চলমান করোনা মহামারিতে
বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দেড় হাজারের
বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সাড়ে
৩ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির
তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র,
দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ড। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০
কোটি ৯৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৪৪ হাজার।
মঙ্গলবার (২৬
এপ্রিল) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস
থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা
গেছেন ১ হাজার ৬৪৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে সাড়ে ছয় শতাধিক।
এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ৭১০ জনে।
একই সময়ের মধ্যে
ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৮৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায়
নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩৯ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত
ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৯৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪১ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৯৮০ জন এবং মারা গেছেন ১৭১ জন। করোনা
মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৪২ লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ জন
করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮১৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক
প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৮৪ জন এবং মারা গেছেন ১৯৭ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮৩ লাখ ১৭ হাজার ৯১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ
৪৫ হাজার ২৫৭ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৯২৬ জন এবং মারা গেছেন
১৩১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ২৭ লাখ ২৫
হাজার ২৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ১৮ হাজার ৫৬১ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায়
রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৯ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন
৭ হাজার ৬৫১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
১ কোটি ৮১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৬১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬১ জনের।
দক্ষিণ কোরিয়ায়
গত একদিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৭০ জন এবং মারা গেছেন ১১০
জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৯
হাজার ৫৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২২ হাজার ২৪৩ জন মারা গেছেন।
গত একদিনে জাপানে
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৪৫০ জন এবং মারা গেছেন ২৪ জন। একইসময়ে
থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯৯৪ জন এবং মারা গেছেন
১২৪ জন।
লাতিন আমেরিকার
দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে
রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৬ জন এবং নতুন করে করোনায়
সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৫৬ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯১৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার
৭৭৭ জনের।
করোনায় আক্রান্তের
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের
সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন
২ হাজার ১১ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি
৩০ লাখ ৬২ হাজার ৯৭ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায়
তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬০৪ জন এবং মারা গেছেন ১৫ জন।
একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৮৭৮ জন এবং মারা গেছেন
৯৩ জন। গ্রিসে নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪১৩ জন এবং মারা গেছেন
৬৬ জন।
এছাড়া করোনায়
আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কানাডায় ৬৪ জন, ইরানে ২১ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ জন, ফিলিপাইনে
১২ জন, হাঙ্গেরিতে ৫৩ জন এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩৩ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১২ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে
মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ১২৯ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।