বরিশাল শের-ই-বাংলা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতির অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখে অস্ত্রোপচারের ঘটনায় ভিকটিম
শারমিন আক্তারকে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
এছাড়া রিটে উন্নত
চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিকটিমের পরিবারের খরচ নির্বাহের
জন্য তাৎক্ষণিক ১০ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে মঙ্গলবার
(৭ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জীবননেছা মুক্তা রিট আবেদনটি দায়ের করেন।
জানা গেছে, বরিশাল
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের পর রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই দিয়েছেন
চিকিৎসক। চিকিৎসকের এমন অবহেলায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করা
হয়েছে ওই নারীকে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্তে কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৩১
মে) দুপুরে তদন্ত কমিটি গঠন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
পরিচালক।
হাসপাতাল সূত্রে
জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে এক কন্যা
সন্তান জন্ম দেন ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার শারমিন আক্তার। সে সময় অস্ত্রোপচারের পর
তার পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেন এক চিকিৎসক। সুস্থ হয়ে শারমিন বাড়ি ফেরার কিছু দিন
পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আস্তে আস্তে সেখানে পচন ধরে ক্ষতের সৃষ্টি
হয়ে ব্যথা অনুভব করতে শুরু হয়। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানলে পুনরায় হাসপাতালে
ভর্তি করা হয় শারমিনকে।
হাসপাতালের সার্জারি
বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে জানান, শারমিনের পেটের ভেতর গজ
রয়ে গেছে। পরে ২২ মে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তা অপসারণ করেন।
এ ঘটনায় শারমিন
আক্তারের স্বামী জিয়াউল হাসান বলেন, চিকিৎসকের কাছে আমরা আসি সুস্থ হওয়ার জন্য। আর
সেই চিকিৎসকই আমার স্ত্রীকে অসুস্থ করে দিয়েছে। এতে পুরো পরিবারের সুখ ধ্বংস হয়ে গেছে
বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। অভিযুক্ত চিকিৎসকের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল
পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, সার্জারি বিভাগের প্রধান এবং মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ
ডা. নাজিমুল হককে প্রধান করে ৩০ মে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে
গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. খুরশীদ জাহান ও শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)
মনিরুজ্জামান শাহীনকে সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেবে। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।