রাশিয়া ও ইউক্রেনের
মধ্যে সৃষ্ট সংকটের কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে সোমবার
১৯তম দিনে গড়িয়েছে এই অভিযান। বিগত ১৮ দিনে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি নগরী দখলে নিয়েছে
রুশ বাহিনী।
সাবেক সোভিয়েত
ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া।
রুশ সামরিক অভিযানের
এই ১৮ দিনেই ২৫ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক শরণার্থীর পরিণতি বরণ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
তার প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস। ইউক্রেন
তো বটেই, প্রতিবেশী দেশগুলেকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার পক্ষ থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন ইউক্রেনের স্বাস্থ্যকেন্দ্র
এবং হাসপাতালগুলোর কোনও ক্ষতি না করে। দু’দেশের এই যুদ্ধের
প্রভাব করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে না পড়ে সে দিকটাও খেয়াল রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ১৮ দিনে ২৫
লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার আশঙ্কা, তাদের থেকেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, প্রথমত, ইউক্রেনের
বাসিন্দাদের টিকাকরণের মাত্রা ৩৪ শতাংশ, যা অন্যান্য দেশের নিরিখে অত্যন্ত কম। দ্বিতীয়ত,
গত ৩-৯ মার্চ ইউক্রেন এবং সংলগ্ন দেশগুলোতে করোনা সংক্রমণের হার অত্যধিক বেড়েছে।
এই ছ’দিনে ইউক্রেন-সহ প্রতিবেশি দেশগুলোতে সাত
লাখ ৯১ হাজার ২১জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ১২ জনের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই সংখ্যা উদ্বেগজনক।
ইউক্রেনে যে করোনা
সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে এবং আগামী দিনে আরও উত্তরোত্তর বাড়তে চলেছে তা জানিয়েছেন বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ানও। তিনি বলেছেন, “যুদ্ধের কারণে
ইউক্রেনে কোভিড টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কোভিড পরীক্ষাও।
আর এটাই সবচেয়ে উদ্বেগের একটা কারণ।”
যুদ্ধের পর বিভিন্ন
দেশে ছড়িয়ে পড়া ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের প্রসঙ্গও তুলেছেন রায়ান। তার কথায়, “এই শরণার্থীরা
অজান্তেই ভাইরাস বহন করে আনতে পারেন নিজেদের সঙ্গে।”
এই সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য নানা রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়ার মতো ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলো শরণার্থীদের বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা এবং টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতোমধ্যেই। তবে যেভাবে ইউরোপে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে দু’দেশের এই যুদ্ধ সেই পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।