আজঃ শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
শিরোনাম

যেসব ভুলে নষ্ট হতে পারে নতুন কেনা স্মার্টফোনও

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মার্চ ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক

Image

স্মার্টফোন ছাড়া এক মুহূর্তও কল্পনা করতে পারেন না অনেকে। সারাক্ষণ ফোনে কোনো না কোনো কাজ করছেন। তবে সারক্ষণ ব্যবহারের ফলে কমতে পারে স্মার্টফোনের আয়ু। তবে নতুন স্মার্টফোন কেনার কয়েকদিন পরই দেখা যায় তা স্লো হয়ে গেছে। কিংবা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে বারবার, চার্জ হচ্ছে না ঠিকমতো। এছাড়াও হাজারো সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোনের এসব সমস্যা মূলত দেখা দেয় ব্যবহারের নানান ভুলের কারণে।

ব্যবহারের ভুলের কারণে কমতে পারে স্মার্টফোনের আয়ু। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ভুলে নষ্ট হতে পারে নতুন কেনা স্মার্টফোনও-

সারারাত স্মার্টফোন চার্জে দিয়ে রাখা। অনেকেই চার্জ শেষ হওয়ার ভয়ে রাতদিন মোবাইলটাকে চার্জে বসিয়ে রাখেন। যা আদতে ক্ষতি করে মোবাইলের ব্যাটারির। শুধু ব্যাটারিই নয়, অতিরিক্ত চার্জে নষ্ট হয়ে যায় মাদারবোর্ডও। মাদারবোর্ড একবার নষ্ট হলে ফোনটাই অকেজো হয়ে যায়। ভেজা স্থানে ফোন রাখবেন না। ময়েশ্চারের কারণেও মাদারবোর্ডও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফোনের ব্যাটারি, ক্যামেরা ও ডিসপ্লেরও ক্ষতি হয় অনেক। তাই ভেজা হাতে ফোন ধরা বা ফোন স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় রাখবেন না।

ফোনে গেম খেলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। ফোন চার্জে বসিয়ে গেম খেলবেন না কখনো। তাতে ফোনের স্পিড কমে যায়। ব্যাটারি এবং ফোনের আয়ুও ফুরাতে থাকে দ্রুত। ফোনের অরিজিনাল চার্জার ব্যবহার করেন না অনেকেই। যে কোনো চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করেন। তবে এই ভুলে দ্রুত কমতে থাকে আপনার ফোনের আয়ু। ফোনের চার্জ ১০ শতাংশের নিচে আনবেন না কখনোই। আবার ১০০ শতাংশও করা যাবে না। সব সময় চেষ্টা করুন ৭০ শতাংশের মধ্যেই যেন থাকে।


আরও খবর



ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দুই দিনের সফর শেষে ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশেষ ফ্লাইটযোগে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।

আমিরের ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

আজ সকালে কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। পরে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়।

চুক্তিগুলো হলো, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, বাংলাদেশ সরকার এবং কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, কাতার এবং বাংলাদেশের মধ্যে সমুদ্র পরিবহন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং বাংলাদেশ-কাতার যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা।

চুক্তি ছাড়াও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম), বন্দর (এমব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতার স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়।

অনুষ্ঠানে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানী ঢাকার একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে মিরপুরের কালশী এলাকার বালুর মাঠে পার্কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাই ওভার পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে কাতারের আমিরের নামে। এখন থেকে রাস্তা ও পার্কটি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি অ্যাভিনিউ এবং শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি পার্ক নামে পরিচিত হবে।

সব শেষ আনুষ্ঠানিকতায় আমির পিএমও ত্যাগ করে বঙ্গভবনে যান। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।

এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন কাতারের আমির। বিমানবন্দরে আমিরকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। টানা চতুর্থ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এটি ছিল প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর। আর এর মধ্য দিয়ে ২০০৫ সালের পর কাতারের কোনো আমির ঢাকা সফর করলেন।


আরও খবর



হিট ওয়েভ সম্পর্কে যে তথ্যগুলো জানা জরুরি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

