চলতি শিক্ষাবর্ষের শেষদিকে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়বে সেটা আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। বছরের শেষদিকে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল পরীক্ষা। রাজনৈতিক ডামাডোলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষা কার্যক্রমেও।
টানা হরতাল-অবরোধে সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম। সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরেছে। স্কুল পর্যায়ে ক্লাসের উপস্থিতি অর্ধেকে নেমে এসেছে। বছরের শেষদিকে এসে সঠিক সময়ে পরীক্ষা শেষ হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ বছরের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাগুলো নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার পর শুরু হবে নতুন শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম। ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষায় বসবে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভাব ফেলবে এই পরীক্ষার্থীদের ওপরও।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যখন করোনার ক্ষতি পুষিয়ে আনার চেষ্টায়, রাজনৈতিক কর্মসূচি আবারও বিপাকে ফেলেছে শিক্ষার্থীদের। রাজনৈতিক উত্তাপ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও পৌঁছে গেছে। পিছিয়ে যাচ্ছে চুড়ান্ত পরীক্ষা, আবার যাদের কিছুদিন পর শুরু হবার কথা রয়েছে তাদের পরীক্ষা হওয়া নিয়ে ডানা মেলেছে দুশ্চিন্তা।
সাম্প্রতিক গত কয়েকদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আগুন দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাসে ইট পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষাতে উপস্থিত হবার সময় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এবং একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হবার পরেও বেশ কিছু বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা পিছিয়েছে। আর যে বিভাগগুলোর চুড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে, সেগুলো সঠিক সময়ে পরীক্ষা শেষ হওয়া নিয়ে জেগেছে শঙ্কা।
ইতিহাস বিভাগের একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী ২১ নভেম্বর থেকে আমাদের চুড়ান্ত পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি কিন্তু রাজনৈতিক পরিবেশ যেভাবে ঘোলাটে হচ্ছে, আমাদের পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে গেলে সেশন জটে পড়বো।
সামসুল হক নামের একজন অভিভাবক বলেন, কোনো অভিভাবক ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। আমাদের কাছে সন্তানের জীবন খুব বেশি মূল্যবান, বেশি প্রয়োজন না হলে তাদের স্কুলে পাঠাচ্ছি না। অনেক অভিভাবক আবার নিজেই তার সন্তানকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসছেন।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে শিক্ষা কার্যক্রমে যেন সহিংসতা প্রবেশ না করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।