এতে করে সব নাবিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়লা নিয়ে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালি দস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এটির মালিক কবির রি রোলিং মিলস। ওই সময় জাহাজটিতে ২৩ নাবিক ছিলেন।


আরও খবর