চৈত্রের শেষেই তাপপ্রবাহের কবলে দেশের বিভিন্ন অংশ। ইতোমধ্যে দেশে চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। যা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি। এমনকি আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে যে, চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে চলতি মাসেই তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও আগেই সতর্ক করা হয়েছে।

এ অবস্থায় প্রয়োজন না থাকলে বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভাল। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতি বছরই বিশ্বে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয় এই হিট স্ট্রোকে। অনেকেই রোদের মধ্য থেকে বাড়িতে ফিরে প্রথমেই ঢকঢক করে ঠাণ্ডা পানি খেয়ে ফেলেন। যা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ এতে যেমন ঠাণ্ডা বসে যায় তেমনই কিন্তু স্ট্রোকের (হিট ওয়েভ) সম্ভাবনাও বেড়ে যায় অনেকখানি।

হিট ওয়েভ বা হিট স্ট্রোক বাঁচতে তাই সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয় মেনে চলার ওপর বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, তার কয়েকটি সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো-

স্বভাবিক পানি পান করুন, তাও আবার ধীরে ধীরে।

ঠাণ্ডা পানি পান পরিহার করুন। বরফ/বরফ পানি পুরোপুরিই পরিহার করুন।

যখন তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াসে পৌঁছে তখন খুব ঠাণ্ডা পানি পান করতে নিষেধ করেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে রক্তনালী হঠাৎই সংকুচিত হয়ে স্ট্রোক হতে পারে।

যখন বাহিরের তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস অতিক্রম করে তখন ঘরে চলে আসুন বা ছায়ায় অবস্থান করুন। ঠাণ্ডা পানি পান করবেন না। স্বভাবিক তাপের পানি পান করুন বা ঈষৎ গরম পানি এবং ধীরে ধীরে পান করুন।

ঘরে এসেই হাত-পা-মুখ ধুবেন না। হাত-মুখ ধোয়ার আগে একটু অপেক্ষা করুন। দেহকে ঘরের তাপের সাথে খাপ খাইতে দিন। অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন হাত-মুখ ধোয়ার আগে বা গোসলের আগে।

অল্প অল্প করে বারে বারে স্বাভাবিক পানি পান করুন। জুস বা এ জাতীয় পানীয় পরিহার করুন। স্বাভাবিক শরবত, ডাব বা লবণ পানির শরবত পান করতে পারেন- যদি তা আপনার জন্য অন্য কারণে নিষিদ্ধ না হয়ে থাকে। তবে তাও স্বল্প পরিমাণে।

প্রচণ্ড গরমে বা যদি আপনি খুবই ক্লান্ত থাকেন তবে ভুলেও বরফ মিশ্রিত পানি বা ফ্রিজের পানি পান করবেন না, যদিও ওই সময় ঠাণ্ডা পানি খুব ভালো লাগে। এটা শরীরে প্রশান্তি ভাব এনে দিলেও হঠাৎই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।


আরও খবর
হিট স্ট্রোক হলে কী করবেন?

মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪




পাথরঘাটায় দু’টি চিত্রা হরিণ উদ্ধার

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনা পাথরঘাটায় লোকালয়ে আসা দুইটি চিত্রা হরিণ উদ্ধার করা করেছে বন বিভাগ। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯ টার সময় পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের বান্দাকাটা নামক এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয় ঢুকে পড়া হরিণ দুটি উদ্ধার করা হয়।

বন বিভাগের জ্ঞানপাড়া বিশেষ শহর টিমের ভারপ্রাপ্ত অফিসার্স ইনচার্জ ওবায়দুল রহমান আজকের দর্পণকে বলেন, হঠাৎ করে সকালে দুইটি চিত্রা হরিণ সুন্দরবন থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। মানুষ দেখে হরিণ দুটি ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। এক পর্যায়ে বেরিবাদের পাশে থাকা জালে একটি হরিণ বেঁধে যায়। কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় হরিণটিও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উদ্ধার করে ফরেস্ট ক্যাম্পের নিয়ে যাওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে সুন্দরবন একেবারেই কাছাকাছি হওয়ায় হয়তো হরিণ দুটি ভুল করে খাবারের সন্ধানে এই এলাকায় এসেছে।

