![Image](https://cdn.ajkerdarpon.com/images/82f6488d38e090b15e1af98caed26166.jpeg)
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাইরং নদীতে ইজারা ছাড়াই চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তীরবর্তী অনেক ফসলি জমি। বালুখেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
কোম্পানীগঞ্জের শিমুলতলা ও ছাতকের রাজেন্দ্রপুর এলাকাস্থ বাইরং নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন শত শত স্টিল বডি নৌকায় বালু তোলা হচ্ছে। আর এই বালু কোম্পানীগঞ্জের আমবাড়ি, ইছাকলস এবং ছাতকের বিভিন্ন স্পটে স্তুপ করে রাখা হয়। প্রভাবশালী ও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট অবৈধ এ বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।
কোম্পানীগঞ্জের চাটিবহর গ্রামের রশিদ আহমদ, এনাম খান ও জুয়েল আহমদ জানান, কোনো প্রকার ইজারা ছাড়াই এ বছরের ২২ মে থেকে এ নদী হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
অভিযোগে প্রকাশ ৪০-৫০ জনের একটি বালুখেকো সিন্ডিকেট বাইরং নদী থেকে নির্বিঘ্নে বালু লুট করতে নিয়োগ করেছেন কয়েকজন লাইনম্যান। এই লাইনম্যানদের মাধ্যমে দুই উপজেলা প্রশাসনকে তারা মেইনটেইন করে থাকেন।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, এই এলাকায় বাইরং নদী থেকে হাইড্রলিক ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক স্টীলবডি নৌকায় বালু তোলা হয়ে থাকে। এতে ভয়াবহ ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে নদী তীর ও আশপাশের বহু কৃষি জমি নদীতে বিলীন হতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন জানান, বালু সিন্ডিকেটের এই ধ্বংসাত্মক কাজে এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব প্রপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে নদীতে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। তবে বালু উত্তোলনকারীদের দাবি, জেলা প্রশাসন থেকে লিজ নিয়ে নিয়ম মেনেই তারা বালু তুলছেন।
এ বিষয়ে চাটিবহর গ্রামের সুজন মিয়ার দাবি, তিনি জেলা প্রশাসন থেকে উজানের পিয়াইন নদীর বালু মহাল লিজ নিয়েছেন। নিয়ম মেনে লীজকৃত জায়গা থেকেই তারা বালু তুলছেন। বাইরং নদী থেকে বালু তোলার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
কোম্পানীগন্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, উপজেলার বাইরং নদী, বালুমহাল ইজারার বিষয়টি তার জানা নেই। জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হলে উপজেলা প্রশাসনসহ অধস্তন ভূ-প্রশাসনকে আদেশক্রমে অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। বাইরং নদী নামে বালুমহাল ইজারা দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়নি।
তিনি বলেন, ইজারা ছাড়া কোনোভাবেই নদী থেকে বালু তোলা যাবে না। এরকম হয়ে থাকলে সরেজমিন গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।