খল অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বড় ছেলে সৌমিকের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঘটে গেছে এক নেতিবাচক ঘটনা। চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে চড় মেরেছেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। বিপরীতে জায়েদ খান পিস্তল বের করে গুলির হুমকি দিয়েছেন সানীকে।
এ ঘটনায় জায়েদ খানের বিরুদ্ধে রোববার (১২ জুন) রাতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওমর সানি।
ওমর সানী বলেন, ‘আমি সব সময় আমার যেকোনো সংকটে চলচ্চিত্রের মুরব্বিদের পরামর্শ নিই। তারা যা বলেন সেভাবে সবাইকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
শিল্পী সমিতির সভাপতির কাছে দেওয়া চিঠিতে ওমর সানী লিখেছেন, ‘আমি ওমর সানি অত্র সমিতির একজন সদস্য এবং সাবেক কমিটির সহসভাপতি ছিলাম। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, সমিতির সদস্য জায়েদ খান চার মাস ধরে আমার স্ত্রী আরিফা পারভীন জামান মৌসুমীকে নানাভাবে হয়রানি ও বিরক্ত করে আসছে। আমার সুখের সংসার ভাঙার জন্য বিভিন্ন কৌশলে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে আসছে। এ ব্যাপারে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে বারবার বোঝানো চেষ্টা করেছি। তার প্রমাণ আমার এবং আমার ছেলের কাছেও আছে। তাছাড়া মুরুব্বি হিসেবে আমি ডিপজল ভাইয়ের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু ওই বিষয়ের কোনো সমাধান হয়নি। ডিপজল ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে জায়েদ খানের সাথে দেখা হলে এ বিষয়ে সংযত হওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করি। এতে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং হঠাৎ করে তার পিস্তল বের করে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে “অতএব আমি মনে করি এমন একজন পিস্তলধারী সন্ত্রাসী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য থাকতে পারে না। উল্লেখিত বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনা-পূর্বক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি বিনীত অনুরোধ করছি।’
এদিকে আজ রোববার দুপুরে নিজের ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে ওমর সানী লিখেছেন, ‘আমি ততক্ষণ নীরব থাকি, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমার আত্মসম্মানে আঘাত না লাগে।’ জায়েদ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ওমর সানী বলেন, জায়েদ খান শুধু মৌসুমীকে নয়, আরও অনেক মেয়েকেই বিরক্ত করেন। জায়েদের কারণে অনেক মেয়ের সংসারও ভেঙেছে।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ডিপজল বলেন, ‘যেসব ঘটনা শুনছেন, এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট খবর। এরকম কোনো ঘটনাই সেদিন ঘটেনি। যারা বলেছে, তারা মিথ্যা বলেছে।’তাহলে এমন ভিত্তিহীন ঘটনা রটানো হচ্ছে কেন? কারাই বা এসব ছড়াচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিপজল বলেন, ‘কারা ছড়াচ্ছে? কেন ছড়াচ্ছে, তা তো আমি বলতে পারব না। আমি ছেলের বিয়ের আয়োজন নিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি।’
উল্লেখ্য, ওমর সানীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মৌসুমীকে বিরক্ত করে আসছেন জায়েদ খান। একাধিকবার তাকে সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেননি। ওমর সানীর ভাষ্য, “বেয়াদবির একটা সীমা আছে। ও (জায়েদ) ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে সবার সঙ্গে বেয়াদবি করবে, সব মেয়ে মানুষের সঙ্গে বিকৃত আচরণ করবে, এসবের একটা সীমারেখা আছে। সে মৌসুমীর সঙ্গে বেয়াদবি করার চেষ্টা করেছে। আমি গিয়েই (বিয়ের অনুষ্ঠানে) চড় মেরেছি। সে আমাকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে। তখন আমি একটি গালি দিয়েছি তাকে।”
যদিও ওমর সানীর বক্তব্যকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন জায়েদ খান। ডিপজলের মতো তিনিও বলেছেন, এরকম কোনো ঘটনা সেদিন ঘটেনি। শত্রুতা করে তার নামে এসব কথা ছড়ানো হচ্ছে।