হরিণ দুটি দ্রুতই সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি কারণ চিত্রা হরিণ বেশি মানুষ দেখলে স্টক করে মারা যায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকায় কয়েকটি সক্রিয় হরিণ চোরা কারবারি গ্রুপ আছে হয়তো তারাও এই হরিণ দুটি লোকালয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসতে পারে। তাই হরিণ রক্ষায় বন বিভাগের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে দাবি করেন তারা।


আরও খবর



রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাজশাহী প্রতিনিধি

Image

রাজশাহীর পবায় ট্রাকচাপায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার মুরাদীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, আসিফ ইকবাল (১৯), সুইট (৩১) ও তাজুল ইসলাম (২৫)। এদের মধ্যে আসিফ দামকুড়া উপজেলার নতুন কশবা এলাকার লাল মোহাম্মদের ছেলে, সুইট সুত্রাবন এলাকার আলমগীরের ছেলে ও তাজুল ইসলাম তাজুল লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি এলাকার মো. জহুরুল ইসলামের ছেলে।

অপরদিকে আহতরা হলেন, মো. জুলহাস উদ্দিন (৩২) ও মো. রিমন হোসেন (৩৫)। জুলহাস জেলার দামকুড় উপজেলার আলীগঞ্জ এলাকার মো. রবিউল ইসলামের ছেলে ও রিমন একই উপজেলার নতুন কশবা এলাকার মো. মানিক মিয়ার ছেলে।

দামকুড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর বলেন, বিকেলে উপজেলার মুরাদীপুর এলাকায় বালুবাহী একটি ডাম্পট্রাক দুটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এসময় পাঁচ আরোহীর মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলে মারা যান। আহত তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


আরও খবর



সদকাতুল ফিতর কখন কার ওপর ওয়াজিব

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

পবিত্র রমজানের ইবাদতের মধ্যে সদকাতুল ফিতর আদায় করা অন্যতম একটি ইবাদত। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং এ আনন্দে যেন মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্য শরিক হতে পারে এ জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে সদকাতুল ফিতর। রমজানের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিপূর্ণতার জন্যই আবশ্যক করা হয়েছে এটি।

ইমাম ওয়াকি ইবনুল জাররাহ বলেন, রমজান মাসের জাকাতুল ফিতর নামাজের সিজদায়ে সাহুর সমতুল্য। অর্থাৎ নামাজে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু দিলে এটা পূর্ণ হয়ে যায় তেমনি রোজার মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে সাদকাতুল ফিতর দিয়ে এর প্রতিকার হয়। তাছাড়া ধনী-গরিব উভয়ে যেন অন্তত ঈদের দিন উত্তম পোশাক ও উন্নতমানের খাবার খেতে পারে এ জন্যই ফিতরার ব্যবস্থা।

ফিতরার নিসাব

যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও ঋণ  ছাড়া সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা কিংবা এর সমমূল্য কোন সম্পদ বা টাকা থাকে, তাহলে তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব।

সদকাতুল ফিতর উত্তম হলো ঈদের নামাজের আগে আদায় করে দেয়া। কেননা রাসুল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।

জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতর দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেয়াও জায়েজ।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতর আদায় করাকে আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি :  ১৫১২)।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা রোজা পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ : ১৬০৯)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য, যব, বা খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির বা কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করতাম ৷ (বোখারি : ১৫০৬)।

হাদিস শরিফে এ পাঁচটি দ্রব্যের যে কোনো একটি দ্বারা সদকায়ে ফিতর আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে ৷ যেন প্রত্যেকে নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী আদায় করতে পারে তবে সবার জন্য সবচেয়ে কম দামের দ্রব্য দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করা অনুচিত; বরং যে ব্যক্তি খেজুর, কিশমিশ দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করার সামর্থ রাখে, সে তা দিয়েই আদায় করবে ৷

