চট্টগ্রামে
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বৃষ্টিপাতে নগরের অধিকাংশ এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
এতে দুর্ভোগ পড়েছে নগরবাসী। টানা বৃষ্টির ফলে হাঁটু থেকে বুক পরিমাণ পানিতে তলিয়ে গেছে
বেশিরভাগ এলাকা। এতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমেছে। ফলে রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে
যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। ভারী বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়ার কারণে নগরের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ
নেই। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
চট্টগ্রামে
জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিক প্রকল্পে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ব্যয়
হয়েছে আট হাজার কোটি টাকা। বিশাল টাকা ব্যয় হলেও সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যাচ্ছে চট্টগ্রাম
নগরীর সকল এলাকা।
সোমবার (২৭
মে) দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, অতি বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নগরের কাপাসগোলা, বহদ্দারহাট,
বাদুরতলা, চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, ওয়াসার মোড়, তিন পোলের মাথা,
মেহেদীবাগ সিডিএ কলোনি, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা, হালিশহর শুলকবহর এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপকূলীয় এলাকা পতেঙ্গার আকমল আলী রোড সংলগ্ন জেলেপাড়া জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।
নগরের প্রধান
সড়কগুলো হাঁটু থেকে কোমর পানি, অনেক স্থানে বুক সমান পানিতে ডুবে গেছে। সড়কের অনেক
দোকানপাট পানিতে তলিয়ে যাওয়া বন্ধ ব্যবসা। নগরের ব্যস্ততম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ
ডুবে গেছে পানিতে। এতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার শঙ্কা বাড়ছে নগরবাসীর।
সুমন নামের
এক যাত্রী বলেন, ‘জলাবদ্ধতার থাকায় গাড়িতে বেড়েছে তিনগুণের বেশি। গাড়ি কম থাকায় গন্তব্য
পৌঁছাতে রিকশা হচ্ছে একমাত্র ভরসা, কিন্তু বাধ্য হয়ে তিনগুণ ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।'
রাস্তায় চলাচলকারী
নগরবাসী ক্ষোভ ছেড়েছেন দুই সেবা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম
উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রতি। সামান্য বৃষ্টির পানিতেই রাস্তাঘাট ডুবে যায়। এত টাকা
খরচের কোনো সুফল জনগণ পাচ্ছে না।
বাকলিয়ার এলাকার
বাসিন্দা এডভোকেট জয়শ্রী নন্দী বলেন, ‘আমি সকালে কোর্টে যাওয়ার উদ্দেশ্য রাস্তায় বের হয়ে দেখি, পুরো রাস্তা
পানি ডুবে গেছে, কিন্তু কাজের তাগিদে আমাকে বের হতে হচ্ছে। তাই সকালে কোমর পানিতে অফিসে
যেতে হয়েছে। সারা বছর দেখি খালে কাজ চলছে। কিন্তু এই কাজের কোনো সুফল পেলাম না।’
তবে পতেঙ্গা
আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় রিমাল।
এরপর বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। রিমালের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবারও
ভারী বৃষ্টিপাত হবার আভাস দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নগরজুড়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২০৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
সোমবার জেলার
সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম
বন্ধ রয়েছে। এছাড়া চসিক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে।