বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছেন নেতা-কর্মীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দিনব্যাপী এই কর্মসূচি শুরু হয়।
এদিন সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হতে শুরু করেন। সকাল ৯টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু হয়।
ফখরুল বলেন, 'অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালেদা জিয়া লড়াই করছেন। কিন্তু এই ফ্যাসিবাদী সরকার এখন পর্যন্ত তাকে চিকিৎসার সুযোগ প্রদান করছে না।'
বিএনপির ডাকা গণঅনশন কর্মসূচি আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
বক্তব্যে ফখরুল নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'আমরা আজ এই গণঅনশন কর্মসূচি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পালন করবো।'
এ সময় তিনি খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই দাবি জানান দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
আরও উপস্থিত আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও আবদুস সালামসহ অনেকে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীরা আজ দিনব্যাপী গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
গত ১৩ নভেম্বর ফলোআপের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এর আগে, গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ২৬ দিন পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন।
জাতীয় সংসদে একটি আইন প্রণয়নের আলোচনায় গত ১৬ নভেম্বর বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা একই দাবি জানান। জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবার জেলে গিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার আবেদন করলে তা বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া এখন যে অবস্থায় আছেন তাতে আবেদন নতুন করে বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। এই আবেদনটি ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্তের ওপর আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু তারপরও খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করছেন। এটি পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতার কারণে। বিএনপি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন ও পুরস্কৃত করেছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ওই মামলার প্রধান আসামি তারেক জিয়া। তারপরও খালেদা জিয়ার প্রতি দয়া করা হচ্ছে, সুচিকিৎসা করা হচ্ছে।'
দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা মতে এই সুযোগ দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।