সিলেট নগরের বালুচর এলাকায় ‘দলীয় কর্মীদের’ ছুরিকাঘাতে নিহত
ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদের (১৯) শরীরে ২০টি সুচালো ও ধারালো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এতে রক্তনালি কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আরিফের শরীরে
আরও তিনটি হালকা জখমের চিহ্ন রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আরিফের ময়নাতদন্ত শেষে
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শামসুল ইসলাম
এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, নিহত আরিফের দুই পায়ের ঊরুর পেছনের দিকে, গোড়ালিতে ও হাতে
এসব আঘাত লেগেছে। নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উল্লেখ
করা হবে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নগরের
বালুচর টিবিগেট এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে আরিফকে (১৯) ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান কয়েকজন
যুবক। তাঁকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। আরিফ নগরের টিলাগড় এলাকার
স্টেইট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত
ছিলেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের
কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ ওরফে নিপুর নেতৃত্বে আরিফকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা
হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। হিরণ মাহমুদ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। আরিফ পদে না থাকলেও
জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলামের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। তিনিও এ হত্যাকাণ্ডে
হিরণ মাহমুদ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন। ঘটনার পর থেকে কয়েক দফা চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ
থাকায় অভিযোগের বিষয়ে হিরণ মাহমুদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১৫ নভেম্বর আরিফের ওপর আরেক দফা হামলার
ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় আরিফের মা আঁখি বেগম বাদী হয়ে গতকাল রাতে শাহপরান থানায় একটি
লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ করার পর আরিফকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে টিলাগড় এলাকায় ফেলে
যাওয়া হয়। আঁখি বেগমের দাবি, ছেলে মারা যাওয়ার আগে হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন।
শাহপরান থানায় করা অভিযোগটি রাতেই মামলা
হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের।
তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সিলেট বিমানবন্দর থানা এলাকায় হওয়ায় ওই থানায় মামলা করার কথা
আছে।
বিমানবন্দর থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত
থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের
গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।