আবারও ভূমিকম্পে
কেঁপে উঠলো মিয়ানমার। যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলায়ও। রিখটার স্কেলে এর
মাত্রা ৫ বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। রবিবার (২
জুন) দুপুর ২টা ৪৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয় বলে জানিয়েছেন ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ
কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা।
তিনি জানান, মিয়ানমারে
৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন
স্থানেও। ঢাকা থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ৪৪২ কিলোমিটার দূরে।
এর আগে, গত ২৯
মে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা
ছিল ৫.৪।
এছাড়া এ বছর আরও
অন্তত ৩টি ভূমিকম্প অনুভূত হয় বাংলাদেশে।
গত ২৮ এপ্রিল
(রবিবার) বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। রাত
৮টা ৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়।
এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।
গত ২০ এপ্রিল
চট্টগ্রামে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ৩.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি বন্দরনগরী থেকে ৪৩ কিলোমিটার
দূরে আঘাত হানে। মৃদু ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত সীমান্ত থেকে ৩৪ কিলোমিটার
ও মিয়ানমার থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি
রাত ৮টা ৭ মিনিটে মৃদু ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে চুয়াডাঙ্গা। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান ওই সময় জানান, রিখটার
স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.৬। এর উৎপত্তিস্থল ছিল পাবনা জেলার আটঘরিয়া।
২০২৩ সালে যত
ভূমিকম্প
২০২৩ সালে বাংলাদেশে
১১টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এসব ভূমিকম্পে জানমালের তেমন ক্ষতি
না হলেও এগুলো বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছর প্রথম
ভূকম্পন অনুভূত হয় ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের পাশাপাশি
কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলাও। ৩ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে
জানমালের তেমন ক্ষতি হয়নি।
২৫ ফেব্রুয়ারি
মিয়ানমারে মাঝারি মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যের
পাশাপাশি বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার
আগারগাঁও থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক
১।
৩০ এপ্রিল ৪ দশমিক
৬ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয় চট্টগ্রামে। এর উৎপত্তিস্থল অক্ষাংশ ২২ দশমিক ৯৩ ডিগ্রি
উত্তর, দ্রাঘিমা ৯৪ দশমিক ১৯ ডিগ্রি পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে। রাজধানীর ভূমিকম্প
পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এর দূরত্ব ছিল ৪০০ কিলোমিটার।
৫ মে রাজধানীতে
ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে
৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে।
৫ জুন ৩ দশমিক
৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের
কাছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে।
১৬ জুন রাজধানী
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ,
মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫।
এরপর ১৪ আগস্ট
সিলেটে ফের ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। একই সঙ্গে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও এটি অনুভূত
হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল আসামের মেঘালয়, গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের
দূরত্ব ২২৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে।
ঠিক ১৬ দিনের
মাথায় অর্থাৎ ২৯ আগস্ট সিলেট মহানগরীর আশপাশে ফের মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা
ছিল ৩ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাপুরে।
৯ সেপ্টেম্বর
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে ৪ দশমিক ৪ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আসামে আঘাত হানা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের সিলেট জেলাও। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের
দূরত্ব ২৬৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের আসামের কাছাড়ে।
১৭ সেপ্টেম্বর
টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার
দূরে টাঙ্গাইল সদরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।
২০২৩ সালে সর্বশেষ
২ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর
মাত্রা ছিল ৫.৫। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ। ঢাকার
আগারগাঁও ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৬।