ঢাকার দোহার উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার লিজকৃত জমি দখলের চেষ্টা ও তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার নারিশা মৌজার ২২নং খতিয়ানের ১৩৮ নং এস, এ দাগের এবং ১২৬, ২৫৪ ও ২৫৫ আর, এস এর দাগের ৫১ শতাংশ জমি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম খলীল সবুজের নামে লিজ থাকার পরেও স্থানীয় লুৎফর রহমান ও তার ছেলে রাহাত বেপারী, আব্দুস সালাম ওরফে সেলিম ও তার ছেলে নাদিমুল ইসলাম ও তাদের আত্মীয় আব্দুর রউফের চার ছেলে মো. আমিন, হাসান আল মাহমুদ লিটন, আবু সাঈদ, আবু বকর (আবুল কালাম) এর ছেলে সামিউ সম্মিলিতভাবে সরকারি সাইনবোর্ড ভেঙে বাঁশের খুটি দিয়ে ঘর তুলার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন সময়ে জাল দলিল ও জাল নামজারি তৈরি করে উক্ত জমি দখলের চেষ্টা করে।
বুধবার (২২ মে) বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম খলীল সবুজ বলেন, আমিন গং এরা দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। বিভিন্নভাবে আমাকে ও আমার পরিবারের উপর জুলুম, লাঞ্ছনা ও অত্যাচার করে আসছে। গত ২৯ এপ্রিল নারিশা বাজারে আমাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজসহ মেরে ফেলার চেষ্টা করে, তখন স্থানীয়রা তা প্রতিহত করে। পরে আমি এবিষয়ে দোহার থানায় অভিযোগ করি। বিগত সময়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুপারিসক্রমে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সরকার আমাকে ৫১ (একান্ন) শতাংশ জমি লিজ দেয়, সেখানেও আমাকে যেতে দেয়নি এই সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুরা। তারপর গত ৮ মে আমার সেই জমিতে থাকা সরকারি সাইনবোর্ড ভেঙ্গে বাঁশ দিয়ে ঘর তুলে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমার লিখিত পেয়ে পরবর্তীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন খান ২২/৭৭ নথিভুক্ত ফাইলটি নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ইতোপূর্বে দোহার সদর মেঘুলা ভূমি অফিসার মো. মিজানুর রহমান তদন্ত করেন।
হামলার বিষয়ে ফুলতলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জসীম জানান, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তার উপর হামলা চেষ্টার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায় যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম খলীল সবুজ ১৯৭১ সালে বিএলএফ মুজিব বাহিনী ভারতের আসাম রাজ্যের হাফলং এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় চর বাঁউশিয়ায় শহীদ কমান্ডার একেএম নজরুল ইসলাম কিরনের সাথে সম্মিলিতভাবে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিকায় তিনি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতার পরবর্তীতে সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও স্বাধীনতার চেতনা উজ্জিবিত রাখার লক্ষ্যে কাগজে কলমের লেখক ও গবেষক।