আজঃ রবিবার ২৩ জুন ২০২৪
শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে সুদারুদের চাপে চিরকুট লিখে যুবকের আত্মহত্যা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৪ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৪ জুন ২০২৪ | পত্রিকায় প্রকাশিত
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

ঠাকুরগাঁওয়ে সুদারুদের চাপ ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শিক্ষকসহ সাতজনের নাম চিরকুটে লিখে আত্মহত্যার করেছে এক যুবক।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মাদ্রাসাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত শফিকুল ইসলাম (৪৫) ওই এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি.এম ফি‌রোজ ওয়া‌হিদ। তবে সুদখোরদের হুমকিতে আতঙ্কে রয়েছে নিহতের পরিবারের লোকজন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সম্ভবত রাত তিন থেকে চারটার দিকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সকালে তার লাশটি ঘরের বারান্দায় দেখতে পায় তারা। পরে তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ওই চিরকুটে ৭ জনের নাম রয়েছে। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সেটা জানি না। আমরা টাঙ্গাইল থেকে এসেছি। আমাদের এখানে আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই বলে জানান নিহতের পরিবার।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত শফিকুল ইসলাম পাঁচ মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মাদ্রাসা পাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি ফেরি করে কাপড় ব্যবসা করতেন। পুলিশ লাইনের সামনে একটি পানের দোকান রয়েছেও তাঁর। এই বড় পরিবার তিনি চালাতে গিয়ে প্রায় হিমশিম খেতে ছিলেন। এ সময় তিনি বেশ কয়েকজনের কাছে ঋণ মাহাজন করেছিলান। আর ঋণ মাহাজনের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতেন সুদখোররা। চাপ সহ্য করতে না পেরে ভোররাতে ঘরের বারান্দায় চালার বাশের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে মৃত্যুর আগে এক চিরকুটে শিক্ষকসহ সাতজনের নাম লিখে যান তিনি।

চিরকুটে যে সাতজনের নাম লিখে গেছেন তারা হলেন, মো. জুয়েল ইসলাম, মো. হুমায়ুন কবীর, মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. হাবু ও পৌর শহরের কলোনির একজন।

চিরকুটে যাদের নাম রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা তাঁরা কেউ কথা বলতে রাজী হননি।

সুদের ভয়াল ছোবলে নি:শ্ব হওয়া নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একজন জানান, আমি বিপদে পরে এক বোর্ড অফিস এলাকার জাহাঙ্গীর সুদারুর কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ছিলাম। সে আমার ব্যাংক চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। সেই টাকার ৫ গুন লাভ দিয়েও  ঋণের হাত থেকে রেহাই পাইনি। পরে সুদ পরিশোধ করতে সমিতি থেকে কিস্তি তুলি। এভাবে দেনা বাড়তে বাড়তে বাড়ির জায়গা পর্যন্ত বিক্রি করে এখন আমি নিঃস্ব।

সুদের টাকা দিতে দেরি হলে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালিও করে সুদখোররা। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করা যায় না। সুদারুদের কাছে সর্বস্ব দিয়েও এর হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ।

সমাজ উন্নয়নকর্মী মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, বর্তমানে সুদখোরেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইন না থাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ-প্রশাসন। সুদ গ্রহিতার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও ফাঁকা চেক নিয়ে জিম্মি করছে তাদের। অনেক ক্ষেত্রে আসল ও কিছু সুদের টাকা পরিশোধ করলেও সুদের সুদ দিতে না পারলে ঐ দুই কাগজের বলে আইনের মারপ্যাচে জেলে যেতে হচ্ছে অসহায় সুদ গ্রহিতাকে।

তিনি আরো বলেন, এখানে ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। গরিব আরো গরিব হচ্ছে। যার ন্যূনতম একটা সম্মানবোধ আছে, তিনি হয়ত আত্মহত্যা করছেন। কিন্তু আমাদের দেশে তো হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি হয়ে অনেকেই আয়েসে জীবন যাপন করছেন। তাদের ঐ সম্মানবোধটাই নেই। ফলে অনেকে জীবন বাঁচাতে ঋণ নিয়ে সেটারই ফাঁদে পড়ছে। যার ফলে এই ধরনের ঘটনায় আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানা ওসি এবি এম ফি‌রোজ ওয়া‌হিদ বলেন, পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। তিনি চিরকুটে কয়েকজনের নাম লিখে আত্মহত্যা করেছেন এটি কি তিনি লিখেছেন নাকি কাউকে ফাঁসানোর জন্য অন্য কেউ লিখে রেখেছেন সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ মুহূর্তে অন্য কিছু বলা সম্ভব না।


আরও খবর



উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার নিকটে অবস্থান করছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ৩ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিবে।

সোমবার (২৭ মে) ভোরে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আব্দুল কালাম মল্লিকের দেওয়া আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১৮ তে এসব তথ্য জানানো হয়।

তিনি বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০কিলোমিটার. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



কয়রায় বাঁধ ভেঙে ২০ গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
তারিক লিটু, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

Image

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা উপজেলার ৩টি জায়গার বাঁধ ভেঙে অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া রাতজুড়ে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পাউবো সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে জোয়ারের তীব্র চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোণা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বাঁধের দুর্বল অংশের ওই ৩টি স্থানে প্রায় ১৫০ মিটার ভেঙে নদীর নোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে এলাকা। এ ছাড়াও বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামত কাজ চালিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

মহারাজপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, রোববার রাতের জোয়ারের চাপে ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত দুটি গ্রাম ও কয়েকশ চিংড়ির ঘের তলিয়ে গেছে।

মহেশ্বরীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারি বলেন, ইউনিয়নের সিংহেরকোণা এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নয়ানি এলাকার বাঁধের নিচু জায়গা ছাপিয়ে সারারাত পানি ঢুকেছে। এতে অন্তত ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য চিংড়ির ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডব ও ভারী বৃষ্টিতে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী জানান, তার ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা এলাকায় রাতের জোয়ারে বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে ৫-৭টি গ্রামে নদীর পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় নিচু বাঁধ ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করেছে এলাকায়।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম তারিক উজ জামান বলেন, কয়েকটি স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি।


আরও খবর



সোনিয়া গান্ধীর রেকর্ড ভেঙে ৪ লাখ ভোটে জিতলেন রাহুল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৪ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভোটগণনার সাত ঘণ্টা যেতে না যেতেই নিশ্চিত হয়ে গেছে, উত্তর প্রদেশের রায় বরেলি আসনে জয়ী হয়েছেন রাহুল গান্ধী। সেটিও রেকর্ডগড়া ব্যবধানে। ওই আসনে নিকটতম প্রার্থীর চেয়ে চার লাখের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন এ কংগ্রেস নেতা।

রাহুলের মা সোনিয়া গান্ধী রায় বরেলি আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এবার সেই আসনে নির্বাচন করেন তার পুত্র রাহুল গান্ধী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীকে যে ব্যবধানে হারিয়েছিলেন সোনিয়া, এবার সেই ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ করেছেন রাহুল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, রায় বরেলি আসনে রাহুল ৬ লাখ ৭০ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী দিনেশ প্রতাপ সিংয়ের চেয়ে তিনি প্রায় চার লোখ ভোট বেশি পেয়েছেন।

কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত রায় বরেলি আসনে ২০১৯ সালের নির্বাচনে সোনিয়া গান্ধীর কাছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ভোটে হেরেছিলেন দিনেশ।

ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর কাছে হার স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপির এ নেতা।

সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে তিনি জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং বলেছেন, দলীয় নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও সিদ্ধান্তটি তাদের হাতে ছিল না।

নিউজ ট্যাগ: রাহুল গান্ধী

আরও খবর



সেতু ভেঙে ৯ জন নিহতের ঘটনায় ঠিকাদারের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত:শনিবার ২২ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২২ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা

Image

আমতলী উপজেলা চাওড়া নদীর উপর নির্মিত হলদিয়া হাট ব্রীজ ভেঙ্গে বিয়ের ৯ জন কনে পক্ষের আত্মীয়স্বজন নিহত হয়েছে। নিহতের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন। অপর নিহতরা সকলেই পরস্পর আত্মীয়স্বজন।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারীতে আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা ব্রীজ নির্মাণ করেছে। ফলে নির্মাণের ৫ বছরের মাথায় ব্রীজের মাঝখানের ভীম ভেঙ্গে যায়।

গত ১০ বছর ধরে এ ভাঙ্গা নরবরে ব্রীজের উপর দিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন ও চাওড়াসহ উপজেলার অন্তত অর্ধ লক্ষ মানুষ চলাচল করতো। ব্রীজ নির্মাণকারী ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার শাস্তি দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ঘটনা ঘটেছে শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে। 

