আজঃ বুধবার ০৩ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না: র‍্যাব ডিজি

প্রকাশিত:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ একটি নিরাপদ দেশ। এ দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না।

গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার ৮ বছর পূর্তিতে আজ (সোমবার) সকালে  দীপ্ত শপথ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জঙ্গি নির্মূলে বাংলাদেশ কতটুকু সফল জানতে চাইলে র‍্যাব ডিজি বলেন, ২০১৬ সালের এই দিনে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল। পরবর্তীতে র‍্যাব ও পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে। অনেক জঙ্গি আস্তানা ধ্বংস করতে র‍্যাব ও পুলিশ সক্ষম হয়। অনেক জঙ্গিকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়।

তিনি বলেন, এখন আর ওইভাবে জঙ্গি তৎপরতার তথ্য নেই। জঙ্গিবাদ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে এখন নিরাপদ একটি দেশে।

জঙ্গি দমনে র‍্যাবের সফলতা নিয়ে তিনি বলেন, র‍্যাব সূচনালগ্ন থেকে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছে। জঙ্গিবাদের বিষয়ে র‍্যাবের নজরদারি রয়েছে। র‍্যাব এখন একটি আধুনিক এবং পেশাদার বাহিনী। ভবিষ্যতে এ দেশে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। র‍্যাবের সেই সক্ষমতা আছে।

জঙ্গি সংগঠন আনসার ইসলাম ও আদালত থেকে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা এসব বিষয়ে নজরদারি করছি। গত সপ্তাহেও চট্টগ্রাম থেকে তিন জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা কিন্তু সার্বক্ষণিকই জঙ্গিদের বিষয়ে নজরদারি করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গিরা এক সময় নানা প্রচারণা করার চেষ্টা করেছে। জঙ্গিরা ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করেছে এক সময়। আমরা কিন্তু এসব বিষয়ে নজরদারি করছি। ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডেও আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা মানুষজনকে আশ্বস্ত করতে চাই, এই দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না।


আরও খবর



মোদির শপথ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৬ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৬ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

টানা তৃতীয় বারের মতো বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোট বিজয়ী হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে এক ফোনালাপে এই অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় নরেন্দ্র মোদি ভারতের নতুন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনার (নরেন্দ্র মোদি) শক্তিশালী নেতৃত্বের কারণে এনডিএ’র এই বিজয় সম্ভব হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে ভারত ও তার জনগণ বিশ্ব অঙ্গনে আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যেকার সৌহার্দ্যপূর্ণ, বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিবেশী সুলভ সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট জয়লাভ করায় বুধবার এক চিঠিতে মোদিকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ ও তার পক্ষ থেকে এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।

মঙ্গলবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা হয়। নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বলছে, এবারের নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে জয়ী হয়েছে ২৪০টি আসনে। তাতে অবশ্য সরকার গঠনে সমস্যা হবে না দলটির। কারণ বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশানাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ভুক্ত দলগুলো সম্মিলিতভাবে জয়ী হয়েছে মোট ২৯৩টি আসনে। ফলে অনায়াসেই সরকার গঠন করতে পারবে বিজেপি।


আরও খবর



ভাওয়াল রিসোর্টে বেনজীরের আড়াই একর সম্পদ উচ্ছেদে যাচ্ছে প্রশাসন

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

পদে থেকে জুনিয়র অফিসারদের নীতি-নৈতিকতার নসিহত শুনিয়ে গেছেন বেনজীর। অথচ তার বিরুদ্ধেই কিনা অনিয়ম-দুর্নীতির কত-শত অভিযোগ। গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীরের নানা কর্ম। এবার মিলল তার গাজীপুরে মালিকানাধীন ভাওয়াল রিসোর্টের দখলে থাকা বনের প্রায় আড়াই একর সম্পত্তির খবর। যা তিনি জোর পূর্বক দখল করেছেন জমির মালিকদের থেকে। ইতোমধ্যে সেই জমি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসক।

দেশের আরও কয়েক জেলার মতো গাজীপুরেও হদিস মিলেছে সাবেক পুলিশ প্রধানের নজীরবিহীন সম্পত্তির। অভিযোগ আছে, ক্ষমতার দাপটে সদর উপজেলায় বনের জমি হাতিয়েছেন বেনজীর। গড়ে তুলেছেন, ভাওয়াল রিসোর্ট।

স্থানীয় ভুক্তভোগী জানান, আমার জমির দলিল থাকা স্বত্ত্বেও বেনজীর আমার জমি কিনে নেয়। দলিল থাকার কথা জানালে আমাকে বলা হয় দলিল নিয়েই বসে থাক। আরেকজন বলেন, ২০১৩ সালে ধানের এই জমিগুলোতে রাতে মাটি ভরাট করে দখল করে নিয়েছে।

এদিকে দখল করা জমি উদ্ধারে পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক। বলেন, বনের জমি থেকে স্থাপনা অপসারণে চালানো হবে অভিযান।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নোটিশ দিয়েছি। উচ্ছেদের প্রক্রিয়াতে এক সপ্তাহ সময় দিতে হয়। আমরা সে সময় দিয়েছি। আইনানুগভাবে উচ্ছেদের যে প্রক্রিয়া রয়েছে আমরা সে প্রক্রিয়ায় যাব।

সদর উপজেলার পাশাপাশি কালীগঞ্জেও সাবেক আইজিপির স্ত্রী-সন্তানদের নামে আছে বিপুল সম্পদ। নামমাত্র মূল্যে যা বেচতে বাধ্য করার অভিযোগ স্থানীয়দের। বেনজীর আহমেদের দখলে থাকা জমি উদ্ধার ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি ভুক্তভোগীদের।


আরও খবর



নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে সরকার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

নেপাল থেকে ৫ বছরের জন্য ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে সরকার। আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। আমদানির এ বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের খরচ পড়বে ৮ টাকা ১৭ পয়সা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, নেপাল থেকে ৫ বছরের জন্য ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে সরকার, যার প্রতি ইউনিটের খরচ ৮ টাকা ১৭ পয়সা। নেপালকে দিতে হবে প্রতি ইউনিট ৬ দশমিক ৪০ মার্কিন ডলার।

ভারত হয়ে এ বিদ্যুৎ আসায় দেশটিকে ট্রেডিং মার্জিন দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতকে ইউনিটপ্রতি .০৫৯ রুপি দিতে হবে। ভারতকে ট্রান্সমিশন খরচও দিতে হবে তবে খরচ নির্ধারিত হয়নি।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এই বিদ্যুতের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ৫ বছরের জন্য ৬৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে।


আরও খবর



উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রিমুখী গোলাগুলি, নিহত ১

প্রকাশিত:বুধবার ১২ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১২ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

কক্সবাজার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা সন্ত্রাসীদের দুপক্ষ এবং পুলিশের মধ্যে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল। বুধবার (১২ জুন) ভোর ৬ টায় উখিয়ার ঘোনার পাড়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৪ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মো. আমির জাফর।

নিহত আব্দুল মোনাফ (২৬) এই ব্লকের বাসিন্দা আজিম উল্লাহের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল মোনাফ একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় সে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল।

আমির জাফর বলেন, সকালে উখিয়ার ঘোনার পাড়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৪ ব্লকে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার সন্ত্রাসীদের দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আরসা সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে।

ত্রিমুখী গোলাগুলির এক পর্যায়ে আরসা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এসময় ঘটনাস্থলের আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বিদেশি একটি পিস্তল। পরে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এডিআইজি বলেন, কি কারণে আরসা সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে পুলিশ তা নিশ্চিত নয়। এ ব্যাপারে পুলিশ খোঁজ খবর নিচ্ছে।

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান আমির জাফর।


আরও খবর



বানের জলে ভাসছে সুনামগঞ্জ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২০ জুন ২০24 | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২০ জুন ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