সদকায়ে ফিতর যাদের উপর ওয়াজিব

ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় যার কাছে যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, বাসগৃহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সমমূল্য পরিমান সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।

ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় এ পরিমাণ মালের মালিক থাকলে, তার উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে। যে শিশু-সন্তানটি ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে ভূমিষ্ট হবে, তার ফিতরাও আদায় করতে হবে।

অর্থাৎ পরিবারের যতজন সদস্য ততটি ফিতরা হিসেবে) সকলের ফিতরা আদায় করতে হবে। প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করবেন।

সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বোখারি  : ১৫১২)।

ইবনে আব্বাস (রা.) একবার রমজানের শেষ দিকে বসরায় খুতবা প্রদান করেন। সেখানে তিনি বলেন, তোমাদের রোজার সদকা আদায় করো। লোকেরা যেন ব্যাপারটা বুঝতে পারে নি।

তখন ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, এখানে মদিনার কে আছে দাঁড়াও। তোমাদের ভাইদেরকে বলো, তারা তো জানে না। বলো যে, রাসূল (সা.) এই সদকা আবশ্যক করেছেন। এক সা খেজুর বা যব অথবা আধা সা গম প্রত্যেক স্বাধীন-দাস, পুরুষ-নারী, ছোট-বড় সবার ওপর ওয়াজিব।  (আবু দাউদ: ১৬২২)।

যারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে। জাকাতের জন্য সম্পদের বর্ষপূর্তি শর্ত হলেও ফিতরায় এ শর্ত নেই। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নিজের পক্ষ থেকে, নিজের প্রাপ্ত এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে এবং নিজের সেবক-সেবিকাদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হবে। সন্তান বা অধীনস্থরা অমুসলিম হলেও তাদের ফিতরা আদায় করা আবশ্যক।

গম বা আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির- এ পাঁচটি জিনিস বা তার মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। সামর্থ্যানুসারে সবার উচিত উৎকৃষ্ট জিনিস সদকা করা। রাসূল (সা.)-এর সময়ে সামর্থ্যানুযায়ী সবাই উত্তম পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতেন।

সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, দাতার কাছে যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি। (বোখারি : ১৯৭৪)।

এ বছরের সদকাতুল ফিতরের নির্ধারিত পরিমাণ‌

ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ' এর অনুকরণে নিম্নে এবছরের (১৪৪৫ হিজরী/২০২৪ইং) এর সদকাতুল ফিতরের বাজার মূল্য তুলে ধরা হলো:

১. উন্নতমানের আটা বা গমের ক্ষেত্রে ফিতরা এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা) বা এর বাজার মূল্য ১১৫ টাকা।

২. যবের ক্ষেত্রে (এক সা) ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৪০০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।

৩. খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ৪৭৫ টাকা

৪. কিসমিসের ক্ষেত্রে  ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিসমিস বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ১৪৫ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে।

৫. পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৭০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।

ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা অদ্ভুত মানসিকতার পরিচয় দেই। আমাদের দেশে সাধারণত সর্বনিম্ন পরিমাণ অর্ধ সা গম এর মূল্য হিসেবে জনপ্রতি ১০০ টাকা হিসেবে সবাই আদায় করতে চান।

কোটিপতি হতে মধ্যবর্তী সবাই সর্বনিম্ন টাকা দিয়েই দায়মুক্ত হতে চান। সবচেয়ে কম মূল্যের গমের হিসাবে সবাই সাদকা করার প্রবণতা খুব বেশি। বিষয়টি রাসূল (সা.)-এর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।  বরং এটা তো সর্বনিম্ন সম্পদের মালিকের জন্য চলে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে তাওফিক দিয়েছেন, তাদের অন্যান্য দ্রব্য দিয়ে সর্বোচ্চ সদকায়ে ফিতর আদায় করা উচিত। তাই সামর্থ্যানুযায়ী বেশি মূল্যের পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায়ের চেষ্টা করতে হবে।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