জানা গেছে, আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ২০০৮-০৯ অর্ধ বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চাওড়া  নদীর উপর হলদিয়া হাট এলাকায় আয়রণ ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহবান করে। ওই ব্রীজের নির্মাণের পাঁচ বছরের মাথায় ব্রীজের মাঝের ভীম ভেঙ্গে যায়। গত ১০ বছর ধরে ওই ভাঙ্গা ব্রীজ দিয়ে  হলদিয়া ইউনিয়ন ও চাওড়াসহ উপজেলার অন্তত অর্ধ লক্ষ মানুষ চলাচল করে আসছে।  শনিবার দুপুর দেরটার দিকে কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমির সহকারী শিক্ষক উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডাঃ সোহাগের বিয়ে হয়।

গত শুক্রবার ওই কনেকে বরের বাড়ি তুলে আনেন। শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রো এবং অটোগাড়িতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে হলদিয়া ব্রীজ পাড় হওয়ার সময় ব্রীজের মাঝের অংশ ভেঙ্গে যায়।

এতে মাইক্রোবাস ও অটোগাড়ি নদীতে পড়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সকলে সাতরে কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা ওই মাইক্রোতে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী নাশির উদ্দিন। খবর পেয়ে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও রুবি বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ী উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে। অপর নিহত ৭ জনের বাড়ী মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের বাসিন্দা। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ীর আত্মীয়স্বজন। নিহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পরপর ব্রীজ নির্মাণকারী ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার বিচার দাবীতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। খবর পেয়ে বরগুনা-১ আসনের সাংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু, জেলা প্রশাসক মোহাঃ রফিকুল ইসলাম,  উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

মাইক্রোবাসে থাকা সোহেল মিয়া বলেন, মাইক্রোবাসে কনে পক্ষের ১৬ জন যাত্রী বরের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে হলদিয়া হাট ব্রীজের উঠামাত্রই ব্রীজ মাঝখান দিয়ে ভেঙ্গে মাইক্রোবাসটি নদীতে পড়ে যায়। আমিসহ ৩ জন সাতরে কিনারে উঠতে পেরেছি। পরে স্থানীয়, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন ও নাশির উদ্দিন বলেন, মাইক্রোবাস ও অটোগাড়ীটি ব্রীজের মাঝখানের আসা মাত্রই ধপাস করে ব্রীজ ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়। তাৎক্ষনিক আমরা স্থানীয়দের নিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চালাই। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ব্রীজ নির্মাণ কালে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা ব্রীজ নির্মাণ করেছে। ফলে নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই ব্রীজের মাখঝানের ভীম ভেঙ্গে গেছে। ওই ভাঙ্গা ব্রীজ দিয়ে অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ চলাচল করতো। তিনি আরো বলেন, এই ভাঙ্গা ব্রীজ মেরামতের জন্য আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বহুবার জানিয়েছি কিন্তু তিনি আমলে নেয়নি। যার ফলে আজ ৯ জনের প্রাণ গেল। ঠিকাদার দায়সারা ব্রীজ নির্মাণ করায় এবং উপজেলা প্রকৌশলী ব্রীজ সংস্কার না করায় তাদের শাস্তি দাবি করছি।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ব্রীজ ভেঙ্গে মাইক্রোবাস নদীতে ডুবে নিয়ে বিয়ের কনে পক্ষের ৯ জন মানুষ মারা গেছে। নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমি যথাযথ ভাবেই ব্রীজ নির্মাণ করেছি। ব্রীজ নির্মাণ কাজে কোন অনিয়ম করিনি।

আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার ইনচার্জ মোঃ হানিফ বলেন, চার ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে মাইক্রোবাস উদ্ধার করতে পারিনি। উদ্ধার চেষ্টা অব্যহত আছে।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী  আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমতলীতে আমার যোগদানের পূর্বে এ ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্রীজ নির্মাণ যে ঠিকাদার অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা-১ আসনের সাংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, নিহতের স্বজনদের হাসপাতালে সমবেদনা জানিয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থলে বিক্ষুদ্ধ মানুষকে শান্ত করেছি। তিনি আরো বলেন,  ব্রীজ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।


আরও খবর



চার বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির আভাস, ভূমিধসের শঙ্কা

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের চারটি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে দুই বিভাগে ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে আজ (১৯ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (৯৮৯ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে।

ভারী বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে, দুপুরের মধ্যে দেশের আটটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বুধবার (১৯ জুন) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


আরও খবর