ইসরাইলি বিমান হামলায় এক হামাস কমান্ডার সপরিবারে নিহত হয়েছেন। শনিবার (২১ অক্টোবর) গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে নিজ বাড়িতে নিহত হন আল-কাসসাম ব্রিগেডের কমান্ডার তালাল আল-হিন্দি। এ সময় তার স্ত্রী ফাদওয়া, মেয়ে ইসরা ও ভাতিজি বারা নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাস কমান্ডার তালাল আল-হিন্দির বাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে বাড়িটি মুহূর্তেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। কয়েক ডজন মানুষ বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ইসরাইলি বিমানবাহিনীর হামলায় সপরিবারে নিহত হন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান জিহাদ মহসিন। হামাস সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির শেখ রেদওয়ানে জিহাদ মহসিনকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
এছাড়া ওইদিন হামাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটি পলিটব্যুরোর একমাত্র নারী সদস্যও ইসরাইলি বিমান হামলায় প্রাণ হারান বলে জানায় ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম।
ফিলিস্তিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, হামাসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও নেতা আব্দেল আজিজ আল-রানতিসির বিধবা স্ত্রী ৬৮ বছর বয়সি জামিলা আল-শান্তিকে বিমান হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরাইল। হামাসের সহপ্রতিষ্ঠাতা আব্দেল আজিজও ২০০৪ সালে এক বিমান হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির ওই হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। যার ফলে এরইমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৩ হাজার আহত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে আরও কয়েক হাজার।
শনিবার (২১ অক্টোবর) ১৫ তম দিনের মতো গাজায় বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে গাজা শহরে আবারও ইসরাইলি বিমান থেকে লিফলেট ফেলে অধিবাসীদের শহর ছাড়ার কথা বলা হচ্ছে।
এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে গাজা অবরোধ করে রেখেছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনিদেরকে রেশনের খাবার খেতে বাধ্য করছে। শুধু তাই নয়, পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে নোংরা পানি পান করতে বাধ্য করছে তারা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, হাসপাতালের জ্বালানি ও ওষুধপত্র শেষ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাফা ক্রসিং খুলে হাতে গোনা কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে। যাকে ‘মরুভূমিতে এক ফোটা বৃষ্টির’ সঙ্গে তুলনা করেছেন পর্যবেক্ষকেরা।