শেখ হাসিনা
সরকারের পতনের পর নাটোরে চলছে মাঠ দখলের প্রতিযোগিতা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে
জনগণের কাছাকাছি গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করছেন বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক
দলের নেতারা।
সরেজমিনে দেখা
যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের ছবিসংবলিত ব্যানারে জেলা
ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। পাশাপাশি ব্যস্ত উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের
নেতারাও। প্রতিদিনই তারা নানান জায়গায় সমাবেশ করছেন। ওই সমাবেশে স্থানীয় নেতাকর্মীরা
অংশ নিচ্ছেন। দাবি করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত
সকলের গ্রেফতার ও ছাত্র-জনতা হত্যার বিচার।
এরই ধারাবাহিকতায়
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দিনব্যাপী জেলা শহরে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই
সমাবেশে এমন দাবির পাশাপাশি একপর্যায়ে দেশের মিডিয়ার ওপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুলু।
তিনি দাবি করেন,
গত সরকারের আমলে মিডিয়াগুলোকে (সংবাদমাধ্যম) নিষেধ করা হয় যাতে তারেক রহমানের কোনও
সংবাদ বা বিবৃতি প্রকাশ না করে। তারা তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করে।
অথচ গত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের নির্দেশে দেশে গণহত্যা চালানো
হয়েছে। ওই বিষয়ে মামলাও হয়েছে। অথচ এখনও বিভিন্ন মিডিয়া হাসিনা ও তার সরকারের নানা
সংবাদ প্রকাশ করছে।
এ ব্যাপারে
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দুলু বলেন, ‘যদি এরপরও কোনও মিডিয়া শেখ হাসিনার
সংবাদ প্রকাশ করে তবে সেই মিডিয়া তথা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জ্বালিয়ে দেওয়া
হবে।’
দুলুর ওই বক্তব্য
প্রকাশের পর থেকে নাটোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। নাম প্রকাশ না
করার শর্তে বিএনপির এক সমর্থক জানান, এই মুহূর্তে এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে
জনসাধারণের মনে বিএনপিকে নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিষয়টি নিয়ে
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন জানান, সরকারের নির্দেশে
তারেক রহমানের বক্তব্য যদি মিডিয়ায় প্রকাশ না হয় তবে শত শত শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে
আসামি হাসিনার সংবাদ প্রকাশ হওয়াটাও সমীচীন নয়। এমন প্রেক্ষাপটেই হয়তো রুহুল কুদ্দুস
তালুকদার দুলু ওই বক্তব্য দিয়েছেন।
তবে নাম প্রকাশ
না করার শর্তে নাটোরের এক শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জানান, বিএনপি-জামায়াতের
অতি তৎপরতাও অনেকেই পছন্দ করছেন না। এ সময়টাতে তাদের দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা
উচিত। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতিকে পেশা হিসেবে না নিয়ে সেবা হিসেবে নিলে দেশের প্রকৃত
কল্যাণ হবে। পাশাপাশি দ্বিতীয় স্বাধীনতায় জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের রক্তের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা
নিশ্চিত করা যাবে। এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দল ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের
সুদৃষ্টি ও দূরদর্শী পদক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।