ঠাকুরগাঁওয়ে রিপা আক্তার (৩০) নামে অন্তঃসত্ত্বা
এক নারীর পেটে লাথি দিয়ে তিন মাসের সন্তান নষ্টের অভিযোগ উঠেছে মো: মাহাবুব (৫৫) গংয়ের
বিরুদ্ধে। শুধু নির্যাতনেই নয়, নিজেদের বাঁচাতে উল্টো মিথ্যা মামালা দিয়ে হয়রানী করা
হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের।
নির্যাতনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা নারী ঠাকুরগাঁও
সদর পৌর এলাকার ইসলামনগরের বাসিন্দা বিপ্লব খানের স্ত্রী। আর অভিযুক্ত মো: মাহাবুব
গং একই এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় রিপা আক্তারের পিতা মো: আব্দুর রহিম সোমবার (৬ মে)
ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, মাহাবুব ও তাঁর
লোকজন বহুদিন আগ থেকেই আব্দুর রহিমের (৬০) বসতবাড়ির জমি জবর-দখল করার চেষ্টা করে আসছেন।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে আব্দুর রহিম তার জমিতে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ করছিলেন। দুপুরে
তাঁর অনুপস্থিতিতে মাহাবুব গংয়ের লোকজন নির্মিত ঘর ও বাহিরের টাটি বেড়া ভাঙচুর করেন।
এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয় আব্দুর রহিমের। এ সময় অন্তঃসত্ত্বা নারী রিপা আক্তার,
রিক্তা আক্তার ও বিলকিস আক্তার তাদের ভাংচুরের প্রতিবাদ জানালে মাহাবুবের হুকুমে ১৩
জনের একটি দল সংঘবন্ধ হয়ে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রে তাদের উপড় ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু করেন
এলোপাতাড়ি মারধর। এক পর্যায়ে মাসুদ (২২) ও আব্দুস সালাম (২৩) অন্তঃসত্ত্বা নারী রিপা আক্তারের তলপেটে জোরে লাথি মারে। ফলে তার গর্ভপাত
ঘটে। আর খয়রুল (৩০) অন্তঃসত্ত্বা নারীর গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করলে রিক্তা ও বিলকিস
রিপাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে সুজন (২৫), শাহাবুদ্দীন (২৩), রত্না বেগম (৪৫),
নাজমুল (৫০), হাসু (৩৫), সালমা (৪০), রেজিনা (৫০), সুফিয়া (৫০) ও সাহেরা বেগম (৪০)
তাদের দুইজনকেই মারধর করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করেন। এসময় রত্না বেগম রিপা
আক্তারের গলা থেকে স্বর্ণ অলংকার ছিনিয়ে নেয় এবং পড়নের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি
করেন। মাহাবুব গংয়ের মারধরের ফলে তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিপ্লব
খান ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ভর্তির পরামর্শ
দেন।
ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম জানান, নিজের জমিতে
বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে হঠাৎ তারা একজোট হয়ে হামলা চালায়। যার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রয়েছে
অথচ তারা কৌশলে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে শরীর কেটে মিথ্যা একটি মামলা করে আমাদের হয়রানী
করছে। বিষয়টি তাদের তদন্ত কর্মকতা এএস আই হিরনময় চন্দ্র অবগত রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, মাহবুব তার মামলায় যে ঘটনাস্থল
উল্লেখ করেছে সেখানে আসামি আকাশ, বিপ্লব ও মকছেদুল উপস্থিত না থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে
মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর বাকি আসামীরা বাসায় উপস্থিত থাকলেও
মারপিটের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। উল্টো মাহবুব গংরাই মারপিট করে। তাই ভালভাবে তদন্ত
হলে তা বেড়িয়ে আসবে। পরে উপায় না পেয়ে আমি বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করি।
আর অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মো: মাহাবুব
এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) এবি.এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলাও হয়েছে।
তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।