বানের পানিতে থৈ থৈ সুনামগঞ্জের আশপাশের সব এলাকা। ডুবে আছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। যে সড়ক দাপিয়ে বেড়িয়েছি অটোরিকশা, রিকশাসহ সব মোটরযান আজ সেই রাস্তায় চলছে নৌকা। যাদেরকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে তারা ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুররা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে, আর যাদের অবস্থা কিছুটা ভালো তারা উঠেছেন আবাসিক হোটেলে। কেউ কেউ আছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের বাসায়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার চারটি পৌরসভা এলাকাসহ ৭৮টি ইউনিয়নের ১ হাজার ১৮টি গ্রামের ছয় লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যা পরিস্থিতির শিকার।

সুনামগঞ্জ জেলার পুরোটাই বন্যাকবলিত হলেও সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, মধ্যনগর ও ছাতক উপজেলার মানুষ। ছাতক উপজেলার পৌরসভাসহ সকল ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করার কারণে সুনামগঞ্জের অনেক হাওর এখন পানিতে টইটুম্বুর। আর এর ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে সুনামগঞ্জ সদর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম। ইতিমধ্যে মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৭ হেক্টর জমির সবজিখেত পানিতে নষ্ট হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার কায়েতকান্দা, রাজধরপুর, কাকিয়াম মৌলভীপাড়া, আলমপুর দোয়াদুর রহমান ও দক্ষিণ রূপনগরের মোট পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বন্যায় তলিয়ে আছে সকল উপজেলার স্থানীয় সড়ক। জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, মধ্যনগর এবং ছাতক উপজেলার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বুধবার (১৯ জুন) এর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দিরাইয়ে সুরমা নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামছে।

লবজান চৌধুরী উচ্চ বালিকা কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লতিফুন্নেছা বলেন, আমার ঘরের ভেতর গলা সমান পানি। ঘরে ছেলে বউ আর এক আট বছরের এক নাতি ছিল। ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টসের চাকরি করে। পানি যখন ঘরে প্রবেশ করতে শুরু করে আমি আমার নাতি আর বউকে নিয়ে এখানে চলে আসি। সাথে নিয়ে এসেছি দুটি বালিশ আর একটা কম্বল। ঘরে তালা দেওয়ার সময়ও পাইনি।

একই আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, খুব কষ্টে আছি ভাই। তিন দিন ধরে কাজে যাই না। বউ, ছেলে-মেয়ে না খেয়ে আছে। ১ কেজি চাল আর ২০০ গ্রাম ডাল এনেছিলাম। খেয়ে শেষ হয়ে গেছে। এখন কেউ দিলে খাই আর না হয় খালি পেটে থাকি। বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট নিয়ে এসেছি। কিন্তু আমার বাচ্চারা ভাত খাবে বলে আবদার করছে।

বড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া রফিকুল বলেন, আমাদের পরিবারের সদস্য ৯ জন। আমরা দুই আশ্রয়কেন্দ্রে মিলিয়ে থাকছি। দিনের অর্ধেক সময় এখানে বাকি সময় লবজান চৌধুরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে কাটে। আমাদের দিকে আল্লাহ কবে যে সুনজর দেবেন তা তিনিই ভালো জানেন। আমাদের আর এই কষ্ট সহ্য হচ্ছে না।

সেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ আম্মার বলেন, ২০২২ এর বন্যায় আমরা দেখেছি বন্যা কতটা ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। আর সেই ভয়াবহতার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ৫-৭ জনের টিম করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। অনেকে আমাদের কাছে ফোন দিয়ে জরুরি ঔষুধ এবং খাবার চাচ্ছেন। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী সুনামগঞ্জ জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ১৮ হাজার ৪২৯ জন বন্যা আক্রান্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।সুনামগঞ্জের বন্যা আক্রান্ত মানুষের পাশে প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, সুরমা নদীর পানি কোনো কোনো স্থানে সামান্য কমেছে আবার কোন স্থানে বাড়ছে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী, অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পানি আরও বাড়তে পারে। যদি উজানে বেশি বৃষ্টি হয়, তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী আছে।আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, রান্না করা খাবার বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর